নড়াইল সদর উপজেলার শেখহাটী গ্রামে ভৈরব নদের তীরে অনুষ্ঠিত হয়েছে পৌষসংক্রান্তির মেলা। নড়াইল সদর উপজেলার শেখহাটী গ্রামে গতকাল মঙ্গলবার দিনব্যাপী পৌষসংক্রান্তির মেলা অনুষ্ঠিত হয়। নানা ধরনের উপকরণ নিয়ে হাজির হয়েছিলেন কয়েক শ বিক্রেতা। ঐতিহ্যবাহী এ মেলায় ছিল মানুষের ঢল।
পৌষসংক্রান্তির এ গ্রামীণ মেলা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে ‘আফরার মেলা’ নামেও পরিচিত। মেলাটি বসছে ১০৮ বছর ধরে। আশপাশের নানা জায়গা থেকে মেলায় ভিড় করেন কয়েক হাজার মানুষ।
মেলা উপলক্ষে শখের হাঁড়ি, মাটির সরা, ফুল, শোলার ফুল, মাটির পুতুল, কাঠের একতারা, বাঁশের বাঁশি, বাঁশ ও বেতের সামগ্রী, লোহার দা, বটি, কাঁচি, শিশুদের নানা রকম খেলনা, মোয়া, মুড়কি, বাতাসা বা মিষ্টির বেচাকেনা জমজমাট হয়ে ওঠে। আরও ছিল গ্রামীণ ঐতিহ্যের নাগরদোলা। হাতে ঘোরানো এই নাগরদোলায় চড়ে বড়রাও ফিরে গেছেন যেন শৈশবে।
পৌষসংক্রান্তির এ গ্রামীণ মেলায় মুসলমান ও হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেক মানুষ গাব, ডাব, বাতাসা, লবণ, মুরগি ও ছাগল মানত করেন। ভৈরব নদের তীরে একটি বটগাছ। বটগাছের চারপাশে অনেকটা জায়গাজুড়ে বসে এই মেলা। মেলায় পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন দূরদূরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরা। মিষ্টি, খেলনা, চুড়ি, ফিতা, আলতা থেকে শুরু করে ঘরগৃহস্থালির নানা জিনিস বিক্রি হয় এখানে। চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
আয়োজকেরা জানান, মাত্র এক দিন মেলা হয়। এদিন ভোর থেকে পুণ্যার্থীরা ভৈরব নদে স্নান করেন। অনেক মানুষ গাব, ডাব, বাতাসা, লবণ, মুরগি ও ছাগল মানত করেন। মেলার দিন তারা মানত শোধ করতে আসেন। তারা যা যা মানত করেন, তা ভৈরব নদের জলে ভাসিয়ে দেন। সকাল থেকে মেলা শুরু হয়ে চলে রাত পর্যন্ত। তবে দুপুরের পর মেলায় লোকসমাগম বাড়তে থাকে। দূরদূরান্ত থেকে লোকজন এই মেলায় আসেন।