পর্যটন বিচিত্রা ডেস্ক
কাঠমান্ডু
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু এখানকার সব থেকে বড় শহর। কাঠমান্ডুর ইতিহাস প্রায় দুশো বছর পুরনো। ‘খুকরি’ ছুরির আকারের এই শহর নেপালের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। প্রাণবন্ত এই শহরের অভিনব আতিথেয়তা আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
কী দেখবেন
ঘুরে দেখার মতো প্রচুর জায়গা রয়েছে নেপালে। ভালোভাবে দেখতে হলে সময় লাগবে। উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানের তথ্য ও বিবরণ দেয়া হলো।
হনুমান ধোকা (দরবার স্কয়ার)
এটি কাঠমান্ডু শহরের সামাজিক ও ধার্মিক কেন্দ্র। ১২শ থেকে ১৮শ শতাব্দীর মধ্যে তৈরি মহল ও মন্দির দেখতে পাবেন এখানে। তলেজু টেম্পল, তাল ভৈরব, নওতলে দরবার, করোনোশন চক, রাজা প্রতাপ মল্লর মূর্তি, বিগ বেল ও বিগ ড্রাম এখানকার কিছু দর্শনীয় স্থান। কাঠমান্ডু থেকে ৭ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত ৩৬ মিটার উঁচু।
বৌদ্ধনাথ স্তুপা
বৌদ্ধনাথ স্তুপা শিল্পের ব্যতিক্রম নিদর্শন। এখানে প্রায় ৪৫টি মনাস্ট্রি আছে।
বালাজু ওয়াটার গার্ডেন
নাগার্জুন হিলসের তলায় অবস্থিত এই বাগানে দেখতে পাবেন সি ড্রাগনের আকারে খচিত ২২টি স্টোন ওয়াটারস্প্রাউটস। পাশাপাশি ফিসপন্ড, বুধানীলকণ্ঠর মূর্তি এবং সমাধি এখানকার বাড়তি আকর্ষণ।
পশুপতিনাথ মন্দির
ভগবান শিবের সব থেকে পবিত্র মন্দির হিসেবে গণ্য পশুপতিনাথ মন্দির কাঠমান্ডুর গর্ব। ৪০০ খ্রিস্টাব্দে তৈরি এই মন্দিরের আধুনিক এবং সনাতন স্থাপত্যশিল্প নিঃসন্দেহে আপনাকে অবাক করবে। এই মন্দির নেপালের বিশ^াস, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের প্রতীক।
বুধানীলকণ্ঠ
একটি ছোট পুকুরের মধ্যে ভাসমান এই মূর্তি লিচ্ছবি সভ্যতা ভাস্কর্যের অদ্ভুত নিদর্শন। কালো পাথরে খোদাই করা এই বিশাল বিষ্ণুমূর্তি দুর্লভ এবং অত্যন্ত মূল্যবান।
পোখরা
পোখরাকে বলা হয় ‘সিটি অব অ্যাডভেঞ্চারাস’। কাঠমান্ডুর ২০০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত পোখরায় দেখতে পাবেন অন্যন্য লেক এবং উঁচু পর্বতমালা। শহরের কোলাহল থেকে দূরে যারা লেক সাইডে রিল্যাক্স করতে চান বা পাহাড়ে ট্র্যাকিংয়ের স্বাদ নিতে চান, পোখরায় চলে আসুন। লেক অঞ্চলেই পোখরার বেশির ভাগ হোটেল ও রেস্তোরাঁ খুঁজে পাবেন। আপনি বোটিংও করতে পারেন। পোখরায় দেখে নিন লেকের মধ্যে বারহী টেম্পল, ছোট পাহাড়ের ওপর ডেভিড ফলস। কাঠমান্ডু থেকে প্লেনে অথবা বাসে যেতে পারেন পোখরাতে।
চেকলিস্ট
নেপাল কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স, জিএমজি এয়ারওয়েজ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে সরাসরি পৌঁছে যাওয়া যায় কাঠমান্ডুতে। সময় লাগবে এক ঘণ্টা। কাঠমান্ডু ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে আপনি এয়ারে, ট্যাক্সি বা এসি বাসে পোখরা চলে যেতে পারেন। বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিনই এসব বিমান ছেড়ে যাচ্ছে।
জেনে নিন
বাংলাদেশে নেপাল দূতাবাস
ইউনাইটেড নেশন, রোড-২, বারিধারা
গুলশান, ঢাকা-১২১২।
টেলিফোন + ৮৮-০২-২২২২৯২৫৬৮, ২২২২৯২৪৯০
ইমেইল: [email protected], [email protected]
ওয়েব: bd.nepalembassy.gov.np
অফিস সময় সূচি: রোববার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নেপাল দূতাবাস খোলা থাকে। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি।
নেপালে বাংলাদেশ দূতাবাস
বসুন্ধরা, ওয়ার্ড নং-৩, চক্রপাত,
কাঠমান্ডু, নেপাল।
টলিফোন: +৯৭৭-১-৪৯৭০-১৩০/৪৯৭০-১৩১ (পিএবিএক্স)।
ইমেইল: [email protected]
কোথায় থাকবেন
আন্তর্জাতিক মানের হোটেল থেকে শুরু করে কমফোর্টেবল লজ এবং গেস্ট হাউজ পেয়ে যাবেন কাঠমান্ডুতে। থামেলকে কাঠমান্ডুর হোটেল কোয়ার্টার বলা যেতে পারে।
খাওয়া-দাওয়া
ট্র্যাডিশনাল নেপালিজ ফেস্টিভাল ক্যুইজিন, ইতালিয়ান, ভারতীয়, চাইনিজ ও থাই খাবার খেতে পারেন। তবে অবশ্যই ট্রাই করবেন নেওয়ারি ক্যুইজিন।
কেনাকাট
শপিংয়ের জন্য কাঠমান্ডু একেবারে আদর্শ জায়গা। ট্র্যাডিশনাল স্যুভেনির থেকে কন্টেম্পোরারি হ্যান্ডিক্রাফটস সব পেয়ে যাবেন কাঠমান্ডুতে। খুকরি ছুরি, বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র, গ্লাস বিডস, মৈথিলী পেন্টিং, সেন্টেড ক্যান্ডেলস এখানকার বিশেষত্ব।
কখন যাবেন
নেপালে যাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হলো মার্চ-এপ্রিল অথবা অক্টোবর-নভেম্বর। এ সময় অল্প গরম থাকে এবং ভালোভাবে পাহাড় উপভোগ করা যায়।
নেপালে প্যাকেজ ট্যুর
নেপালে বেড়ানোর জন্য রয়েছে দুই ধরনের প্যাকেজ ট্যুর। সড়কপথে ভারতের দার্জিলিংসহ নেপাল, আবার আকাশপথে নেপাল। ঢাকা থেকে নেপালের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে প্যাকেজ ট্যুর পরিচালনা করছে অনেক ট্যুর অপারেটর। যাদের মধ্যে রয়েছে- রিভার অ্যান্ড গ্রিন ট্যুরস, ফোন-৮৮২৬৭৫৯, ৮৮২৭৮৭৯, মাউন্টেন ক্লাব ট্যুরস, প্রাইম ট্যুরিজম, ড্রিম হলিডেজ।