পর্যটন বিচিত্রা ডেস্ক
পাথরঘাটা প্রত্নস্থলটি বেশ কয়েকটি প্রত্নসম্পদের সমষ্টি। এটি উপজেলা সদর থেকে ৬.৪৪ কিলোমিটার পূর্বে তুলসীগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। তুলসীগঙ্গা নদীর উভয় তীরেই এই প্রাচীন নগরীর ধ্বংসাবশেষের চিহ্ন পাওয়া যায়। পাথরঘাটার প্রত্নস্থলের মোট আয়তন প্রায় ৯ বর্গকিলোমিটার। খননকাজের সময় তলসীগঙ্গা নদীর উপর একটি পাথুরে তৈরি প্রাচীন সেতুর ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গিয়েছে। এখানে ক্যাথলিক মিশন ও সংলগ্ন এলাকায় নির্মাণকাজ চলাকালে প্রত্ননিদর্শন বিভিন্ন ঢিবি ও অসংখ্য প্রত্নবস্তুর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
এখানকার প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: মিশন, উচাই, বহারামপুর, কাশিয়া বাড়ি, কুসুম্বা, গঙ্গরিয়া ও ব্রিধিগ্রামের একাধিক ঢিবি এবং নিমাই শাহের মাজার, বদের ধাপ, সাঁওতাল পাড়া।
এছাড়াও বিভিন্ন সময় খননের ফলে আবিষ্কৃত হয়েছে মৃৎপাত্রের অংশ, প্রাচীন ইটের টুকরা, পোড়ামাটির বস্তু, ভাষ্কর্যসহ আরও অনেক কিছু। এছাড়াও রয়েছে লৌহখন্ড, প্রাচীন মুদ্রা, কাচ খন্ড, চুরি ও নিত্য প্রয়োজনীয় বেশ কিছু জিনিসপত্র।
বর্তমান পাকিস্তানের তক্ষশীলায় তৃতীয়-দ্বিতীয় শতকের মৃৎপাত্রের টুকরার মত টুকরাও পাওয়া গিয়েছে। এ থেকে অনেকেই ধারণা করেন পাথরঘাটায় নগরীটি সম্ভবত গড়ে উঠেছিল খ্রিস্টীয় প্রথম বা দ্বিতীয় শতকে। সে হিসেবে এ অঞ্চলের বয়স ২ হাজার বছর বা তার কাছাকাছি হতে পারে। অদিযুগ ছাড়াও এখানে গুপ্ত ও পালযুগের অনেক নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে। এছাড়াও এখানে রয়েছৈ সুলতানী যুগের একটি মাজার যা নীমাই পীরের মাজার নামে স্থানীয়দের কাছে পরিচিত।
বিভিন্ন বিদেশী প্রত্নতত্ত্ববিদের বর্ণনাও এ অঞ্চলে খ্রিস্টীয় চতুর্থ-পঞ্চম শতকের গুপ্তযুগের ও খ্রিস্টীয় অস্টম শতক থেকে দ্বাদশ শতকের পালযুগের সময়কার বিভিন্ন শির্পসামগ্রী পাওয়ার কথা জানা যায়। প্রাচীন এ নগরীটি প্রচীন বিভিন্ন যুগে শিল্প ও সংস্কিৃতি চর্চার কেন্দ্র ছিল বলে মনে করা হয়।