আজকাল শিরনি উৎসব সচরাচর আর চোখে পড়ে না। তবে শিরনি উৎসবের ঐতিহ্য রয়েছে দীর্ঘদিনের। আর এই উৎসব ধারণ করে রেখেছেন নাটোর সদর উপজেলার ভাতুরিয়া গ্রামবাসী। তারা বছরে দুইবার এই উৎসবের আয়োজন করে থাকেন।
শীতকালে ঝাল পিঠা আর আষাঢ় মাসে মিষ্টি শিরনির আয়োজন করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী গাঁওয়ালী শিরনি উৎসব পালন করেছেন ভাতুরিয়া গ্রামবাসী। সোমবার (০৬ জানুয়ারি) দিনব্যাপী এ গ্রামের ২৬টি সমাজের ৪৬০টি পরিবার মিলে এই গাঁওয়ালী শিরনি উৎসবের আয়োজন করেন।
প্রতিটি বাড়ি থেকে নগদ ২০০ টাকা ও ৫০০ গ্রাম চাল সংগ্রহ করে সোমবার ভোর থেকে সকলের সম্মিলিত আয়োজনে রান্না-বান্না শুরু করা হয়। দুপুর হতে না হতেই শুরু হয় একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া। এতে দূর-দূরান্ত থেকে ওই গ্রামের জামাই-মেয়ে-নাতি-নাতনীসহ স্বজনসহ প্রায় দুই হাজার মানুষ এই শিরনি উৎসবে অংশগ্রহণ করেন।
একসঙ্গে রান্না, খাওয়া-দাওয়া আর উচ্ছাস-আনন্দে ধনী-গরিব এবং রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ মিলে পালন করলেন তাদের পূর্ব-পুরুষের রেখে যাওয়া গাঁওয়ালী শিরনি উৎসব। পাশাপাশি বসানো হয় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প। সেখানে বিনা পয়সায় গ্রামের দরিদ্র মানুষরা চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেন।
এ প্রসঙ্গে ভাতুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. সেলিম উদ্দিন জানান, এই গ্রামে ২৬টি সমাজ রয়েছে। প্রতিটি সমাজের একই দিনে এই শিরনির জন্য ভাগপ্রতি নগদ ২শ টাকা এবং ৫শ গ্রাম চাল সংগ্রহ করে তা দিয়ে উৎসবে অংশ নেন গ্রামবাসী। পরিবারের সদস্য ও আগত আত্মীয়দের সংখ্যা ভেদে ৮ থেকে ১০টি পর্যন্ত ভাগ দেন পরিবার প্রধান। সমাজের সব টাকা ও চাল উত্তোলন শেষে একই দিনে আয়োজন করা হয় এই গাঁওয়ালী শিরনি উৎসব।