TRENDING
মণিপুরি সম্প্রদায়ের রাস উৎসব June 21, 2025
বাংলাদেশ-নেপালের পর্যটন উদ্যোক্তাদের সম্পর্ক আরো জোরদারের আহ্বান June 21, 2025
দুই চাকায় হিজল বনের খোঁজে June 20, 2025
দেবতাখুম পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা June 18, 2025
ঢাকায় ফের শুরু অস্ট্রেলিয়ার ভিসা কার্যক্রম June 18, 2025
Next
Prev
  • হোম
  • দেশ ভ্রমণ
    • ঢাকা
      • ঢাকা
      • ফরিদপুর
      • গাজীপুর
      • মানিকগঞ্জ
      • নারায়নগঞ্জ
      • মাদারিপুর
      • মুন্সিগঞ্জ
      • কিশোরগঞ্জ
      • নরসিংদী
      • রাজবাড়ি
      • শরিয়তপুর
      • টাঙ্গাইল
      • গোপালগঞ্জ
    • রাজশাহী
      • রাজশাহী
      • পাবনা
      • নাটোর
      • বগুড়া
      • জয়পুরহাট
      • সিরাজগঞ্জ
      • চাঁপাইনবাবগঞ্জ
      • নওগাঁ
    • চট্টগ্রাম
      • চট্টগ্রাম
      • কক্সবাজার
      • ব্রাহ্মণবাড়িয়া
      • ফেনী
      • কুমিল্লা
      • চাঁদপুর
      • লক্ষ্মীপুর
      • নোয়াখালী
      • রাঙ্গামাটি
      • বান্দরবান
      • খাগড়াছড়ি
    • সিলেট
      • সিলেট
      • মৌলভীবাজার
      • সুনামগঞ্জ
      • হবিগঞ্জ
    • রংপুর
      • রংপুর
      • দিনাজপুর
      • ঠাকুরগাঁও
      • কুড়িগ্রাম
      • লালমনিরহাট
      • নীলফামারি
      • পঞ্চগড়
      • গাইবান্ধা
    • খুলনা
      • খুলনা
      • যশোর
      • চুয়াডাঙ্গা
      • ঝিনাইদহ
      • কুষ্টিয়া
      • মাগুরা
      • মেহেরপুর
      • নড়াইল
      • সাতক্ষীরা
      • বাগেরহাট
    • বরিশাল
      • বরিশাল
      • ভোলা
      • বরগুনা
      • ঝালকাঠি
      • পিরোজপুর
      • পটুয়াখালি
    • ময়মনসিংহ
      • ময়মনসিংহ
      • শেরপুর
      • জামালপুর
  • বিদেশ ভ্রমণ
  • পর্যটন সেবা
    • এয়ারলাইনস
      • নেত্রকোনা
    • হোটেল ও রিসোর্ট
    • থিম পার্ক ও পিকনিক স্পট
    • টুরিস্ট ভেসেল
    • এজেন্ট ও অপারেটর
  • পর্যটন সংবাদ
  • পর্যটন ফিচার
    • দর্শনীয় স্থান
    • ইতিহাস ও ঐতিহ্য
    • উৎসব ও মেলা
    • স্থানীয় খাবার
    • সৌখিন কেনাকাটা
    • হোটেল ও রিসোর্ট
  • ভ্রমণ গল্প
  • ভিডিও
  • ছবি ঘর
  • সম্পাদকীয়
  • ক্যাটাগরি
    • বাংলাদেশ
    • আন্তর্জাতিক
    • কর্পোরেট
    • ক্যাম্পাস
    • প্রেস রিলিজ
    • অ্যাডভেঞ্চার
    • বেড়ানোর অভিজ্ঞতা
    • শিক্ষা ও দক্ষতা
    • পর্যটন চাকুরি
    • দর্শনীয় স্থান
    • ইতিহাস ও ঐতিহ্য
    • স্থানীয় খাবার
    • উৎসব ও মেলা
    • সৌখিন কেনাকাটা
    • নগর বিনোদন
    • দেশে বেড়ানো
    • বিদেশে বেড়ানো
    • কাছে বেড়ানো
    • এয়ারলাইনস
    • হোটেল ও রিসোর্ট
    • টুরিস্ট ভেসেল
    • থিম পার্ক
    • এজেন্ট ও অপারেটর
    • ট্রাভেল টিপস
    • সাক্ষাৎকার
    • মতামত
    • সম্পাদকীয়
  • ই-ম্যাগাজিন
Menu
  • হোম
  • দেশ ভ্রমণ
    • ঢাকা
      • ঢাকা
      • ফরিদপুর
      • গাজীপুর
      • মানিকগঞ্জ
      • নারায়নগঞ্জ
      • মাদারিপুর
      • মুন্সিগঞ্জ
      • কিশোরগঞ্জ
      • নরসিংদী
      • রাজবাড়ি
      • শরিয়তপুর
      • টাঙ্গাইল
      • গোপালগঞ্জ
    • রাজশাহী
      • রাজশাহী
      • পাবনা
      • নাটোর
      • বগুড়া
      • জয়পুরহাট
      • সিরাজগঞ্জ
      • চাঁপাইনবাবগঞ্জ
      • নওগাঁ
    • চট্টগ্রাম
      • চট্টগ্রাম
      • কক্সবাজার
      • ব্রাহ্মণবাড়িয়া
      • ফেনী
      • কুমিল্লা
      • চাঁদপুর
      • লক্ষ্মীপুর
      • নোয়াখালী
      • রাঙ্গামাটি
      • বান্দরবান
      • খাগড়াছড়ি
    • সিলেট
      • সিলেট
      • মৌলভীবাজার
      • সুনামগঞ্জ
      • হবিগঞ্জ
    • রংপুর
      • রংপুর
      • দিনাজপুর
      • ঠাকুরগাঁও
      • কুড়িগ্রাম
      • লালমনিরহাট
      • নীলফামারি
      • পঞ্চগড়
      • গাইবান্ধা
    • খুলনা
      • খুলনা
      • যশোর
      • চুয়াডাঙ্গা
      • ঝিনাইদহ
      • কুষ্টিয়া
      • মাগুরা
      • মেহেরপুর
      • নড়াইল
      • সাতক্ষীরা
      • বাগেরহাট
    • বরিশাল
      • বরিশাল
      • ভোলা
      • বরগুনা
      • ঝালকাঠি
      • পিরোজপুর
      • পটুয়াখালি
    • ময়মনসিংহ
      • ময়মনসিংহ
      • শেরপুর
      • জামালপুর
  • বিদেশ ভ্রমণ
  • পর্যটন সেবা
    • এয়ারলাইনস
      • নেত্রকোনা
    • হোটেল ও রিসোর্ট
    • থিম পার্ক ও পিকনিক স্পট
    • টুরিস্ট ভেসেল
    • এজেন্ট ও অপারেটর
  • পর্যটন সংবাদ
  • পর্যটন ফিচার
    • দর্শনীয় স্থান
    • ইতিহাস ও ঐতিহ্য
    • উৎসব ও মেলা
    • স্থানীয় খাবার
    • সৌখিন কেনাকাটা
    • হোটেল ও রিসোর্ট
  • ভ্রমণ গল্প
  • ভিডিও
  • ছবি ঘর
  • সম্পাদকীয়
  • ক্যাটাগরি
    • বাংলাদেশ
    • আন্তর্জাতিক
    • কর্পোরেট
    • ক্যাম্পাস
    • প্রেস রিলিজ
    • অ্যাডভেঞ্চার
    • বেড়ানোর অভিজ্ঞতা
    • শিক্ষা ও দক্ষতা
    • পর্যটন চাকুরি
    • দর্শনীয় স্থান
    • ইতিহাস ও ঐতিহ্য
    • স্থানীয় খাবার
    • উৎসব ও মেলা
    • সৌখিন কেনাকাটা
    • নগর বিনোদন
    • দেশে বেড়ানো
    • বিদেশে বেড়ানো
    • কাছে বেড়ানো
    • এয়ারলাইনস
    • হোটেল ও রিসোর্ট
    • টুরিস্ট ভেসেল
    • থিম পার্ক
    • এজেন্ট ও অপারেটর
    • ট্রাভেল টিপস
    • সাক্ষাৎকার
    • মতামত
    • সম্পাদকীয়
  • ই-ম্যাগাজিন

মেঘালয় রাজ্যে শিলং পাহাড়ে ঘুরোঘুরি

পৃথিবীর আকাশে তখন করোনা নামে কোন ভাইরাস ছিল না , ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বার মাস ; ‘পিয়াইন নদীর স্রোতে’ গল্পটা লিখতে লিখতে ভাবছিলাম, কবে যে মেঘালয় পাহাড়ে উঠবো ! সবাই বলতো ডাউকি সীমান্ত পার হলেই নাকি মেঘালয় পাহাড়ের আসল সৌন্দর্য বোঝা যায়।  তাই আমি ভারতীয় ভিসাতে ডাউকি বর্ডার নিয়ে রেখে দিতাম , কখন কাজে লেগে যায় এই আশায়।

মেঘালয় রাজ্যে শিলং পাহাড়ে ঘুরোঘুরি

শিলং উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালয় রাজ্যের একটি শহর । ছবিঃ সংগৃহীত

লেখকঃ রাম গোপাল চ্যাটার্জি, বর্ধমান, কলকাতা
সুযোগটা হয়ে গিয়েছিল সেবার সিলেট যাবার পর । বৃষ্টিতে পুরো সিলেট একেবারে পানিতে থৈ থৈ। নাজনীন খলিল আপুকে নিয়ে শহর ঘুরতে ঘুরতে পরিচয় হয়ে গেল একজন ব্যবসায়ী দম্পতির সঙ্গে, যারা প্রায় প্রতি মাসেই শিলং যান। তাদের কাছ থেকেই পেয়ে গেলাম ডাউকি বর্ডার থেকে শিলং যাবার পুরো তথ্য। শুধু তাই নয়, আমাকে বর্ডার থেকে কোন গাড়ি ডাউকি বাজার অব্দি নিয়ে যাবে তার নম্বর পর্যন্ত দিয়ে দিলেন। এরপর আর মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী ঘুরতে যাওয়া নিয়ে আমার কোনো সংশয় থাকলো না।পরদিন ভোর ৭টায় তাদের পরিচিত ড্রাইভার এসে হাজির। কারণ সকাল দশটার মধ্যে সীমান্তের ঝামেলা শেষ করা ভালো । বৃষ্টির মধ্যে ডাউকি বাজার পৌঁছতে দেরি হয়ে গেলে শিলং পৌঁছতে সন্ধ্যা নেমে যাবে। সিলেট–তামাবিলের সেই এবড়ো-থেবড়ো রাস্তা দিয়ে দুই ঘন্টার ক্লান্তিময় যাত্রা শেষ হলো তামাবিল ইমিগ্রেশনে।বাংলাদেশের সীমান্তের শীর্ণ চেহারা সব সময় আমাকে হতবাক করে। হয় সরকার এই খাতে কোনো খরচ করে না অথবা আমরা যে যাবার সময় জনপ্রতি ৫০০-৬০০ টাকা দেই তার সঠিক ব্যবহার এখানে হয় না ।সার্ভিস চার্জ এবং সেই সঙ্গে কিছু উপঢৌকন কাস্টম অফিসারের হাতে দিয়ে বেরিয়ে গেলাম ল্যাগেজ হাতে।জিরো পয়েন্টে দাঁড়িয়ে  অসাধারণ অনুভূতি জাগলো মনে। এপাশে বাংলাদেশ আর ওপাশে ভারত। ধীরে ধীরে আমি উপরের দিকে উঠছি, ডাউকি বাজারের দিকে। ওখান থেকে ট্যাক্সিতে শিলং যেতে লাগবে প্রায় তিন ঘন্টা। মাঝে ইমিগ্রেশনে চেক-ইন করে নিতে হবে। ওদের ইমিগ্রেশন আর আমাদের ইমিগ্রেশন অফিস সম্পূর্ণ  আলাদা। সাজানো গোছানো অফিস। সবার পরণে অফিসিয়াল পোশাক এবং অবশ্যই তারা কথা বলছেন ইংলিশে এবং প্রয়োজনে হিন্দিতে। অনেকেই বলে থাকেন ভারতীয় সীমান্তে ল্যাগেজ খুলে চেক করা হয়। যদিও আমার বেলাতে কোনো কালেও ঘটেনি এমনটা। আর ওরা আধুনিক মেশিনের ভেতরে ল্যাগেজ ভরে দিয়ে চেক করছে; প্রাচীন পদ্ধতির আর দরকার পড়ছে না। হিন্দিতে একজন লেডি অফিসার জিজ্ঞেস করলেন – ‘এধারমে কেয়া ভিজিট মে?’হিন্দি ভালো পারিনা, তাই ইংলিশে চালিয়ে দিলাম-,  ইয়েস, ওয়ান্ট টু ভিজিট শিলং।
আবার প্রশ্ন;  আপ কেয়া করতে হো?
আমি হেসে উত্তর দিলাম,  আই এম এ রাইটার, ট্রাভেলিং ইজ মাই প্যাশন।মহিলার চোখে-মুখে সন্তুষ্টি খেলা করে উঠলো, তিনি হাসি মুখে সিল মেরে দিলেন। এর মধ্যেই বাংলাদেশের সিমে বিপ্লবদার কল। তিনি ট্যাক্সি নিয়ে এসেছেন আমাকে ডাউকি বাজার অব্দি দিয়ে আসবেন বলে । আমি আর দেরি না করে উঠে পড়লাম।এই ফাঁকে সেদিনের ইন্ডিয়ান রেট জেনে নিলাম আমার একজন ব্যাংকার বন্ধুর কাছ থেকে । সে যা রেট বললো বিপ্লবদা তার চাইতে ১০ রুপি করে কম দিতে চাইলো। পনের হাজারে তিন দিন মেঘালয়ে ঘোরাঘুরি ভালো ভাবেই করা যাবে এমন ধারণা ছিল। কেবল বোকামি হয়ে গেল পুরো টাকাটা না ভাঙ্গিয়ে। ভেবেছিলাম শিলং পৌঁছে সবটা ভেঙ্গে রুপি করবো। কিন্তু ওখানে যা দিতে চাইলো তা এর থেকেও অর্ধেক ।
বিপ্লবদা আমাকে একটা টাটা ন্যানো জিপে বসিয়ে দিলেন। এটাতে বসে দার্জিলিং ওঠার অভ্যেস আমার আছে। মোট আট জন প্যাসেঞ্জার থাকেন। আড়াইশ করে ভাড়া। সাঁই সাঁই উঠে যায় পাহাড়ের সর্বোচ্চ চূড়ায়। প্রতিবারই মনে হবে এই বুঝি পড়ে গেলাম। ড্রাইভার এমন দক্ষ হাতে গাড়ি চালান যে ওপাশ থেকে অদেখা গাড়িগুলো বাঁক ঘুরে আসলেও কখনো টক্কর খায় না। অবশ্য ঘটনাক্রমে কেউ যদি দুর্ঘটনায় একবার পড়েই যায় তবে আর রেহাই নেই ।
আমি বসেছি জিপের সবচাইতে ডানে। ইচ্ছে ছিল বাম দিকে বসে বাংলাদেশের পিয়াইন নদীটি আর একবার কাছ থেকে দেখবো। জিপ ডাউকি ব্রিজের ওপর দিয়ে যাবার সময় জ্যামে পড়ে গেল। আমি ডান পাশের পিয়াইন নদীর স্রোতধারা দেখতে লাগলাম । সবুজের গা ছুঁয়ে ভেসে যাওয়া জল। আর সেই জলে ধাক্কা খাচ্ছে বড় বড় পাহাড়। সারাটা জীবন সেই পাথরে বসে ছবি তুলেছি আর এই প্রথম ওপর থেকে দেখতে পাচ্ছি আমার বাংলাদেশ।
জিপ ওপরে উঠছে। আর চোখ আটকে যাচ্ছে পাহাড়ের মাটি ফুঁড়ে ঝরতে থাকা জলস্বিনী ঝরনায়। শিলং যাবার পথেই যে কতোগুলো ঝরনা দেখলাম তা আর গুণে শেষ করা গেল না। যত উপরের দিকে উঠছি তত তাপমাত্রা কমছে। এক সময় সাদা মেঘ এসে জড়িয়ে ধরলো।এশিয়ার সবচাইতে পরিচ্ছন্ন গ্রাম মাওলিংলং-এর মধ্য দিয়ে আমরা এগুচ্ছি। তাদের পোশাক আর তাদের ভাষা বোঝার সাধ্য আমার নেই। অসমীয়া ভাষায় তারা কথা বলছে। বোঝাই যাচ্ছে ভীষণ কর্মঠ মানুষ এরা। পাহাড়ের এতো উঁচুতে কাঠের বাড়ি করে থাকা সোজা কথা নয়। বাচ্চারা দেখলাম হেঁটে হেঁটে স্কুলেও যাচ্ছে।কখনো মেঘ, আবার কখনো রোদের মিষ্টি আলো এই করতে করতে পুরো ছয় হাজার ফুট উপরে উঠে গেলাম। জুলাই মাস মানে ভ্রমণের মৌসুম চলছে। তাই ব্যাপক ভিড়। ড্রাইভার আমাদের নামিয়ে দিল একটা স্ট্যান্ডের ভেতর যার দুই ধারে  কেনাকাটার দোকান। আমি এখন বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার উত্তরে প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড নামে খ্যাত স্বপ্নময়  শিলং শহরে।আমি কোনো হোটেল বুক করে এখানে আসিনি। কলকাতা থেকে আগত বন্ধু রাম গোপাল চ্যাটার্জি থাকার ব্যবস্থা করেছেন ভারতীয় সেবা আশ্রমে। অবশ্যই হিন্দু ব্রাহ্মণদের সাথে।আমার কাছে কোনো ভারতীয় সিম নেই, কোনো রুপিও নেই। এখন যদি পাসপোর্টখানাও হারিয়ে যায় তবে নিজেকে কোন দেশের বলে চালিয়ে দেব তাই ভাবছি।
ট্র্যাভেল ব্যাগ টেনে টেনে আরো ওপরের দিকে উঠলাম। চারপাশে কত বাহারি ফলের আড়ত। কিনবো কী করে? বেশি স্মার্ট হতে গিয়ে টাকা ভাঙ্গাইনি। আমি যখন এমন এলোমেলা ঘুরে বেড়াচ্ছি, পেছন থেকে কেউ একজন ডেকে উঠলো-‘নীলা’ ।
ছয় ফুট লম্বা মানুষটার দেখা পাওয়া গেল অবশেষে। প্রথম দেখা হলে লোকে কুশল বিনিময় করে। তখন এসব থোরাই কেয়ার করার দশা আমার। সোজা বলে বসলাম, “উফ, ভীষণ ক্ষুধা পেয়েছে দাদা। আগে কিছু খাব।”
দাদা ঘড়ি দেখলেন,  “দুটো ক্রস করে গেছে। আগে রুম বুঝে নাও। পরে তো সেটাই পাবে না। দেখছো না শিলং লোকে লোকারণ্য।”
আমার মোটেও রুম নিয়ে ভাবনা ছিল না। এমন পরিচ্ছন্ন শহরে পাহাড়ের গায়ে গা এলিয়ে ঘুমিয়ে পড়তেও আমার খারাপ লাগবে না। তবু দাদার পিছু নিলাম। আশ্রমের ম্যানেজারের কাছে পাসপোর্ট কপি জমা দিয়ে থাকার ঘরটা একবার দেখে নিলাম। বাহ! কোনো ফ্যান নেই এখানে। হু হু করে ঠাণ্ডা বাতাস ঢুকছে। কল ছেড়ে মুখ ধুতেই শিহরিত হলাম বরফ শীতলতায়।
সুরুচি রেস্তোরাঁয় দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম। এতো ভিড় থাকে ওখানে ভাবাই যায় না। ভেবেছিলাম ভাত পাব না। আমাকে অবাক করে দিয়ে ভাতের সঙ্গে মাছ, সবজি, খাসি সব দিল। যে তিন দিন ছিলাম ওখানেই দুপুরের খাবার সেরেছি।বিকেল গড়িয়ে তখন সন্ধে নামার পথে। দাদার হাতে ডিএসএলআর। আমরা পুলিশ বাজার থেকে আরো ওপরে উঠতে লাগলাম। পাহাড়ের উঁচুতে গভীর এক লেক। সে রাতেই ছিল গুরু পূর্ণিমা। ছয় হাজার ফুট ওপরে বসে ঘন সাদা থালার মতোন জ্বলজ্বলে একটি চাঁদ দেখতে দেখতেই শুরু হলো ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। মাথার ওপর জলভেজা চাঁদ নিয়ে সে রাতে আর ঘুম হলো না।
পুলিশ বাজার ঘুরে ঘুরে বেশ কম দামে কিছু চপ্পল নিলাম আর  কয়েকটা লন  কিনে নিলাম । রুমে ফেরার সময় খেলাম মৌ । চিকেন দিয়ে তৈরি খাবারটির প্রেমে পড়েছিলাম সেই প্রথমবার যেদিন কলকাতা গিয়েছিলাম ।
দাদা বেশ ভোরেই হাঁটতে চলে গেলেন। আমি তার ঘরে গিয়ে খুঁজে না পেয়ে আশ্রমের ম্যানেজারের অফিসে গিয়ে ফোনে চার্জ দিতে থাকি; যদি কোনো রকমে একটা সিম জোগাড় করতে পারি। ভারতে কেজি দরে সিম বিক্রি হয় না। এর আগে পনেরো দিন থেকেও নিজের নামে সিম তুলতে পারিনি। তাই আশা ছেড়ে দিয়ে ওদের সঙ্গে বসে নাস্তা সেরে নিলাম।
একটি থালাতে বাহারি পদের খাবার পরিবেশন করা হয়েছে – লুচি,পায়েস, ফল, সবজি, ডাল। দু’পাশে লম্বা সারি করে সবাই বসেছে আর ধবধবে সাদা ধুতি পরা একজন মধ্যবয়সী লোক বালতির ভেতর বড় আকারের চামচ ডুবিয়ে খাবার তুলে তুলে দিচ্ছেন। কেউ কেউ পূজো করছেন প্রতিমার পায়ের কাছে জবা এবং গাঁদা ফুল দিয়ে। আর কেউ কেউ আমার সাথে বসে গেছেন ভোগ খেতে। পুরো বিষয়টা যখন সম্পন্ন হয়ে গেল তখন দাদা এসে বললেন – “ও তুমি ভোগ সেড়ে নিয়েছো? তবে রেডি হয়ে নাও। আমরা শিলং পিক- এ যাব।”
শিলং পিক কেবল আমার কাছে বইয়ে পড়া গল্পের মতো ছিল। এবার বুঝলাম পিক কতোটা উপরে হয়। যে ছেলেটির গাড়ি আমরা সারাদিনের জন্য ভাড়া করে নিয়েছিলাম সে স্থানীয় ছেলে। মোটামুটি একটানে উঠিয়ে নিল শিলং পিকে।  দুই ধারে চাষের জমি  আর সেখানে গরু আর ভেড়া চরাচ্ছে রাখাল। আকাশের কাছাকাছি এসেও এমন চেনা দৃশ্য চোখে না দেখলে সত্যি বিশ্বাস করতাম না । পুলিশ বাজার থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরত্বে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সাড়ে ছয় হাজার ফুট উঁচুতে এই শিলং পিক ।

শিলং পিক ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বেইজ। একটি রাডার স্টেশন রয়েছে । ফলে চূড়া থেকে শহরের ছবি তোলার অনুমতি থাকলেও রাডারের দিকে ক্যামেরা ঘোরানো যাবে না। মূল চূড়ার এক কিলোমিটার আগেই সেনাবাহিনীর চেকপোস্ট। সঙ্গে ভারতীয় নাগরিক আছেন তাই তার পরিচয়পত্র  জমা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলাম।
দুটো ওয়াচটাওয়ার আছে এখানে। একটি টাওয়ার থেকে ২৭০ ডিগ্রি কোণে দেখে নিলাম পুরো শিলং; যেন পাখির চোখে আকাশ দেখা। এমন অভূতপূর্ব দৃশ্য ভিডিও করে নিলাম হাতের মুঠোয় ধরে রাখা মোবাইলে। আরেকটি টাওয়ারে রয়েছে টেলিস্কোপ । ৫০ রুপি দিয়ে টেলিস্কোপে পুরো শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো দেখে নিলাম। রুপিগুলো দাদার কাছ থেকে বিনিময় করেছি টাকার বদলে।

এখানেও নানান পদের ফল পাওয়া গেল। খাসিয়াদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পড়ে মাথায় ফুল লাগিয়ে অনেকেই ছবি তুলছেন। আর আমার সারাক্ষণ ইচ্ছে হলো মেঘগুলোকে ছুঁয়ে থাকি। এদিকে বেলা বেড়ে যাচ্ছে। যেতে হবে আমার কাছে সবচাইতে আকর্ষনীয় স্থান অ্যালিফেন্ট ফলসে।
ফলসে গা ভেজাবার আগে ড্রাইভার নিজেই বললো-  “চলুন দিদি, একটা বন আছে এখানে। ওটা দেখে নেই।”
আমি মজা করে বললাম,  “ওই বনে কি রয়েল বেঙ্গল টাইগার আছে?”
সে হেসে উত্তর করলো,  “না, তা নেই। তবে অনেক জন্তু-জানোয়ার আছে।”

দক্ষ হাতে সে গাড়ি আরো কিছুটা নামিয়ে নিয়ে এলো, এখান থেকে পুরো পাহাড়টা ন্যাড়া দেখাচ্ছে। চারপাশে শুধুই সারি সারি বাড়ি। কোথাও আর গাছপালা নেই। গলফ খেলার খোলা মাঠ পেরিয়ে চলে গেলাম সেই অরণ্যে। যদিও আমরা অরণ্যের ভেতর ঢুকিনি; খোলা মাঠে ১০০ রুপি দিয়ে গাড়ি থামিয়ে গরম গরম চায়ে চুমুক দিচ্ছি।
পাহাড়ের ওপর বিস্তৃত খোলা মাঠ। দাদা ছবি তুলছেন অনবরত। বাবা-মায়েরা বাচ্চাদের খেলতে দিয়ে নিশ্চিত গল্প করছেন। পরিবার নিয়ে সময় কাটাবার জন্য এটা ভীষণ নিরিবিলি একটা জায়গা।

খোলা ময়দানে কিছু সময় কাটিয়ে সোজা চলে গেলাম এলিফ্যান্ট ফলসে । শতাধিক মানুষ, পার্কিং এলাকায় অনেক গাড়ি, কিন্তু  রাস্তায় এক-আধটুও ময়লা নেই।

এবার আর উপরের দিকে নয়, আমাদের নামতে হচ্ছে নীচের দিকে। মেঘালয়ের পূর্ব খাসিয়া পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়ছে এলিফ্যান্টস ফলস। ভারতের খাসিয়া রাজ্যে এ ঝরনা ধারাকে বলা হতো ‘কা খাসাইদ লাই পাতেং খোসিউ’; বাংলায় একে বলে তিন ধাপের ঝরনা।এখানে তিনটি ধাপে পাথর বেয়ে নামে পানি। পরবর্তীতে ব্রিটিশরা এ ঝরনার নাম দেয় এলিফ্যান্ট ফলস। এই জলপ্রপাতের কালো পাথরগুলো মিলিত হয়ে এক ঐরাবত আকৃতির সৃষ্টি করেছিল, সেই থেকে এর নাম দ্য এলিফ্যান্ট ফলস। তিনশো সিঁড়ি মাড়িয়ে নেমে গেলাম ঝরনার জলে গা ভেজাতে। কিন্তু ওখানে নিরাপত্তা বেষ্টনি এতোটাই কড়া ছিল যে তা আর পার হতে পারলাম না। তাই হাঁটু পানিতে নিজেকে ভিজিয়ে স্বান্তনা দিলাম ।     সে রাতে দুই পা সটান করে ঘুমানোর চেষ্টা করেছিলাম; ওই তিনশ সিঁড়ি উঠতে দম বেরিয়ে গিয়েছিল। পরদিন খুব ভোরে উঠে নাস্তা সেড়ে নিলাম মাদ্রাস ক্যাফেতে । দোসার সঙ্গে পনির আর সবজি। যেতে হবে মেঘের আরেক বাড়ি নীলাচল যা অবস্থিত আসামের একসময়কার রাজধানী গৌহাটিতে ।

রাম গোপাল চ্যাটার্জি
+ postsBio
    This author does not have any more posts.
Tags: Meghalayaদর্শনীয় স্থানভ্রমণমেঘালয়শিলং পাহাড়
ShareTweetShare
Previous Post

উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় পর্যটন

Next Post

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ঢাকা-কুয়ালালামপুর যাত্রা শুরু

Related Posts

নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি
পর্যটন সংবাদ

বাংলাদেশ-নেপালের পর্যটন উদ্যোক্তাদের সম্পর্ক আরো জোরদারের আহ্বান

June 21, 2025
দেবতাখুম পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা
পর্যটন সংবাদ

দেবতাখুম পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা

June 18, 2025
ভ্রমণে ক্লান্তি কমানোর ১২ কার্যকরী উপায়
ট্রাভেল টিপস

ভ্রমণে ক্লান্তি কমানোর ১২ কার্যকরী উপায়

June 18, 2025
পর্যটন খাতের উন্নয়নে পরিবর্তন জরুরি : পর্যটন উপদেষ্টা
এয়ারলাইনস

পর্যটন খাতের উন্নয়নে পরিবর্তন জরুরি : পর্যটন উপদেষ্টা

June 16, 2025
  • Trending
  • Comments
  • Latest
সিলেট শহরের দর্শনীয় যতো স্থান

সিলেট শহরের দর্শনীয় যতো স্থান

June 18, 2025
সিলেটের ঐতিহ্যবাহী খাবার

সিলেটের ঐতিহ্যবাহী খাবার

May 31, 2024
চট্টগ্রামে পর্যটকদের জন্য চালু হলো বিশেষ বাস

চট্টগ্রামে পর্যটকদের জন্য চালু হলো বিশেষ বাস

May 13, 2024
ভাষা আন্দোলন ও শহীদ মিনারের ইতিহাস

ভাষা আন্দোলন ও শহীদ মিনারের ইতিহাস

November 11, 2022
ভাষা আন্দোলন ও শহীদ মিনারের ইতিহাস

ভাষা আন্দোলন ও শহীদ মিনারের ইতিহাস

1
বর্ষায় বাংলাদেশের পর্যটন

বর্ষায় বাংলাদেশের পর্যটন

1
মনোহারিণী দুর্গাসাগর দিঘি

মনোহারিণী দুর্গাসাগর দিঘি

1
শেকড়ের টানে বাংলাদেশে

শেকড়ের টানে বাংলাদেশে

1
মণিপুরি সম্প্রদায়ের রাস উৎসব

মণিপুরি সম্প্রদায়ের রাস উৎসব

June 21, 2025
নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি

বাংলাদেশ-নেপালের পর্যটন উদ্যোক্তাদের সম্পর্ক আরো জোরদারের আহ্বান

June 21, 2025
দুই চাকায় হিজল বনের খোঁজে

দুই চাকায় হিজল বনের খোঁজে

June 20, 2025
দেবতাখুম পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা

দেবতাখুম পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা

June 18, 2025

Recent News

মণিপুরি সম্প্রদায়ের রাস উৎসব

মণিপুরি সম্প্রদায়ের রাস উৎসব

June 21, 2025
নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি

বাংলাদেশ-নেপালের পর্যটন উদ্যোক্তাদের সম্পর্ক আরো জোরদারের আহ্বান

June 21, 2025
দুই চাকায় হিজল বনের খোঁজে

দুই চাকায় হিজল বনের খোঁজে

June 20, 2025
দেবতাখুম পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা

দেবতাখুম পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা

June 18, 2025

পর্যটন বিচিত্রা

ভ্রমণ বিষয়ক পত্রিকা ।
বেড়ানোর সকল খোঁজখবর ও পর্যটন সেবার যোগসুত্র পর্যটন বিচিত্রা।
কোথায় যাবেন? কীভাবে যাবেন? কোথায় থাকবেন? কি দেখবেন? কখন দেখবেন? এসবের সহজ সমীকরণ পর্যটন বিচিত্রা।
পড়তে পড়তে গন্তব্যে …

পর্যটন বিচিত্রা
প্রকাশক ও সম্পাদক : মহিউদ্দিন হেলাল

সম্পাদক কর্তৃক সম্পাদকীয় কার্যালয় থেকে প্রকাশিত।

নিবন্ধন সালঃ ২০০৫

আমাদের সাথে সংযুক্ত থাকুন

সর্বশেষ সংযোজন

উৎসব ও মেলা

মণিপুরি সম্প্রদায়ের রাস উৎসব

June 21, 2025
পর্যটন সংবাদ

বাংলাদেশ-নেপালের পর্যটন উদ্যোক্তাদের সম্পর্ক আরো জোরদারের আহ্বান

June 21, 2025
অ্যাডভেঞ্চার

দুই চাকায় হিজল বনের খোঁজে

June 20, 2025

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়

বাড়ি -৯৭/১,  ফ্লাট– ২/বি, শুক্রাবাদ,
ধানমন্ডি, ঢাকা-১২০৭

ফোন: +৮৮-০২-২২২২৪২৯৪৪, ০১৯৭০০০৪৪৪৭
ইমেইল: [email protected]

পর্যটন বিচিত্রার অন্যান্য উদ্যোগ

© সর্বস্বত্ত সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি ও ভিডিও অনুমতি ব্যতিরেকে প্রকাশ বা ব্যবহার করা বেআইনি।

You cannot copy content of this page