ব্যাগ প্যাকিং: সঙ্গে কী নেবেন তা নির্ভর করবে আপনি কোথায় বেড়াতে যাচ্ছেন, কতদিন থাকবেন তার ওপর। যেমন পাহাড়ে বেড়াতে গেলে অবশ্যই ব্যাগের ওজন যত কম রাখা সম্ভব তার দিকে মন দিতে হবে। তবে যেখানেই যান না কেন ব্যাগ ভর্তি জিনিস না নিয়ে দেখেশুনে দরকারি জিনিস নেয়াই উত্তম। একটা ভারী ব্যাগপ্যাক আপনার ভ্রমণ আনন্দ মাটি করে দিতে পারে। তাই ব্যাগ গোছানোর সময় ভেবে দেখুন আপনার একান্ত কি কি জামাকাপড় লাগতে পারে? সেগুলোর বাইরে সর্বাধিক একটি কিংবা দুটি জামা বেশি নিতে পারেন। টুথপেস্ট, ব্রাশ, আন্ডারওয়ার, গামছা বা তোয়ালে, ক্যাপ, জুতা, বেল্ট ইত্যাদি ছাড়াও অনুসাঙ্গিক আর কি কি প্রয়োজন হতে পারে তার একটা লিস্ট করুন। লিস্ট ধরে ঠিক চিহ্ন দিয়ে একটা একটা জিনিস ব্যাগে ঢুকান, এতে করে দরকারি কোনো কিছু ভুলে ফেলে যাবেন না। তবে যাই লাগেজে ঢোকান না কেন একটা জিনিশ মনে রাখবেন, এই লাগেজ কিন্তু আপনাকেই বহন করতে হবে। প্রয়োজনীয় জামাকাপড়, জুতা, কসমেটিকস আলাদা করে প্যাক করুন, যাতে জিনিসপত্র এলোমেলো হবে না।
ভ্রমণে পোশাক ও প্রসাধন: ভ্রমণের সময় পোশাক ও প্রসাধনের বাহুল্য পরিহার করা উচিত। শীতকালে ভ্রমণে গরম কাপড় সঙ্গে নিন। লোশন, সানস্ক্রিন, পারফিউম চেক-ইন লাগেজে রাখুন। সানগ্লাস-টুপি ভ্রমণ সহায়ক। সঙ্গে রাখুন কয়েকটি প্লাস্টিকের ব্যাগ। ভেজা কাপড় সংরক্ষণ করতে সহায়ক হবে। সুই-সুতা রাখুন। সমতল শহরে হেঁটে বেড়ানোর জন্য এক জোড়া স্পঞ্জ আপনাকে দারুণ আরাম দেবে। তবে পাহাড়ি এবং পাথুরে অঞ্চলের জন্য কেডস বেশি আরামদায়ক।
শীতকালে গাঢ় রঙের মোটা তাপনিরোধক কাপড়ের তৈরি জামা পরিধান করুন। তবে খেয়াল রাখবেন শীতের কাপড়ের ওজন যত সম্ভব যেন কম হয়। তা না হলে আপনার ব্যাকপ্যাক ভারী হবে শীতের পোশাকে। ঠাÐা থেকে বাঁচার জন্য সঙ্গে করে মাফলার, মোজা, গøাভস, হুডসহ কাপড় পরিধান করতে পারেন। জামার রং অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা আমরা ভ্রমণে বের হওয়ার সময় লক্ষ্য রাখা উচিত। উজ্জ্বল রঙের কাপড়ে ছবি সুন্দর হয়। তবে পাহাড় বা বনাঞ্চলে ভ্রমণের সময় অবশ্যই উজ্জ্বল কোনো রঙের জামা পরিধান করা উচিত নয়। প্রচুর হাঁটতে হবে এমন ট্যুরে সাদা রঙের জামাই শ্রেয়।
ভ্রমণে দরকারি ওষুধ: শীতে সর্দি-জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি, নাকের প্রদাহ, চোখ ওঠা, ডায়রিয়া, আমাশয়, নিউমোনিয়া প্রভৃতি রোগ হয়ে থাকে। সম্ভব হলে প্রয়োজন মতো সঙ্গে ওষুধ রাখুন। জ্বর, পেট খারাপ, অ্যাসিডিটি, বমি, মাথা ধরার ওষুধ নিয়ে নিন। আরও নিন ব্যান্ড এইড, অ্যান্টিসেপটিক, পরিমাণ মতো তুলা ও গজ। এগুলো সঙ্গে থাকলে অনেক বড় বিপদ থেকেও রক্ষা পাওয়া সম্ভব। সঙ্গে নেয়া এসব ওষুধপত্রের একটি তালিকা আগেভাগেই তৈরি করে রাখতে পারেন। প্রেশার, ডায়াবেটিস বা অন্য কোনো সমস্যা থাকলে প্রেসক্রিপশনের প্রয়োজনীয় ওষুধ পর্যাপ্ত পরিমাণে নিয়ে নিন। এই শীতে ভ্রমণের সময় ত্বক ও হাত-পা, চুলের বিশেষ যত্ন নেয়া প্রয়োজন। সানপ্রোটেক্ট লোশন ও ক্রিম সূর্যের আলোতে বের হওয়ার আধা ঘণ্টা আগে ব্যবহার করুন। ভ্রমণে যদি প্রচÐ গরম অনুভব হয় তবে প্রচুর পরিমাণ পরিষ্কার বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। বাচ্চাদের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।
দরকারি ডিভাইস: ভ্রমণে মোবাইল, ল্যাপটপ, ক্যামেরা সঙ্গে থাকে। সেগুলো রিচার্জ করার জন্য সঠিক অ্যাডাপটর সঙ্গে নিয়েছেন তো? দেশভেদে ইলেকট্রিক প্লাগ, সকেট, ভোল্টেজ ভিন্ন ভিন্ন হয়। ভ্রমণ একটি দীর্ঘ চলমান প্রক্রিয়া। ভ্রামণিকেরা বারবার দেশান্তরি হবেন। তাই বিভিন্ন দেশ-মহাদেশের অ্যাডাপটর সংগ্রহ করার চেষ্টা করুন আর আজীবন তা সংগ্রহে রাখুন।