■ পর্যটন বিচিত্রা প্রতিবেদন
পটুয়াখালী জেলার অপরূপ সৌন্দর্য, নিসর্গ পরিবেশ, শান্তিপূর্ণ গ্রামীণ জীবনযাত্রা এবং বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতসহ বিভিন্ন স্থান দেশের ভ্রমণপিপাসু মানুষদের কাছে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেয়। এখানে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক স্থান, নদীর মোহনা, বনভূমি এবং গ্রামীণ সংস্কৃতির অনন্য নিদর্শন।
চলুন জেনে নেয় এই জেলার দর্শনীয় ১০ গন্তব্য সম্পর্কে। এগুলো হলো— কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত, শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ মন্দির, লেম্বুর চর, ৭২ ফুট দীর্ঘ প্রাচীন নৌকা, ফাতরার চর, গঙ্গামতির চর, রাখাইন মার্কেট, ঝাউবন, অতি প্রাচীন কুয়া ও রাখাইন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী।
কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত
দেশের সর্ব দক্ষিণে পটুয়াখালী জেলায় কলাপাড়া উপজেলায় অবস্থিত সাগরকন্যা নামে খ্যাত কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। ১৮ কিমি. (১১ মাইল) দীর্ঘ ও ৩ কিমি. (১ মাইল) প্রশস্ত এই সমুদ্রসৈকত কলাপাড়া শহর থেকে ২২ কিমি. (১৩ মাইল) দূরে অবস্থিত। এর পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে বিশাল সংরক্ষিত বনাঞ্চল এবং দক্ষিণে রয়েছে বঙ্গোপসাগর। কুয়াকাটায় সাগরের পানিতে কক্সবাজারের তুলনায় লবণের পরিমাণ কম। এখানে মাঝে মাঝে সাদা গাঙচিল এবং কখনো পরিযায়ী পাখির দেখা পাওয়া যায়।
সম্প্রতি এখানে বেসরকারি উদ্যোগে একটি সি-ফিশ মিউজিয়াম স্থাপিত হয়েছে। এতে অন্তত ১৩০ প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণি রয়েছে। এর মধ্যে টাইগার হাঙ্গর, অক্টোপাস হাঙ্গর, জেলি ফিশ, বাদুড় মাছ, সজারু মাছ, টুনা মাছ ও সামুদ্রিক কাঁকড়া অন্যতম। কুয়াকাটা অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অনুপম লীলাভূমি। সুবিস্তৃত সৈকত আর বালিয়াড়ির বুকে দাঁড়িয়ে একমাত্র কুয়াকাটা থেকেই সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উভয় উপভোগ করা যায়। মূলত একারণেই প্রতিবছর দেশ-বিদেশের অগণিত পর্যটক আগমন করে থাকেন সাগরকন্যা কুয়াকাটায়।
শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ মন্দির
সমুদ্র সৈকতের কাছে কেরানিপাড়ায় শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ মন্দিরটি অবস্থিত। সরকারের আর্থিক সহায়তায় নির্মিত এ বৌদ্ধ বিহারটি এ উপজেলার রাখাইন সম্প্রদায়ের উপাসনা করার প্রধান প্রতিষ্ঠান। মন্দিরের ভিতরে প্রায় এক মিটার (৩ ফুট) উঁচু বেদীর উপর অষ্টধাতু নির্মিত মাঝারি আকারের একটি ধ্যানমগ্ন বুদ্ধ মূর্তি রয়েছে। জনৈক বৌদ্ধভিক্ষু উপেংইয়া মূর্তিটি স্থাপন করেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। কাঠ ও টিনের তৈরি সুদৃশ্য মন্দিরটির নির্মাণশৈলী ইন্দোচীনের অনুকরণে নির্মিত।
লেম্বুর চর
কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত থেকে ৫ কিমি. পূর্বে অবস্থিত এ চরটি স্থানীয় লোকদের নিকট লেম্বুর চর বা নেম্বুর চর নামে পরিচিত। প্রায় এক হাজার একর আয়তন বিশিষ্ট এ চরে কেওড়া, গরান, কড়ই, গোলপাতাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ দেখতে পাওয়া যায়। সুন্দরবনের অংশ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যবেষ্টিত এ চরটি সকল ধরনের পর্যটকগণের নিকট অতীব আকর্ষণীয় একটি স্পট। চরের পূর্ব প্রান্তে লাল কাঁকড়া দেখতে পাওয়া যায়।
৭২ ফুট দীর্ঘ প্রাচীন নৌকা
কুয়াকাটা সৈকত লাগোয়া বৌদ্ধ মন্দির সংলগ্ন স্থানে ২০১২ সালে সমুদ্রসৈকতে বালির নিচে আবিষ্কৃত একটি বিশালাকার নৌকা টিনসেডের একটি বেষ্টনীর ভেতর স্থাপন করা হয়েছে। প্রাচীন এ নৌকাটির দৈর্ঘ্য ২২ মিটার (৭২ ফুট), প্রস্থ ৬.৭ মিটার (২২ ফুট) ও ওজন প্রায় ৯০ টন। বিশেষভাবে সংরক্ষিত নৌকাটিকে কাঠের বাতা, টিনের পাত ও গাঢ় রং দ্বারা আবৃত করা হয়েছে। এছাড়া নৌকাটির ভেতর প্রাপ্ত বিশাল আকারের লোহার শিকলটি এর পাশেই রয়েছে। রাখাইন মার্কেট, বৌদ্ধ মন্দির এবং প্রাচীন এ নৌকাটির অবস্থান একই স্থানে হওয়ায় দর্শনার্থী ও পর্যটকদের কাছে দিন দিন এর আকর্ষণ বেড়ে চলেছে। নিশ্চিত না হলেও প্রত্নতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের ধারণা, পর্তুগিজ অথবা আরব বণিকরা এ অঞ্চলে তাদের বাণিজ্যের কাজে এ নৌকাটি ব্যবহার করেছিলেন।
ফাতরার চর
সমুদ্র সৈকতের পশ্চিম দিকে গেলে ঘোলাজলের একটি ছোটো নদী ও সাগর মোহনার কাছে পাওয়া যাবে ফাতরার চর নামক প্রায় ৯,৯৭৬ একর আয়তনের এই সংরক্ষিত ম্যানগ্রোভ বন। পর্যটকদের কাছে এটি ‘দ্বিতীয় সুন্দরবন’ হিসেবে পরিচিতি ও খ্যাতি পেতে শুরু করেছে। কেওয়া, গেওয়া, সুন্দরী, বাইন, গড়ান, গোলপাতা প্রভৃতি গরান প্রজাতির উদ্ভিদ এবং হরিণ, বানর, শূকরসহ অসংখ্য জীবজন্তু ও পাখি এ বনাঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়।
গঙ্গামতির চর
গঙ্গামতির চর কুয়াকাটার মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় ১২ কিমি. দক্ষিণে অবস্থিত। মূলত এই স্থানে দাঁড়িয়েই পর্যটকরা সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য অবলোকন করে থাকেন। এই চরে বিভিন্ন জাতের পাখি, বিশালাকৃতির গাছ, বন মোরগ ও বুনো শূকর দেখতে পাওয়া যায়। পাখিপ্রেমীদের কাছে গঙ্গামতি একটি প্রিয় পর্যটন স্থান।
রাখাইন মার্কেট
কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের ঠিক বিপরীত পাশেই রয়েছে বিশাল বড়ো একটি মার্কেট যেখানে রাখাইনদের তৈরি বিভিন্ন পণ্য পাওয়া যায়। এখানকার দোকানগুলো পরিচালিত হয় সাধারণত রাখাইন মহিলা দ্বারা। সন্ধ্যার পর পর্যটকগণ ইচ্ছা করলে রাখাইনদের তৈরি পণ্যগুলো কিনতে পারেন।
ঝাউবন
সমুদ্রসৈকতের তীর ঘেঁষে প্রায় অর্ধশত বছর পূর্বে পরিকল্পিতভাবে দু’শ একর জায়গাজুড়ে একটি নারিকেল বাগান গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে সেখানে ৫০/৬০ বিঘা জমি নিয়ে একটি ঝাউবন গড়ে তোলা হয়েছে। জ্যোৎস্না রাতে এখানে বসে সমুদ্রসৈকতের ভিন্ন রকম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
অতি প্রাচীন কুয়া
সাগরসৈকত সংলগ্ন কেরানীপাড়া এলাকার দক্ষিণাংশে বড়ো আকারের একটি প্রাচীন কুয়া আছে। মনে করা হয় ঐ কুয়া থেকেই কুয়াকাটা নামের উদ্ভব। তৎকালীন বার্মার আরাকান থেকে বিতাড়িত রাখাইন সম্প্রদায় পাবর্ত্য চট্টগ্রাম এবং দক্ষিণাঞ্চলের এখানে বসতি স্থাপন করে। ধারণা করা হয়, সুপেয় পানির জন্য তারা এই কূপ খনন করে।
রাখাইন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী
পটুয়াখালীর কলাপাড়া, খেপুপাড়ায় কয়েকশত বছর আগে বসতি স্থাপনকারী রাখাইন সম্প্রদায়কে এ অঞ্চলে প্রচুর সংখ্যায় দেখা যায়। ১৭৮০ খ্রিষ্টাব্দে বর্মি রাজা বোদোফোয়া কর্তৃক নিজ ভূমি থেকে বিতাড়িত হয়ে রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকজন জীবন ভয়ে নৌকাযোগে বঙ্গোপসাগরের তীরে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় গ্রহণ করে এবং পরবর্তীতে তারা গোত্রভুক্তভাবে কুয়াকাটায় বসবাস করতে শুরু করে। এককালে এ অঞ্চলে রাখাইনদের সংখ্যাধিক্য থাকলেও আজ তারা সংখ্যালঘু। তাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, আচার-আচরণ তারা এখনোও ধরে রেখেছে। রাখাইনদের আতিথেয়তা ও তাদের ঐতিহ্যগত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পর্যটকদের আকৃষ্ট করে।
এছাড়াও দেখতে পারেন— মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ মন্দির, জোড়াকবর মসজিদ, কাছিছিড়া মসজিদ, পুরাতন সেতু, মির্জাগঞ্জ দরবার শরিফ, পর্যটন মোটেল কুয়াকাটা, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, মম্বিপাড়া অনুকূল ঠাকুরের সেবাশ্রম মন্দির, নুরজাহান গার্ডেন, সাপের খামার, শুটকি পল্লী, খেপুপাড়া ও রাসমেলা।
ভ্রমণের প্রস্তুতি:
পরিকল্পনা থাকা সত্ত্বেও ছোট কিছু ভুল আপনার আনন্দময় ভ্রমণকে বিব্রতকর করে তুলতে পারে। তাই ভ্রমণকে আরো উপভোগ্য এবং স্মরণীয় করে তুলতে কিছু প্রস্তুতি অবশ্যই প্রয়োজন। ভ্রমণের প্রস্তুতির জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মাথায় রাখতে পারেন।
লিস্ট তৈরি করা
ভ্রমণের সময় আপনি কী কী করবেন এই পরিকল্পনাগুলো লিখে ফেলুন। এতে করে আপনার ভ্রমণের সময় যথাযথ ব্যবহার করা যাবে। লিস্ট অনুযায়ী ঠিক করুন কোথায় কোথায় যাবেন এবং সেখানে কত সময় অতিবাহিত করবেন।
হালকা লাগেজ
লাগেজ যতটা সম্ভব হালকা রাখার চেষ্টা করুন। অপ্রয়োজনীয় জিনিস এড়িয়ে চলুন। তাহলে আপনি খুব সহজেই ব্যাগ বহন করতে পারবেন। অন্যথায় ভারী ব্যাগ আপনার ভ্রমণকে তিক্ত করে তুলতে পারে।
সঠিকভাবে প্যাকিং
স্যান্ডেল বা জুতা পলিথিন বা কাগজে মুড়িয়ে ব্যাগে নিন এতে কাপড় ও অন্যান্য জিনিস পত্র নোংরা হবে না। এ জাতীয় ছোট ছোট বিষয়ে খেয়াল রাখুন।
স্থানীয় খাবার
ভ্রমণে যতটুকু সম্ভব স্থানীয় খাবার খাবেন এবং সেই খাবারের স্বাদ বুঝতে চেষ্টা করবেন। আপনি যদি ঘুরতে গিয়ে নিয়মিত রেস্টুরেন্টে খাবার খান তাহলে আপনার ঘুরতে যাওয়ার কোনো মানে হয় না। তাই ট্যুরিস্ট রেস্টুরেন্ট এড়িয়ে স্থানীয় লোকজন যেখানে খায় সেখানে খাবার চেষ্টা করুন।
অফ-সিজন ভ্রমণ
ভ্রমণ মৌসুমের বাইরে ভ্রমণ করলে খরচ কমে আসবে। অফ সিজনে সাধারণত পর্যটক কম থাকে। তাই হোটেল থেকে শুরু করে পরিবহন ও খাবার প্রায় সব জায়গাতেই আপনি কম খরচে চলতে পারবেন। তাই অফ সিজনে ভ্রমণ পরিকল্পনা করুন।
যাতায়াতের ব্যবস্থা
ভ্রমণের স্থানের অভ্যন্তরীণ যাতায়াত ব্যবস্থা সম্পর্কে আগে থেকেই জেনে নিন। কারণ এসব ভ্রমণে আমাদের সবচেয়ে বেশি ঠকতে হয় স্থানীয় যানবাহন ভাড়া নিয়ে। ভাড়া সম্পর্কে ধারণা না থাকলে গাড়িচালকরা আপনার থেকে অতিরিক্ত ভাড়া চাইবেন।
অতিরিক্ত টাকা
ভ্রমণে সবসময় আপনার বাজেটের বাইরে কিছু টাকা সাথে রাখুন। যেকোনো সময় যেকোনো বিপদে এই অতিরিক্ত টাকা আপনাকে হেল্প করবে। আপনি চাইলে মোবাইল ব্যাংকিং বা ডেবিট ক্রেডিট কারডের মাধ্যমে কিছু অতিরিক্ত টাকা সাথে রাখতে পারেন।
ছোট ব্যাগ
ভ্রমণে মোবাইল, মানিব্যাগ ও ছোট ছোট দরকারি জিনিসপত্র রাখার জন্য ছোট একটি ব্যাগ সঙ্গে রাখুন। কিছু ব্যাগ পাওয়া যায় যেটি কোমরে রাখা যায়।
চার্জার
মোবাইল ও ল্যাপটপের চার্জার নিতে ভুলবেন না। পাওয়ার ব্যাংক হলে সবচেয়ে ভালো হয়। রুমের বাইরে যাবার সময় পাওয়ার ব্যাংকটি সঙ্গে নিতে পারেন। ছবি তোলার ক্ষেত্রে মোবাইলের চার্জ অনেক বেশি খরচ হয়। তাই পাওয়ার ব্যাংক সঙ্গে রাখা নিরাপদ।
ইয়ারফোন
ভ্রমণের সময় কাটানোর জন্য ইয়ারফোন বা এমপিথ্রি প্লেয়ার সঙ্গে নিতে পারেন। ছোট মাপের কোনো স্পিকার সঙ্গে নিতে পারেন। এতে করে গ্রুপের সবাই একসঙ্গে গান শুনতে পারবেন এবং একটি ভালো আড্ডা জমে উঠবে।
ঢাকা থেকে যেভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে পটুয়াখালী যাওয়ার জন্য আপনি সড়কপথ ও নৌপথ—এই দুটি প্রধান মাধ্যম ব্যবহার করতে পারেন।
বাস: ঢাকা থেকে পটুয়াখালী পর্যন্ত সরাসরি বাস সার্ভিস রয়েছে। জনপ্রিয় বাস সার্ভিসসমূহ হলো— সাকুরা পরিবহন (সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে ছাড়ে এবং ভাড়া ৪৫০ থেকে ৭০০ টাকা); গ্রিন লাইন পরিবহন (গাবতলী ও সায়েদাবাদ থেকে ছাড়ে এবং
ভাড়া ৬৫০ থেকে ১৪০০ টাকা)। ঢাকা থেকে পটুয়াখালী পৌঁছাতে ৫ থেকে ৭ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
লঞ্চ: ঢাকা থেকে পটুয়াখালী পর্যন্ত সরাসরি লঞ্চ সার্ভিস রয়েছে, যা বিশেষ করে রাতের যাত্রার জন্য জনপ্রিয়।
লঞ্চের সময়সূচী: ছাড়ার সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা, সাড়ে ৬টা ও ৭টা। ভাড়া: ডেক ১০০-১৫০ টাকা এবং কেবিন ১০০০ টাকা পর্যন্ত। লঞ্চে পটুয়াখালী পৌঁছাতে প্রায় ৮ ঘণ্টা সময় লাগে। তবে নদীর অবস্থা ও লঞ্চের গতির উপর সময় কমবেশি হতে পারে।
যেখানে থাকবেন:
সিকদার রিসোর্ট এন্ড ভিলা
ঠিকানা: ইকো পার্কের বিপরীত পাশে, কুয়াকাটা
মোবাইল: ০১৮৭০-৭০৪০২৫
কুয়াকাটা গ্র্যান্ড হোটেল এন্ড সি রিসোর্ট
ঠিকানা: পূর্ব বেড়িবাঁধ রোড, কুয়াকাটা
মোবাইল: ০১৭০৯৬৪৬৩৭০-৭১
হোটেল গ্রেভার ইন
ঠিকানা: রাখাইন মহিলা মার্কেট এর পূর্ব পাশে, কুয়াকাটা
মোবাইল: ০১৮৩৩৩১৮৩৮০
হোটেল খান প্যালেস
ঠিকানা: বাড়ি- ২২৩, ওয়ার্ড- ০৩, কুয়াকাটা
মোবাইল: ০১৭০৭০৮০৮৪৬
স্বপ্নরাজ্য পার্ক এন্ড রিসোর্ট
ঠিকানা: পশ্চিম মেরিন ড্রাইভ রোড, কুয়াকাটা
মোবাইল: ০১৯৭১৮৪১৬০১
হোটেল কুয়াকাটা ইন ইন্টা. লি
ঠিকানা: কুয়াকাটা পর্যটন এলাকা, কুয়াকাটা
মোবাইল: ০১৭৫০০০৮১৭৯
সমুদ্র বাড়ি রিসোর্ট
ঠিকানা: শিকদার মার্কেট এর পাশে, কুয়াকাটা
মোবাইল: ০১৭৫৮৬৬৬৯৯৫
সাগর কন্যা রিসোর্ট
ঠিকানা: পশ্চিম ভেরিবাধ রোড, কুয়াকাটা
মোবাইল: ০১৭১১১৮১৭৯৮
ঐতিহ্যবাহী খাবার:
পটুয়াখালী জেলার ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে ইলিশ মাছের নানা পদ বিশেষভাবে জনপ্রিয়, যেমন সরষে ইলিশ, ভাপা ইলিশ, দই ইলিশ ও ইলিশ ভুনা। সাগর ও নদীমাতৃক অঞ্চল হওয়ায় এখানকার মানুষের খাদ্যতালিকায় বিভিন্ন প্রকার সামুদ্রিক মাছ যেমন রূপচাঁদা, লইট্টা, চিংড়ি, কাঁকড়া ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। গ্রামীণ স্বাদের খাবারের মধ্যে শুঁটকি ভুনা, কলার মোচা ভর্তা, দেশি মুরগির ঝোল, নারিকেল দুধে রান্না করা কচু বা মাছের পদ এবং পাট শাক দিয়ে রান্না করা চিংড়ি মাছ উল্লেখযোগ্য। পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে তৈরি পিঠাপুলি যেমন পাটিসাপটা, ভাপা পিঠা ও চিতই পিঠাও এই জেলার ঐতিহ্যবাহী খাবারের অংশ হিসেবে পরিচিত।
সতর্কতা:
ইট-পাথরের শহরের কোলাহল থেকে মুক্তি পেতে ভ্রমণের জন্য আকুল থাকে মন। তবে একটু সতর্কতা অবলম্বন করলে ভ্রমণ হয়ে উঠবে আরো আনন্দময়। ভ্রমণে যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে—
পরিকল্পিত ভ্রমণ
পরিকল্পিতভাবে ভ্রমণ করলে যাত্রা আরামদায়ক ও নিরাপদ হয়। যদি বাস বা ট্রেনের টিকিট বুকিং করার সুযোগ থাকে, তাহলে মাঝামাঝি আসন নিন। রাতের বেলায় ভ্রমণের ক্ষেত্রে জানালার পাশে বা বাসের খুব পেছনের আসন এড়িয়ে চলাই ভালো।
নির্ভরযোগ্য যানবাহন ব্যবহার
নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য নির্ভরযোগ্য বাস বা যানবাহন বেছে নিন। সরকারি বা স্বীকৃত পরিবহন সংস্থার যানবাহন ব্যবহার করুন। বাস বা গাড়ির রুট ও সময়সূচি সম্পর্কে আগেই জেনে নিন। অ্যাপ-ভিত্তিক রাইড শেয়ারিং পরিষেবা (যেমন উবার, পাঠাও) ব্যবহার করলে গাড়ির তথ্য যাচাই করুন।
ভিড় এড়িয়ে চলুন
খুব বেশি ভিড় থাকলে বা সন্দেহজনক পরিস্থিতি দেখলে সেই যানবাহনে না ওঠাই ভালো। গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র যেমন মানিব্যাগ, ফোন বা ব্যাগ নিজের কাছেই রাখুন।
জরুরি নম্বর সংরক্ষণ করুন
স্থানীয় পুলিশ, বাস সার্ভিস হেল্পলাইন ও পরিচিতজনের নম্বর সহজেই পাওয়া যায় এমন জায়গায় রাখুন। বিপদের সময় ৯৯৯ (বাংলাদেশের জরুরি সেবা) তে কল করুন।
যাত্রাপথে অপরিচিত ব্যক্তির দেওয়া কিছু খাবেন না
যাত্রাকালে অনেক যাত্রী পার্শ্ববর্তী যাত্রীকে ভদ্রতার খাতিরে বা বন্ধুসুলভভাবে খাদ্য-পানীয় গ্রহণে অনুরোধ করেন। এ ধরণের পরিস্থিতিতে ঝুঁকি এড়াতে অপরিচিত ব্যক্তির দেয়া কিছু না খাওয়া নিরাপদ।
মোবাইল ফোন নিরাপদে রাখুন
অনেকেই বাসে বা গণপরিবহনে যাত্রাকালে মোবাইল ফোন বের করে সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রলিং করেন। এ ধরনের অভ্যাস ছিনতাইয়ের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে জানালার পাশে বসলে খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মোবাইল ফোন বের না করে নিরাপদ। সম্ভব হলে, যাত্রা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফোন বের না করে, নিরাপদে পকেটে বা ব্যাগে রাখুন।