পর্যটন বিচিত্রা প্রতিবেদন
রংপুর শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়ন। এর খুব কাছাকাছি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পৌরসভা। সেখান থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে মীরগঞ্জ-চেতন্য-ইমামগঞ্জ বাজার হয়ে সোজা উত্তর দিকে গাইবান্ধা, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার মিলনস্থানে দাঁড়িয়ে আছে এক নৈসর্গিক প্রাকৃতিক পরিবেশে ‘আলী বাবা থিম পার্ক’।
তিস্তা নদীর পাড়ে গড়ে তোলা এই বিনোদন কেন্দ্র এখন ছোট-বড় নানা বয়সী মানুষের বিনোদনের খোরাক। আবহমান বাংলার অতীত ঐতিহ্য এবং গ্রামীণ সংস্কৃতির সঙ্গে ‘আলী বাবা ও চল্লিশ চোর’ গল্পের আদলে সাজানো এখানকার স্থাপনা।
তিস্তা নদীর তীরবর্তী আলী বাবা থিম পার্কটি এখন শুধু বিনোদন কেন্দ্রই নয়, এটি সেখানকার চরবাসীকে স্বাবলম্বী করে তোলার স্বপ্নদুয়ার। এই বিনোদন কেন্দ্রের কোলঘেঁষে রয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র। বেসরকারি এই সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রকে ঘিরেও প্রকৃতিপ্রেমীদের ভিড় বেড়েছে নদীর তীরে।
তিস্তা নদীর তীরে ধু-ধু বালুচরে ৩০ একর জমির ওপর চমৎকার এক নৈসর্গিক প্রাকৃতিক পরিবেশে নির্মিত হয়েছে আলীবাবা থিম পার্কটি। এর পাশেই চরের ৭০০ একর জমির ওপর বেক্সিমকোর অঙ্গপ্রতিষ্ঠান তিস্তা সোলার লিমিটেডের সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্রটি।
আলীবাবা থিম পার্কের প্রবেশপথ পার হতেই নজর কাড়বে মহান আল্লাহ তায়ালার ৯৯ নাম খচিত নির্মাণাধীন ২০ মিটার উঁচু ভাস্কর্য। আরব্য উপন্যাসের সেই জাদু শব্দ ‘চিচিং ফাঁক’ বলে দরজা খুলে মণিমাণিক্য না মিললেও এই পার্কের দেয়াল থেকে সহজেই চোখের পলক ফেলা সম্ভব নয়, কারণ দেয়ালে চোখে পড়বে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম, জেরুজালেমের পবিত্র মসজিদ আল-আকসা, পবিত্র কাবা-শরিফ, মা ফাতেমা (রা.)-এর বাড়ি, জর্ডানের মরুভূমির সেই সাহাবি ও খেঁজুর গাছসহ খোদাই করা বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শনের চিত্র।
দর্শনার্থীদের বসার জন্য রয়েছে সিমেন্ট দিয়ে গাছের আদলে তৈরি করা বসার চেয়ার, রয়েছে বেঞ্চ। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগিয়ে পরিপাটি করে সাজানো হয়েছে নয়নাভিরাম রাস্তা। সমুদ্রের বড় মাছের খাদ্যসংস্থান কীভাবে হয় ও আগ্নেগিরির গলিত লাভা এবং বড় বড় সাপ কীভাবে মানুষকে দংশন করতে পারে, তাও দেখা যাবে। হাঁটতে হাঁটতে পার্কের উত্তরে গেলে নজরে পড়বে নির্মাণাধীন পাহাড়, পানির ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা ও পানির ঢেউ। রয়েছে পিকনিক স্পট ও রিসোর্ট সেন্টার।