পর্যটন বিচিত্রা প্রতিবেদন
দেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতি এবং দেশীয় ও বিদেশি জনগণের ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পর্যটন শিল্পকে পরিবেশবান্ধব, নিরাপদ ও টেকসই করে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। পর্যটন খাতকে সমৃদ্ধ করতে আন্তর্জাতিক মানের আবাসন ও বিনোদন সুবিধা নিয়ে কক্সবাজার জেলায় সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক, নাফ ট্যুরিজম পার্ক এবং সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম পার্ক তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের রয়েছে অপার সম্ভাবনা। ধীরগতিতে হলেও এ শিল্পের উন্নয়ন লক্ষ করা যাচ্ছে। বিগত কয়েক বছরের ধারাবাহিক অগ্রযাত্রায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার, নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন, রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার কারণে পর্যটন শিল্পের এ অগ্রগতি।
প্রাকৃতিক সম্পদ ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সুবাদে বাংলাদেশে বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ফলে এ দেশের পর্যটন শিল্পে উল্লেখযোগ্য উন্নতির আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ভ্রমণ ও পর্যটন সক্ষমতায় সবচেয়ে বেশি উন্নতি করার দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। দেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, কক্সবাজার বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ উল্লেখযোগ্য ভ‚মিকাপালন করছে। বর্তমানে পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য সরকার এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। যার ফলে পর্যটন শিল্পে নীরব বিপ্লব সংগঠিত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এসব উন্নয়ন পরিকল্পনার মধ্যে সম্প্রতি কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সাগরের পাড় বেঁধে ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ অন্যতম। এটা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের আকর্ষণ আরও বাড়িয়ে দেবে।যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন
গত ১৪ বছরে যোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক উন্নয়ন হয়েছে। নদীমাতৃক বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন সড়ক ও রেলযোগাযোগ স্থাপনের জন্য পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু, তিস্তা সেতু, পায়রা সেতু, দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু, দ্বিতীয় মেঘনা, দ্বিতীয় গোমতী সেতুসহ শত শত সেতু, সড়ক, মহাসড়ক নির্মাণ, পুনর্নির্মাণ করেছে সরকার।
এছাড়া ঢাকায় হানিফ ফ্লাইওভার, তেজগাঁও-মগবাজার-মালিবাগ ফ্লাইওয়ার, কমলাপুর-শাহজাহানপুর ফ্লাইওভার, বনানী ফ্লাইওভার, টঙ্গীতে আহসানউল্লাহ মাস্টার ফ্লাইওভার, চট্টগ্রামে আক্তারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভার ও বদ্দারহাট ফ্লাইওভারসহ বহুসংখ্যক ছোট-বড় ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে।
এক পদ্মা সেতু দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলাকে সড়ক পথে ঢাকা এবং অন্যান্য জেলার সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত করেছে। এই সেতুর ফলে দেশের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে, কৃষক ফসলের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে। ছয় মাসে ২৮ লাখ গাড়ি পারাপার হয়েছে, এতে সরকারের আয় হয়েছে ৪১০ কোটি টাকা।
এ সরকারই প্রথম ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-ময়মনসিংহ, নবীনগর-ডিইপিজেড-চন্দ্রা, ঢাকা-এলেঙ্গা মহাসড়ক চার বা তদূর্ধ্ব লেনে উন্নীত করে। ঢাকা-মাওয়া-জাজিরা এক্সপ্রেসওয়ে দেশের প্রথম এ ধরনের মহাসড়ক। এলেঙ্গা-রংপুর মহাসড়ক, আরিচা মহাসড়ক এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আগামী বছর যানবাহনের জন্য খুলে দেওয়া হবে। ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে খুলনা পর্যন্ত রেল যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ট্রেন চালু হয়েছে। ইতোমধ্যে পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচলও শুরু হয়েছে। যমুনা নদীর ওপর রেলসেতু নির্মাণ কাজও এগিয়ে যাচ্ছে। গত নভেম্বরে একদিন ১০০ সেতু এবং ডিসেম্বরে ১০০ সড়ক উদ্বোধন করা হয়। দেশের উন্নয়নের ইতিহাসে এ এক অনন্য অর্জন।
গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দেশের যোগাযোগের ক্ষেত্রে আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করেছে বাংলাদেশ। শুধু বাংলাদেশেই নয়, চট্টগ্রামে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম পাতাল সড়কপথ- বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের মাধ্যমে আরেকটি মাইলফলক স্থাপিত হয় গত অক্টোবরে। এর আগে সেপ্টেম্বরে বহুল প্রতীক্ষিত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন হয়।
অপরূপ নির্মাণশৈলীর দৃষ্টিনন্দন শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের একটি অংশের যাত্রা শুরু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ঢাকার আকাশপথে সম্ভাবনার নবদিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। এছাড়া বহুল প্রতীক্ষিত ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেশের যোগাযোগব্যবস্থায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়।
পর্যটন খাতকে সমৃদ্ধ করতে সরকারের নানামুখী উন্নয়ন চিত্র পর্যটন বিচিত্রার এবারের সংখ্যায় তুলে ধরা হলো।
বাংলাদেশের আকাশপথে নবদিগন্তের সূচনা
উন্নত যাত্রীসেবার প্রতিশ্রুতি নিয়ে দেশের প্রধান বিমানবন্দর শাহজালালের থার্ড টার্মিনালের যাত্রা শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭ অক্টোবর দৃষ্টিনন্দন এই টার্মিনালের উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরপরই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট আনুষ্ঠানিকভাবে থার্ড টার্মিনাল ব্যবহার করে ঢাকা ছেড়ে যায়। আর থার্ড টার্মিনালের দুয়ার খোলার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের আকাশপথে নবদিগন্তের সূচনা হয়েছে। টার্মিনালটি পুরোপুরি চালু হতে আরও একবছর লাগবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। ঢাকা ও কক্সবাজার বিমানবন্দরকে সেভাবেই প্রস্তুত করা হচ্ছে। জাপান সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের সহায়তায় আমরা এই টার্মিনাল নির্মাণ করছি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, থার্ড টার্মিনালের উদ্বোধনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়বে। বিমানবন্দরের দুটি টার্মিনালের পাশাপাশি নতুন এ টার্মিনালেও যাত্রীদের সমাগম হবে বেশ। ফ্লাইট থেকে নেমে এ টার্মিনাল হয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে যাত্রীদের যেন কোনো ভোগান্তি পোহাতে না হয় সেজন্য রাজধানীর সব আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার সংযুক্তি ঘটেছে তৃতীয় টার্মিনালে সঙ্গে।
পুরাতন বিমানবন্দর সড়ক ও বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের পাশাপাশি দেশের প্রধান বিমানবন্দরের আধুনিক এ টার্মিনালের সঙ্গে যুক্ত আছে নতুন করে উদ্বোধন হওয়া ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এছাড়া মেট্রোরেলের নির্মাণাধীন এমআরটি লাইন- ১ এর স্টেশন হবে তৃতীয় টার্মিনালের ঠিক পূর্ব পাশে। ফলে তৃতীয় টার্মিনাল থেকে যারা ঢাকার মধ্যে যাতায়াত করতে চান, তারা মেট্রোরেল ও ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করে খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।
যারা ঢাকার বাইরে যেতে চান, তারা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করে নামতে পারবেন চট্টগ্রাম রোডের কুতুবখালীতে। তবে সেজন্য অপেক্ষা করতে হবে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। এছাড়া দূর গন্তব্যের জন্য আগের সড়ক ও রেলওয়ে সংযোগ তো আছেই। এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হবে গাজীপুর পর্যন্ত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্প।
ফলে বিদেশ থেকে যেসব যাত্রী আসবেন তারা তৃতীয় টার্মিনাল ব্যবহার শেষে খুব সহজেই বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে পারবেন। যারা বিদেশ যাবেন তারাও রাজধানীর যানজট এড়িয়ে খুব সহজে তৃতীয় টার্মিনালে তথা বিমানবন্দরে পৌঁছাতে পারবেন।এ সমন্বিত গণপরিবহন ব্যবস্থাপনাকে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা চমৎকার কানেক্টিভিটি ও যানজটের মোক্ষম ওষুধ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
টার্মিনালটির দেয়াল আর ছাদ রাঙানো হয়েছে ষড়ঋতুর ছয়টি রঙের বিশেষ টাইলস দিয়ে। বিমানবন্দর থেকে বের হয়েই চোখে পড়বে জাতীয় ফুল শাপলা, জলে ভাসা পদ্ম।
নান্দকিতার পাশাপাশি যাত্রীদের জন্য অনেকগুলো সেবা পাওয়ার সুযোগ বাড়িয়ে দিয়েছে নতুন টার্মিনালটি।
যাত্রী সেবার আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার স্বার্থে নির্মাণাধীন এ টার্মিনালের হ্যান্ডলিংয়ের কাজটি দেওয়া হয়েছে একটি জাপানি কোম্পানিকে। তবে আপাতত অন্য দুটো টার্মিনালের মতো এ টার্মিনালেও গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা দেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
অত্যাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা
নতুন এই টার্মিনালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে থাকবে ২৭টি ব্যাগেজ স্ক্যানিং মেশিন, ১১টি বডি স্ক্যানার। টার্মিনালে প্রবেশ করা একজন যাত্রীকে বিমানে ওঠা পর্যন্ত হাতের স্পর্শ ছাড়া স্বয়ংক্রিয়ভাবেই তল্লাশি করা যাবে। সেক্ষেত্রে যাত্রীকে বডি স্ক্যানার মেশিনের ভেতর দুহাত তুলে দাঁড়াতে হবে। এর ফলে যাত্রী ও বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সময় বাঁচবে। স্ক্যানিংও হবে নির্ভুল ও স্বচ্ছ।
বর্তমানে বিমানবন্দরের ভেতরের একটি জায়গায় ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট সার্বক্ষণিক প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। তবে নতুন টার্মিনাল ভবন এলাকায় একটি পূর্ণাঙ্গ ফায়ার স্টেশন করা হচ্ছে। সেখানে থাকবে একজন পৃথক ফায়ার স্টেশন ম্যানেজার। থাকবে আগুন নেভানো ও জরুরি উদ্ধারকাজ করার সবধরনের সুযোগ-সুবিধা।
বাড়বে যাত্রীর ধারণক্ষমতা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২৪ সালের শেষের দিকে থার্ড টার্মিনালের কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু হবে। সেই সঙ্গে বাড়বে বিমানবন্দরের যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা।
বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) জানায়, বর্তমানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে প্রতি বছর ৬৫ থেকে ৮০ লাখ যাত্রী চলাচল করেন। এটি-ই বর্তমানে সক্রিয় দুই টার্মিনালের সর্বোচ্চ সক্ষমতা। তবে, থার্ড টার্মিনাল হলে সক্ষমতা বেড়ে দাঁড়াবে দিগুণ।
বর্তমানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে প্রতি বছর ৬৫ থেকে ৮০ লাখ যাত্রী চলাচল করেন। এটি-ই বর্তমানে সক্রিয় দুই টার্মিনালের সর্বোচ্চ সক্ষমতা। তবে থার্ড টার্মিনাল হলে সক্ষমতা বেড়ে দাঁড়াবে দিগুণ।
তৃতীয় টার্মিনালের রিভাইজড ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) থেকে জানা যায়, থার্ড টার্মিনালে দুই লাখ ২৬ হাজার বর্গমিটারের তিনটি ফ্লোরের একটি মডার্ন প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন রয়েছে। বর্তমানে বিমানবন্দরের ১ ও ২ নম্বর টার্মিনালে বছরে ৬৫ থেকে ৮০ লাখ যাত্রী চলাচল করেন। নতুন টার্মিনাল চালু হলে ধারণক্ষমতা হবে দিগুণ। অর্থাৎ অন্তত এক কোটি ২০ লাখ মানুষের পা পড়বে এখানে।
বেবিচক সূত্রে আরও জানা যায়, যাত্রীদের সক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি থার্ড টার্মিনালের কারণে বাড়বে বিমানবন্দরের কার্গোসক্ষমতা। বর্তমানে বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের উত্তর পাশে আলাদা আমদানি-রফতানি কার্গো ভিলেজ ভবন করা হয়েছে। পৃথক কার্গো ভিলেজগুলো থাকবে বিশ্বের উন্নত দেশের বিমানবন্দরের মতো সর্বাধুনিক সুবিধাসম্বলিত। এটি মোট ৬৩ হাজার বর্গমিটারের। বর্তমানে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের ধারণক্ষমতা ২ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন টন। তৃতীয় টার্মিনাল হলে ধারণক্ষমতা গিয়ে ঠেকবে চার মিলিয়ন টনে। নতুন এ কার্গো ভিলেজ দেশের রফতানি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
বাংলাদেশে আসার অপেক্ষায় ১২ বিদেশি এয়ারলাইন্স
যাত্রীসক্ষমতা বাড়ায় বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনায় আগ্রহ দেখিয়েছে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো। বাংলাদেশের এয়ারলাইন্সগুলোও তাদের ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে মুখিয়ে রয়েছে ১২টি বিদেশি এয়ারলাইন্স। তাদের কেউ কেউ বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করেছে, মৌখিকভাবেও জানিয়ে রেখেছে।
বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে মুখিয়ে রয়েছে ১২টি বিদেশি এয়ারলাইন্স। তাদের কেউ কেউ বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করেছে, মৌখিকভাবেও জানিয়ে রেখেছে।
ফ্লাইট পরিচালনার অনুমোদন চেয়ে আবেদন করা এয়ারলাইন্সগুলো হলো- শ্রীলঙ্কার ফিটস এয়ার, দক্ষিণ কোরিয়ার কোরিয়ান এয়ার, আবুধাবিভিত্তিক উইজ এয়ার, ইন্দোনেশিয়ার গারুদা ইন্দোনেশিয়া, ইরাকের ইরাকি এয়ারওয়েজ, জর্দানের রয়াল জর্দানিয়ান, ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্স, এয়ার ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ।
আবেদনকারীদের মধ্যে ইতোমধ্যে অনুমতি পেয়েছে আফ্রিকাভিত্তিক ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্স।
এসব এয়ারলাইন্স ছাড়াও বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য মৌখিকভাবে বেবিচককে জানিয়েছে আরও চারটি এয়ারলাইন্স। পাকিস্তানের পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ), উজবেকিস্তানের উজবেকিস্তান এয়ারওয়েজ, সুইজারল্যান্ডের সুইস ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স ও রিয়াদ এয়ার।
বিমান চলাচলে ১০ দেশের সঙ্গে নতুন চুক্তি হচ্ছে
ঢাকার হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নবনির্মিত থার্ড টার্মিনাল বাংলাদেশের আকাশপথে নবদিগন্তের সূচনা করেছে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন রুটে বিমান পরিচালনা করতে চায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। গত ৩ ডিসেম্বর সৌদি আরবের রিয়াদে শুরু হয় আইকাও এয়ারসার্ভিস নেভিগেশন ইভেন্ট-আইকান ২০২৩। পাঁচ দিনের এই ইভেন্টে বাংলাদেশসহ ৭৬টি দেশ অংশ নেয়। এই ইভেন্টে ১০টি দেশের সঙ্গে এয়ার সার্ভিস এগ্রিমেন্ট (চুক্তি) এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় বিমান চলাচল চুক্তি সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা ও পর্যালোচনা করার টার্গেট নেয় বেবিচক। বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মুফিদুর রহমানের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল ওই ইভেন্টে অংশ নেন।
বেবিচক সূত্র বলছে, থার্ড টার্মিনালের সফট ওপেনিং করার আগেই বেশ কয়েকটি দেশ বিমান পরিচালনা করার আবেদন জানিয়েছে। সেগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এছাড়া রিয়াদে চলমান ইভেন্টে ১০টি দেশের সঙ্গে এয়ার এগ্রিমেন্ট করার টার্গেট নেওয়া হয়েছে।
ইভেন্টে সৌদি আরবের জেনারেল অথরিটি অব সিভিল এভিয়েশন (গাকা) এবং বেবিচকের সঙ্গে সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এ ছাড়া ইভেন্টটিতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে একই সময়ে একই স্থানে অনেক দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বিমান চলাচল চুক্তি সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা ও পর্যালোচনা করাসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ডকুমেন্ট স্বাক্ষরের সুযোগ রয়েছে। এতে সময় ও অর্থের সাশ্রয় হয়। ইতোমধ্যে বাহরাইন বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বিমান চলাচল চুক্তি স্বাক্ষর সংক্রান্ত আলোচনায় বসার জন্য প্রস্তাব দিয়েছে। ক‚টনৈতিক মাধ্যমে এবং ই-মেইলের মাধ্যমে সিসিলিসসহ কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় পর্যালোচনা সভায় অংশগ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করে চিঠি দিয়েছে।
এ ছাড়া রাশিয়া বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সাইডলাইন সভায় অংশগ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রæনাই ও রুয়ান্ডার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বিমান চলাচল চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও কোনো ফ্রিকোয়েন্সি নির্ধারিত হয়নি। এসব দেশের সঙ্গে ফ্লাইট পরিচালনার সুযোগ তৈরি করতে ফ্রিকোয়েন্সি নির্ধারণের জন্য দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের প্রয়োজন। কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, হংকং, কুয়েত, মিসরের সঙ্গে বিদ্যমান ফ্রিকোয়েন্সি বৃদ্ধি করা এবং চীনের সঙ্গে বর্ধিত ফ্রিকোয়েন্সিগুলো নিয়মিতকরণ করা প্রয়োজন।
ইভেন্টটিতে অংশগ্রহণ করায় এসব দেশের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়গুলো নিষ্পন্ন করা সহজতর হবে। একই সঙ্গে দীর্ঘদিনের প্রয়োজনীয় অনেক দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বিমান চলাচল চুক্তি পর্যালোচনার সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এছাড়া আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৩য় টার্মিনালটিকে পুরোপুরিভাবে অপারেশনাল করা হলে অধিক সংখ্যক ফ্লাইট পরিচালনার সুযোগ তৈরি করতেও বিদ্যমান ফ্রিকোয়েন্সিগুলো হালনাগাদ করা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান মফিদুর রহমান বলেন, যে কোনো দেশের জন্য আইকাও এয়ার সার্ভিস নেভিগেশন ইভেন্ট-আইকান ২০২৩ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এই ইভেন্টে অংশ নিয়েছি। আমাদের থার্ড টার্মিনাল হয়ে গেছে। এখন আমরা নতুন নতুন রুটে ফ্লাইট পরিচলনা করতে পারব। এই ইভেন্টে অনেক দেশ অংশ নিচ্ছে। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন নতুন রুটে ফ্লাইট পরিচালনা, ফ্লাইট বৃদ্ধি ও নতুন দেশের সঙ্গে এয়ার এগ্রিমেন্ট চুক্তি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, বেবিচক চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বেবিচক বোর্ড সদস্য (ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড রেগুলেশন) এয়ার কমোডর শাহ কাওছার আহমদ চৌধুরী, পরিচালক (এয়ার ট্রান্সমিশন) একেএম ফায়জুল হক, বিশেষ পরিদর্শক (কমার্শিয়াল এয়ার ট্রান্সপোর্ট) এসএম গোলাম রাব্বানী, এভিয়েশন অ্যাটর্নি ফারজানা নুসরাত, মন্ত্রণালয়-বিমান-ইউএসবাংলা এবং নভোএয়ারের প্রতিনিধি অংশ নেন।
অত্যাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা
নতুন এই টার্মিনালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে থাকবে ২৭টি ব্যাগেজ স্ক্যানিং মেশিন, ১১টি বডি স্ক্যানার। টার্মিনালে প্রবেশ করা একজন যাত্রীকে বিমানে ওঠা পর্যন্ত হাতের স্পর্শ ছাড়া স্বয়ংক্রিয়ভাবেই তল্লাশি করা যাবে। সেক্ষেত্রে যাত্রীকে বডি স্ক্যানার মেশিনের ভেতর দুহাত তুলে দাঁড়াতে হবে। এর ফলে যাত্রী ও বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সময় বাঁচবে। স্ক্যানিংও হবে নির্ভুল ও স্বচ্ছ।
বর্তমানে বিমানবন্দরের ভেতরের একটি জায়গায় ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট সার্বক্ষণিক প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। তবে নতুন টার্মিনাল ভবন এলাকায় একটি পূর্ণাঙ্গ ফায়ার স্টেশন করা হচ্ছে। সেখানে থাকবে একজন পৃথক ফায়ার স্টেশন ম্যানেজার। থাকবে আগুন নেভানো ও জরুরি উদ্ধারকাজ করার সবধরনের সুযোগ-সুবিধা।
থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ কারিগর
টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ করছে স্যামসাং গ্রæপের কনস্ট্রাকশন ইউনিট স্যামসাং কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ট্রেডিং (সিঅ্যান্ডটি) কর্পোরেশন। প্রতিষ্ঠানটির নির্মিত স্থাপনাগুলোর মধ্যে রয়েছে বুর্জ খলিফা, পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার, তাইপে ১০১, সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের ৪ নম্বর টার্মিনাল, দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচেওন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও আবুধাবির ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক। এছাড়াও টার্মিনালের ভেতরের ভবনটির নকশা তৈরি করেছেন বিখ্যাত স্থপতি রোহানি বাহারিন। তিনি সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি এয়ারপোর্টের টার্মিনাল-৩, চীনের গুয়াঞ্জুর এটিসি টাওয়ার ভবন, ভারতের আহমেদাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ইসলামাবাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের নকশা তৈরি করেন।
টার্মিনাল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৫ হাজার কোটি টাকা দেবে বাংলাদেশ সরকার আর বাকি অর্থ দেবে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)।
এক নজরে থার্ড টার্মিনালের যত সুবিধা
এখানে যাত্রীদের জন্য ই-গেট, হাতের স্পর্শ ছাড়া চেকিং, নিজেই নিজের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করাসহ অত্যাধুনিক সুবিধা রাখা হয়েছে। এছাড়া সুপরিসর অ্যাপ্রোন, বিশাল গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা, পর্যাপ্ত লাগেজ বেল্ট যাত্রীদের দেবে নতুন অভিজ্ঞতা। তবে এসব সেবা পাওয়া যাবে ২০২৪ সালের শেষদিকে।
তৃতীয় টার্মিনালটি একটি মাল্টিমোডাল পরিবহন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে যাতে যাত্রীরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশ এবং প্রস্থান করতে সক্ষম হয়। নতুন টার্মিনালটি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ভ‚গর্ভস্থ রেলপথ (এমআরটি-৫, কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর অংশ) এবং একটি ভ‚গর্ভস্থ টানেলের মাধ্যমে বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের সঙ্গে সংযুক্ত হবে। এছাড়া আশকোনা হজ ক্যাম্প থেকে আন্ডারগ্রাউন্ড টানেলের মাধ্যমে হজযাত্রীরা তৃতীয় টার্মিনালে যেতে পারবেন।
তিনতলা বিশিষ্ট এই টার্মিনালের প্রথম তলাটি ব্যাগেজ হ্যান্ডেলিং সিস্টেম, ভিভিআইপি, ভিআইপিদের জন্য। দ্বিতীয় তলায় রয়েছে বহির্গমন লাউঞ্জ, ক্যান্টিন, বোর্ডিং ব্রিজ। তৃতীয় তলায় বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের ইমিগ্রেশন, বিদেশগামী যাত্রীদের ইমিগ্রেশন, চেক ইন কাউন্টার ও সিকিউরিটি সিস্টেম।
টার্মিনালের আয়তন: তৃতীয় টার্মিনালের আয়তন ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গ মিটার। বর্তমান দুটি টার্মিনালের আয়তন এক লাখ বর্গ মিটার।
ট্রানজিট: ট্রানজিট যাত্রীরা প্রধান বহির্গমন লাউঞ্জ ব্যবহার করবে, যার আয়তন ৪০ হাজার বর্গ মিটার।
যাত্রী ধারণ ক্ষমতা: তৃতীয় টার্মিনালের যাত্রী ধারণ ক্ষমতা বছরে এককোটি ৬০ লাখ। বর্তমানে দুটি টার্মিনালে বছরে যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৮০ লাখ।
আগমনী যাত্রীদের জন্য লাগেজ বেল্ট: তৃতীয় টার্মিনালে যাত্রীদের লাগেজ বেল্ট থাকবে ১৬টি। বর্তমানে দুটি টার্মিনালে লাগেজ বেল্ট আছে ৮টি।
আগমনী যাত্রীদের জন্য কাস্টম: বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের জন্য ১ হাজার ৩০০ বর্গমিটার আয়তনের একটি কাস্টম হল থাকবে। সেখানে ৬টি চ্যানেল থাকবে।
চেক ইন কাউন্টার: তৃতীয় টার্মিনালে চেক ইন কাউন্টার থাকবে ১১৫টি, এরমধ্যে স্বয়ংক্রিয় ১৫টি।
ইমিগ্রেশন কাউন্টার: তৃতীয় টার্মিনালে ইমেগ্রেশন কাউন্টার মোট ১২৮টি। এরমধ্যে স্বয়ংক্রিয় ১৫টি। মোট ১২৮টি কাউন্টারের মধ্যে বহির্গমন ইমিগ্রেশন কাউন্টার ৬৬টি, আগমনী ইমিগ্রেশন কাউন্টার ৫৯টি এবং ভিভিআইপি ৩টি।
বোর্ডিং ব্রিজ: বর্তমান দুটি টার্মিনালে আছে ৮টি বোর্ডিং ব্রিজ। তৃতীয় টার্মিনালে প্রথম পর্যায়ে ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ থাকবে। পরবর্তী সময়ে আরেকটি স¤প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় আরও ১৪টি বোর্ডিং ব্রিজ যুক্ত করা হবে।
লিফট: ৪১টি। এরমধ্যে প্যাসেঞ্জার লিফট ৩৪টি ও সার্ভিস লিফট ৭টি।
এসকেলেটের: ৩৫টি, মুভিং ওয়াকওয়ে: ১৪টি।
হোল্ড ব্যাগেজ এক্সরে মেশিন: ২৭টি, কেবিন ব্যাগেজ এক্সরে মেশিন: ৪০টি।
বডি স্ক্যানার: ১১টি, মেটাল ডিটেক্টর: ৫২টি।
উড়োজাহাজ পার্কিং বে: বর্তমানে আছে ২১টি। তৃতীয় টার্মিনালে পার্কিং বে রয়েছে ৩৭টি।
মাল্টি লেভেল কার পার্কের ধারণ ক্ষমতা: বর্তমানে বহুতল কার পার্কি ভবনে ৩০০টি গাড়ি রাখা সম্ভব। তৃতীয় টার্মিনালের কার পার্কিংয়ে ১২৩০টি গাড়ি রাখা যাবে।
আমদানি কার্গো ভবনের আয়তন: বর্তমান কার্গো ভবনের আয়তন ১৩ হাজার ৭০০ বর্গমিটার। নতুন টার্মিনালের ভবনের আয়তন ২৭ হাজার বর্গমিটার।
আমদানি কার্গো ভবনের ধারণ ক্ষমতা: বর্তমান ভবনের ধারণ ক্ষমতা বছরে ৮৪ হাজার ৩৭৯ টন। নতুন ভবনের ধারণ ক্ষমতা ২ লাখ ৭৩ হাজার ৪৭০ টন।
রপ্তানি কার্গো ভবনের আয়তন: বিদ্যমান ভবনের আয়তন ১৯ হাজার ৬০০ বর্গমিটার। নতুন ভবনের আয়তন ৩৬ হাজার বর্গ মিটার।
রপ্তানি কার্গো ভবনের ধারণ ক্ষমতা: বর্তমানে বছরে ধারণ ক্ষমতা ২ লাখ ৪৬০ টন। নতুন ভবনে ধারণ ক্ষমতা ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৯৪১ টন।
অন্য টার্মিনালের সঙ্গে সংযোগ: বর্তমানের দুটি টার্মিনালের সঙ্গে তৃতীয় টার্মিনালের কোনও সংযোগ থাকবে না। তবে পরবর্তী সময়ে প্রকল্পে করিডোর নির্মাণ করা হবে।
সড়কের সঙ্গে তৃতীয় টার্মিনালের সংযোগ: ঢাকা- ময়মনসিংহ হাইওয়ের সঙ্গে মূল সড়ক ছাড়াও এলিভেটেড ড্রাইভওয়ের মাধ্যমে যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া মেট্রোরেলের একটি স্টেশন মাটির নিচে করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে মেট্রোরেল স্টেশনের সংযোগের জন্য টানেল নির্মাণ করা হয়েছে।