রাজশাহী অঞ্চলের সর্বপ্রাচীন ইমারতরূপে বিবেচিত বড়কুঠি রাজশাহী শহরের সাহেব বাজারে অবস্থিত। দোতলা এই ইমারতের সঠিক নির্মাণকাল জানা না গেলেও এটি ডাচ অর্থাৎ ওলন্দাজদের তৈরি বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।
বিভিন্ন সূত্রের বিচারে এর নির্মাণকাল অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে বলে ধারণা করা হয়। ভবনটি প্রথমে ডাচদের ব্যবসাকেন্দ্র ছিল, বিশেষত রেশমের গুদামঘর হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমদিকে ডাচরা ভারতবর্ষে তাদের কর্মকাণ্ড গুটিয়ে নেওয়ার পর একটি চুক্তির মাধ্যমে ১৮১৪ সালে এটি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে হস্তান্তর করে।
ইংরেজরা ১৮৩৩ সাল পর্যন্ত বড়কুঠি তাদের বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে। ১৮৫৭সালে সিপাহি বিদ্রোহের সময় এই ভবনটি ইংরেজ বাহিনীর সদর দপ্তররূপে ব্যবহৃত হয়। পরবর্তীতে ১৯৫৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর প্রথম প্রশাসনিক ভবন হিসেবেও এই বড়কুঠি ব্যবহার করা হয়।
‘বড়কুঠি’ ১২ কামরাবিশিষ্ট একটি দ্বিতল ইমারত। ইমারতটির দৈর্ঘ্য ২৫ মিটার (৮২ ফুট) ও প্রস্থ ২১ মিটার (৬৭ ফুট)। একটি সভা কক্ষসহ উপরে ৬টি কামরা আছে। এর দরজা ও জানালাগুলো অধিকাংশই সুপ্রশস্ত ও প্রায় একই মাপের। এ কুঠির দেয়ালগুলো অত্যন্ত পুরু এবং নিচ তলার কক্ষগুলো অস্বাভাবিক রকমের অন্ধকার। এ থেকে স্পষ্টতই বোঝা যায় যে, এগুলো রেশম সংরক্ষণের গুদামঘর হিসেবে ব্যবহৃত হতো। নিচের কামরাগুলো বর্তমানে বহু কামরায় বিভক্ত করা হয়েছে। ওপরে উঠার জন্য পশ্চিম পাশে একটি প্রশস্ত সিঁড়ি রয়েছে।