পর্যটন বিচিত্রা ডেস্ক
মৌলভীবাজার জেলায় রয়েছে অনেক পর্যটক আকর্ষণীয় ভ্রমণ স্থান ও ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। পর্যটন শিল্পের জন্য এই জেলার বাংলাদেশের সভ্যতা, ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতিতে অবদান অনেক। দৃষ্টিনন্দন চা-বাগান, আদিবাসীদের সংস্কৃতি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আপন মহিমায় এই জেলা অন্য জায়গা থেকে আলাদ। মৌলভীবাজারে সারা বছর পর্যটকদের যাতায়াত থাকলেও শীত মৌসুমে তা বেড়ে যায়। এ সময় পর্যটকদের পদচারণায় পূর্ণতা পায় জেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলো। তাই ভ্রমণপিপাসু মানুষ সুযোগ পেলেই ছুটে আসেন এই জেলায়।
মৌলভীবাজারের উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে, বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ, হযরত শাহ মোস্তফার (র:) মাজার শরিফ, পৃথিমপাশা নবাববাড়ী, মনু ব্যারেজ, মাধবপুর চা-বাগান লেক, কমলা/লেবু/আনারস বাগান, পাহাড়, টিলা, হাওড় ও বিলের সমাহার।
মাধবকুণ্ড- জলপ্রপাত
মাধবকুণ্ড- জলপ্রপাত মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের সুউচ্চ জলপ্রপাত হিসেবে পরিচিত। অনিন্দ্য সুন্দর এই জলপ্রপাত প্রায় ১৬২ ফুট উঁচু। এটি দেখতে প্রতিদিন অনেক পর্যটকের সমাগম ঘটে এখানে। এই ছড়া মাধবকুণ্ড- জলপ্রপাত হয়ে নিচে পড়ে হয়েছে মাধবছড়া। সাধারণত একটি মূলধারায় পানি সব সময়ই পড়তে থাকে, বর্ষা এলে মূলধারার পাশেই আরেকটা ছোট ধারা তৈরি হয় এবং ভরা বর্ষায় দুটো ধারাই মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় পানির তীব্র তোড়ে। জলের এই বিপুল ধারা পড়তে পড়তে নিচে সৃষ্টি হয়েছে বিরাট মাধমকুণ্ড। এই মাধবছড়ার পানি পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হতে হতে গিয়ে মিশেছে হাকালুকি হাওড়ে। জলপ্রপাতের পাশেই রয়েছে শিবমন্দির।
সরকারি উদ্যোগে এখানে গড়ে তোলা হয়েছে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের রেস্ট হাউস ও রেস্টুরেন্ট। ২৬৭ একর এলাকাকে নিয়ে ২০০১ সালে মাধবকুণ্ড- ইকোপার্ক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। মাধবকুণ্ড- ইকোপার্কেও মেইন গেট থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার পথ হেঁটে গেলে মাধবকুণ্ড- ঝরনার দেখা মিলবে।
মাধবকুণ্ড ইকোপার্ক ঘুরে দেখতে বেশ উপভোগ্য। এখানে আছে শ্রী শ্রী মাধবেশ্বরের তীর্থস্থান, চা-বাগান, খাসিয়া পল্লী, কমলা, লেবু, সুপারি ও পানের বাগান। কোথাও কোথাও জুম চাষের দেখাও মিলবে।
পরিকুণ্ড- জলপ্রপাত
মাধবকুণ্ড- ঝরনা থেকে কিছুটা দূরত্বে রয়েছে পরিকু- ঝরনা। ঝিরি ধরে ১০-১৫ মিনিট হেঁটে গেলেই সেই ঝরনার কাছে যাওয়া যায়। গভীর বন ও প্রচার না থাকায় ১৫০ ফুট উঁচু পাহাড় হতে নেমে আসা পানির ধারা দেখতে খুব বেশি পর্যটকের চলাচল নেই। এই ঝরনাটি সবার কাছে খুব বেশি পরিচিত না হলেও এর বুনো সৌন্দর্যের কোনো কমতি নেই।
যাওয়ার সময়
ভ্রমণের জন্যে শীতকাল উপযুক্ত সময় হলেও ঝরনাতে শীতকালে পানি কম থাকে। সেই দিক বিবেচনায় বর্ষা বা তার আশপাশের সময়ে গেলে তখন অনেক পানি থাকবে।
যাওয়ার উপায়
ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকা-বিয়ানীবাজার রুটের অনেক ভালো মানের চেয়ারকোচ বাস আছে। এর মধ্যে আছে রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস, শ্যামলী। এছাড়া এনা পরিবহনের বাসও আছে। সরাসরি বাসে গেলে বড়লেখার একটু আগে কাঁঠালতলী বাজারে নামবেন। এখান থেকে মাধবকুণ্ড- বেশি দূরে নয়। তবে আপনাকে মাধবকুণ্ড- চূড়ার কাছে যেতে হলে এখান থেকে অবশ্যই সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা রিকশা নিতে হবে।
এছাড়া আপনি চাইলে কমলাপুর থেকে ট্রেনেও যেতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আপনাকে ঢাকা-সিলেটের আন্তনগর ট্রেনে উঠতে হবে এবং কুলাউড়া স্টেশনে নামতে হবে। ট্রেনগুলোর মধ্যে আছে জয়ন্তিকা, পারাবত, উপবন। কুলাউড়া থেকে মাধবকু-ের দূরত্ব প্রায় ৩৫ কিলোমিটার। আপনি এখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা রিজার্ভ করে সরাসরি মাধবকু-ে যেতে পারেন।
মৌলভীবাজার থেকে মাধবকুণ্ড-: মৌলভীবাজার শহর থেকে মাধবকু- দুইভাবে যেতে পারেন। সিএনজি/জিপ/মাইক্রোবাস রিজার্ভ করে নিতে পারেন অথবা বড়লেখাগামী কোনো লোকাল বাসে উঠে কুলাউড়া পার হয়ে বড়লেখার আগেই কাঁঠালতলী বাজাওে নেমে যাবেন। সেখান থেকে রিজার্ভ/লোকাল সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যেতে পারবেন মাধবক-।
সিলেট থেকে মাধবকুণ্ড-: সিলেট থেকে মাধবকণ্ড- যেতে চাইলে কদমতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে বড়লেখা হয়ে যে বাস কুলাউড়া যায় সেই বাসে উঠতে পারে অথবা বড়লেখা যেতে পারেন। বড়লেখা থেকে রিজার্ভ সিএনজিচালিত অটো দিয়ে মাধবকুণ্ড- যেতে পারবেন অথবা বড়লেখা থেকে লোকাল অটো দিয়ে কাঠালতলী বাজার গিয়ে সেখানে থেকে রিজার্ভ/লোকাল অটোতে মাধবকু- যেতে পারেন।
শ্রীমঙ্গল থেকে মাধবকণ্ড-: শ্রীমঙ্গল থেকে মাধবকুণ্ড- যেতে চাইলে সরাসরি সিএনজিচালিত অটো/জিপ রিজার্ভ করে যেতে পারেন। অথবা বড়লেখাগামী কোনো লোকাল বাসে করে বড়লেখার আগে কাঁঠালতলী বাজারে নেমে যেতে হবে। সেখান থেকে রিজার্ভ/লোকাল অটোতে মাধবকু- যেতে পারেন।
কোথায় থাকবেন
মাধবকুণ্ডে থাকার জন্য জেলা পরিষদের দুইটি বাংলো ও দুইটি আবাসিক হোটেল রয়েছে। অগ্রিম বুকিং দিয়ে থাকতে পারবেন সেখানে। তবে সবচেয়ে ভালো হয় সিলেট, মৌলভীবাজার বা শ্রীমঙ্গলে রাতযাপন করা।
কোথায় খাবেন
মাধবকুণ্ডে মাঝারি মানের রেস্তোরাঁ আছে। এছাড়া সিলেট, মৌলভীবাজার বা শ্রীমঙ্গল শহরেও অনেক মানের খাবার হোটেল আছে। আপনার পছন্দ মতো কোনো হোটেল থেকে খেয়ে নিতে পারেন।
হামহাম জলপ্রপাত
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে কুরমা বন বিট এলাকায় হামহাম জলপ্রপাতটি অবস্থিত। ২০১০ সালের শেষের দিকে দুর্গম জঙ্গলে ঘুরতে গিয়ে একদল পর্যটক আবিষ্কার করেন এটি। স্থানীয়দের কাছে এই ঝরনাটি চিতা ঝরনা হিসেবে পরিচিত। শীতকালে তুলনামূলক পানি অনেক কম থাকে। বর্ষাকালে ১৪০ ফুট উঁচুর হামহামের সৌন্দর্য দেখার উপযুক্ত সময়।
কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে হামহাম যেতে হলে শ্রীমঙ্গল হয়ে যাওয়া সবচেয়ে সুবিধাজনক। শ্রীমঙ্গল থেকে প্রথমে কলাবন পাড়ায় যেতে হবে। সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা জিপে কলাবন পাড়া পৌছে একজন ভালো গাইড ঠিক করে নিন। কলাবন পাড়া থেকে হামহাম যাওয়ার দুইটি পথ আছে। ঝিরি পথ ও পাহাড়ি পথ। ঝিরি পথে একটু সময় বেশি লাগলেও এই পথের সৌন্দর্য পাহাড়ি পথের চেয়ে অনেক বেশি। তবে বর্ষাকালে ঝিরি পথে অনেক জোঁক থাকে। কলাবন পাড়া থেকে হামহাম যেতে ২-৩ ঘণ্টা লাগবে।
কোথায় থাকবেন
হামহাম ঝরনার আশপাশে থাকার মতো কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই খুব সকালে রওনা দিয়ে দিনে দিনে ফিরে আসাই ভালো। শ্রীমঙ্গলে থাকার জন্য বিভিন্ন মানের হোটেল আছে।
কী খাবেন
কলাবন পাড়ায় ছোট একটি হোটেল আছে। খিদে মেটানোর জন্য কলাবন পাড়ায় কিছু খাবার খেয়ে নিতে পারেন। হামহাম ঝরনার পাদদেশে চা, ছোলাবুট পাওয়া যায়। এছাড়া সাথে শুকনো খাবার নিয়ে যেতে পারেন। শ্রীমঙ্গল ফিরে শহরে ভালো মানের রেস্টুরেন্ট খেতে পারেন।
সাবধানতা
* ঝরনার আশপাশের পাথর অনেক পিচ্ছিল। তাই চলাচলের ক্ষেত্রে সাবধান থাকবেন।
* নোটিশ বোর্ডে যা লেখা আছে তা পালন করুন।
* জলপ্রপাতের নিচে অনেক গভীর, ভুলেও সেখানে যাবেন না।
* বর্ষায় ঝিরিতে অনেক স্রোত থাকে। সাবধানে সাঁতার কাটবেন।
বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের সীমান্তর্তী ধলই চা-বাগানে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ অবস্থিত। ঝিনাইদহের বীর সন্তান হামিদুর রহমান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন সিপাহী ছিলেন। ১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসে তিনি শ্রীমঙ্গল এলাকায় যুদ্ধ করেন। ২৮ অক্টোবর সকালে দলের অধিনভায়কের নির্দেশে হামিদুর রহমান ধলই বিওপিতে পাকিস্তানিদের ঘাঁটি দখলের জন্য অগ্রসর হন। হালকা একটি মেশিনগান নিয়ে জীবনবাজি রেখে তিনি একাই দুইটি পাকিস্তানি যুদ্ধ ট্যাঙ্ক ধ্বংস করেন। এতে শত্রুঘাঁটির অধিনায়ক এবং বেশ কয়েকজন সৈন্য নিহত হন।
একপর্যায়ে যুদ্ধরত অবস্থায় এই বীর সন্তান শত্রুদের পাল্টা আক্রমণে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। তার আত্মত্যাগের কয়েক দিনের মধ্যেই ধলই সীমান্ত ফাড়ি মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। সহযোদ্ধারা হামিদুর রহমানের লাশ সীমান্তর ওপারে নিয়ে ভারতের আমবাসা গ্রামের একটি মসজিদের পাশে দাফন করেন। এই মহান বীরের প্রতি সম্মান জানিয়ে শ্রীমঙ্গল থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে ধলই চা-বাগানে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়।
প্রতিবছর ২৮ অক্টোবর হামিদুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মৌলভীবাজারের স্থানীয় প্রশাসন বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য পর্যটক ও দর্শনার্থ তার এই স্মৃতিসৌধতে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন।
কীভাবে যাবেন
শ্রীমঙ্গল শহর থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা বাসে চড়ে কমলগঞ্জ আসতে হবে। সেখান থেকে রিকশায় হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধে যেতে পারেন।
পাথারিয়া পাহাড়
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার ভারতীয় সীমান্ত লাগোয়া পাথারিয়া পাহাড়। দুর্গম এই পাহাড়ের ঘন সবুজ অরণ্যের বুক চিড়ে বেরিয়ে এসেছে অর্ধশতাধিক ঝরনা। স্থানীয়রা আদর করে নাম দিয়েছেন ঝেরঝেরি, কাখড়াছড়ি, ফুলঢালনি আর ইটাউরি ফুলবাগিচা ঝরনা। এই ঝরনাগুলো পাথারিয়া পাহাড়কে সাজিয়েছে অন্যরকম সৌন্দর্যে।
স্থানীয়দের কাছে ‘আদম আইল’ হিসেবে পরিচিত পাথারিয়া পাহাড়। ২৫ মাইলজুড়ে সবুজ অরণ্যে ঘেরা দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় এই ঝরনাগুলো লোকচক্ষুর অন্তরালে ছিল।
বড়লেখা সদর ইউনিয়নের ডিমাই বাজার থেকে পাথারিয়া পাহাড়ের নির্জন পল্লী ডিমাইপুঞ্জির পাশ দিয়ে দুর্গম পাহাড়ি ছড়ার পথে হেঁটে গেলে চোখে পড়বে কয়েকটি ছোট ঝরনা। ৬ কিলোমিটার পিচ্ছিল পাথুরে ছড়া দিয়ে হাঁটার পর ওপরে উঠলে দুটি টিলার ভেতওে দেখা যাবে ঝেরঝেরি ঝরনা। ঝেরঝেরির ঠিক ডান পাশে রয়েছে ইটাউরি ফুলবাগিচা ঝরনা। ফুলবাগিচায় যেতে হলে প্রায় ৬০-৭০ ফুট উঁচু খাড়া দুটি পাহাড়ের পিচ্ছিল পথ পাড়ি দিতে হবে।
পাথারিয়া পাহাড়েরই অন্য প্রান্তে দেশের অন্যতম বৃহৎ জনপ্রিয় জলপ্রপাত মাধবকু-। ঝেরঝেরি ও ইটাউরি ফুলবাগিচার মতো পাথারিয়া পাহাড়ের এই অংশ থেকে চোখে পড়বে ত্রিপল ঝরনা, যামিনীকু-, যমজ ঝরনা, রজনীকু-, পুছুম ঝরনা, বন্দরডুবা, পাইথুং ও রামাকু- নামে আরও অসংখ্য দৃষ্টিনন্দন ঝরনা। এগুলোর বেশিরভাগই মৌসুমি ঝরনা। বর্ষাকালে ঝরনাগুলো যৌবনদীপ্ত থাকে। শুষ্ক মৌসুমে শুকিয়ে যায়। এছাড়াও পাথারিয়া পাহাড়ের ফুলছড়ি নামক স্থানে রয়েছে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট নান্দনিক সেতু।
বর্ষাকালে ঝর্ণা ও ছড়ায় পানি বেশি থাকে। তখন জোঁক, বিষধর সাপ ও পোকা আক্রমণ করতে পারে। শুষ্ক মৌসুমে এখানে পানির স্রোত কম থাকে। মূলত পাথারিয়া পাহাড়ের চারদিকের সবুজ প্রকৃতি ও শান্ত শীতল ঝরনার দৃশ্য মন কেড়েছে ভ্রমণপিপাসুদের।
কীভাবে যাবেন
মৌলভীবাজার জেলা শহর থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে পাথারিয়া পাহাড় অবস্থিত। ঢাকা থেকে বাসে এসে বড়লেখার একটু আগে কাঁঠালতলী বাজারে নামতে হবে। সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা রিজার্ভ করে পাথারিয়া পাহাড়ে যেতে পারবেন।
ট্রেনে কুলাউড়া স্টেশনে নেমে কাঁঠালতলী হয়ে পাথারিয়া অঞ্চলে যেতে পারবেন। এছাড়া মৌলভীবাজার থেকে বড়লেখায় পৌঁছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা চান্দের গাড়ি নিয়ে ডিমাই হয়েও পাথারিয়া পাহাড় যাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন
পাথারিয়া পাহাড়ের কাছে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে। তবে যাতায়াতের সুবিধার্থে মৌলভীবাজার বা শ্রীমঙ্গলে রাতযাপন করাই ভালো।
কোথায় খাবেন
মাধবকু- জলপ্রপাতের কাছে ও বড়লেখা উপজেলায় বেশকিছু রেস্তোরাঁ রয়েছে। এছাড়া সুযোগ করে শ্রীমঙ্গলের নীলকণ্ঠ টি কেবিনের জনপ্রিয় সেভেন লেয়ার চায়ের স্বাদ নিতে ভুলবেন না।
বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক
মৌলভীবাজার জেলা শহরের উপকণ্ঠে প্রায় দুই কিলোমিটার দক্ষিণ পাশে পাহাড়ি উঁচু-নিচু টিলা আর দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির বৃক্ষরাজির সমারোহ ও দৃষ্টিনন্দন ইট-সুরকির ফটক-প্রাচীরবেষ্টিত বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক। ছোট বড় বেশকিছু টিলাঘেরা চিরহরিৎ পত্রঝরা প্রকৃতির এই বনাঞ্চলকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল হিসেে ঘোষণা করা হয় ১৯১৬ সালে। ২০০৬ সালে বনবিভাগ এই বনের প্রায় ৮৮৭ একর বনাঞ্চল ও আশপাশের এলাকাকে ইকোপার্ক হিসেবে ঘোষণা করে।
নানান গাছপালা আর বন্যপ্রাণীতে সমৃদ্ধ বর্ষিজোড়া জঙ্গল। বনের প্রধান উদ্ভিদ শাল আর গর্জন। আরও আছে সেগুন, লোহাকাঠ, জারুল, তেলশুর, চিকরাশি ইত্যাদি। এছাড়া আগর, আমলকি, বহেরাসহ নানান ঔষধি গাছও আছে। এখানে বসবাস করে হরেক প্রজাতির জীবজন্তু, সাপ, পাখি।
এখানে বসবাস করা জীবজন্তু, পাখির মধ্যে রয়েছে বানর, শূকর, বেজি, কাঠবিড়ালি, মেছোবাঘ, গন্ধগোকুল, ময়না, টিয়া, শালিক, ভিমরাজ, ঘুঘু, ইন্ডিয়ান নাইট হিরণ, প্যাঁচা, লক্ষ্মীপ্যাঁচা, মেছোপ্যাঁচা, তক্ষক, ঈগল, চিল, বাজপাখি ইত্যাদি।
কীভাবে যাবেন
মৌলভীবাজার শহর থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে বর্ষিজোড়া বনাঞ্চল। শহর থেকে অটোরিকশা বা রিকশায় যাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন
মৌলভীবাজার জেলা শহরে সাধারণ মানের কিছু হোটেল আছে। এসব হোটেলে অল্প খরতে থাকার ব্যবস্থা আছে।