পর্যটন বিচিত্রা ডেস্ক
ঐশ্বর্যমণ্ডিত এ মসজিদটি উত্তর-দক্ষিণে ১৯.৩৫ মিটার (৬৩.৫ ফুট) দীর্ঘ ও পূর্ব-পশ্চিমে ৭.৩৯ মিটার (২৪.২৫ ফুট) প্রশস্ত। সমস্ত মসজিদটি চুন ও পোড়ামাটির প্লাস্টার দ্বারা আবৃত। পূর্বদিকের মধ্য দরজার সম্মুখের খিলান কুলুঙ্গি প্যানেল দ্বারা জমকালোভাবে সজ্জিত। সব মিলিয়ে মসজিদটির অবয়ব ও নকশা অলংকরণ খুবই আকর্ষণীয়। বিশাল এলাকাজুড়ে অবস্থিত মসজিদ প্রাঙ্গণটি বিভিন্ন ধরনের ফুলের বাগান দ্বারা শোভিত।
শাহ নেয়ামতউল্লাহ (র.) মসজিদের উত্তরে তার মাজার শরিফ অবস্থিত। এটি বাংলায় নির্মিত সর্বপ্রথম মোগল যুগের স্থাপত্য নিদর্শন। উঁচু ভিটার উপর নির্মিত এ সমাধিটি বর্গাকৃতির এক গম্বুজবিশিষ্ট ইমারত। মূল সমাধি ভবনের অভ্যন্তরে ইতিহাস খ্যাত ওলী শাহ নেয়ামতউল্লাহ (র.) অন্তিম শয্যায় শায়িত।
ঐতিহাসিক সূত্র মতে, হজরত সৈয়দ শাহ নেয়ামতউল্লাহ (র.) কোরাইশ বংশীয় ছিলেন এবং তার পূর্বপুরুষগণ আরব থেকে ভারতবর্ষে আগমন করেন। শাহ নেয়ামতউল্লাহর (র.)-এর জন্য ভারতের দিল্লি মতান্তরে কাশ্মীর প্রদেশে। সম্রাট শাহজাহান, সম্রাট আওরঙ্গজেব ও পূর্ববঙ্গের শাসক শাহ সুজা সকলেই শাহ নেয়ামতউল্লাহ (র.)-এর ভক্ত ছিলেন। সম্রাট শাহজাহান শাহ নেয়ামতউল্লাহ (র.)-কে ৪০০ বিঘা (১৩৩ একর) এবং সম্রাট আওরঙ্গজেব তাকে ৮৮৩৬ বিঘা (২৯২১ একর) জমি দান করেন।
তিনি এত বড় পণ্ডিত ছিলেন যে, কোরানে যতগুলো অক্ষর রয়েছে ততগুলো অক্ষরে ফারসি ভাষায় কোরান অনুবাদ করেন। তার কবরের শিয়রে একটি আরবি ক্যালিগ্রাফযুক্ত প্রস্তরলিপি রয়েছে। মাজারের দক্ষিণ-পূর্বে আরো একটি সমাধি ভবনে দুটি কবর রয়েছে। ধারণা করা হয়, কবর দুটি শাহ সাহেবের সহধর্মিণীদের। পশ্চিম-দক্ষিণ কোণে তার দুই ছেলের আরো দুটি কবর রয়েছে। ভাদ্র মাসের শেষ শুক্রবার শাহ সাহেবের ইসালে সওয়াব অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।