অসম্ভব বলে কিছু নেই- সেই কথাই প্রমাণ করলেন দুই পা হারানো নেপালের হরি বুধা মগর (৪৩)। মনের ইচ্ছাশক্তি জোরে এভারেস্টের চূড়া ছুঁলেন এই যুবক।
শুক্রবার বিকালের দিকে হরি এভারেস্ট জয় করেছেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে হরির পৃথিবীর সর্বোচ্চ শিখর ছোঁয়ার রেকর্ড পর্বতারোহণের ইতিহাসে প্রথম বলে মনে করা হচ্ছে।
নেপাল প্রশাসন সূত্রের বরাতে খবরে বলা হয়, হরির হাঁটু থেকে দুই পা নেই। হরি ব্রিটিশ-গোর্খা বাহিনীর সাবেক সেনা সদস্য। ২০১০ সালে আফগানিস্তানে যুদ্ধে দুই পা হারান তিনি। এর পর লাগানো হয় কৃত্রিম পা।
হরির বহু দিনের স্বপ্ন ছিল এভারেস্ট জয়ের। পা হারিয়ে সেই স্বপ্ন হোচট খায়। এরপর কৃত্রিম পা নিয়েই সর্বোচ্চ শিখর জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় পর্বতারোহণ সংক্রান্ত একটি আইন।
২০১৭ সালে চালু হওয়া ওই আইনে বলা আছে- অন্ধ, দুই পা নেই এমন কেউ বা একা কেউ পর্বতারোহণ করতে পারবেন না। এভারেস্টের ক্ষেত্রেও জারি হয় সেই নিয়ম। ফলে হরির সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয়ের স্বপ্ন এক রকম থমকে গিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত হার মানেননি তিনি।
শুরু হয় নতুন লড়াই লড়াই। সেই আইনকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিমকোর্টে পাল্টা আবেদন জানান হরি ও অন্যরা। ২০১৮ সালে আইনটি বাতিল করে সুপ্রিমকোর্ট। এরপর থেকে কঠোর অনুশীলন শুরু করেন হরি। মনের জোর আর সাহসের জেরে কৃত্রিম পা নিয়েই ইতিহাস গড়লেন সাবেক এই সেনা সদস্য।
এভারেস্ট জয়ের পর হরি বলেন, আমার কল্পনার চাইতেও অনেক বেশি কঠিন ছিল চূড়ায় উঠা।
তিনি বলেন, আমার বড় লক্ষ্যগুলো ছিল- কেবল অক্ষমতা সম্পর্কে উপলব্ধি পরিবর্তন করা এবং অন্যদের পাহাড়ে আরোহণের জন্য অনুপ্রাণিত করা।
এভারেস্টজয়ী হরির ভাষ্য, আপনার স্বপ্নগুলো যতই বড় হোক না কেন, আপনার অক্ষমতা যতই চ্যালেঞ্জ করা হোক না কেন, সঠিক মানসিকতার সাথে, যে কোনো কিছু সম্ভব।