দ্বীপজেলা ভোলার মূল ভূ-খন্ড থেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন উপজেলা মনপুরা। মনপুরার সর্বদক্ষিণে দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের রহমানপুর গ্রামের বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন মেঘনা ও বঙ্গোপসাগরের মিলনস্থলে ঢেউয়ের তোড়ে জেগে উঠেছে নতুন একটি সমুদ্র সৈকত। স্থানীয়রা হাওয়াই দ্বীপ নামক এই সমুদ্র সৈকতের নাম দিয়েছে ‘দখিনা হাওয়া সি-বিচ’।
এলাকাটির পাশ দিয়ে দীর্ঘ ম্যানগ্রোভ বনে সবুজের সমারোহের পাশাপাশি মায়াবি হরিণের পদচারণা আর অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর থাকে বছরজুড়ে। এ যেন প্রকৃতি আপনমনে সাজিয়েছে। এ এক অপরুপ সৌন্দর্য, যা দেখলে যে কারো দৃষ্টি জুড়িয়ে যাবে। নীল আকাশ আর সাগরের ঢেউয়ের মিলনমেলায় আপনার মনে হবে যেন এ এক অন্য রকম সমুদ্র সৈকত, যা কক্সবাজার কিংবা কুয়াকাটা থেকে ভিন্নতায় সাজানো।
যেখানে একসঙ্গে নীল আকাশ, জলরাশি, ম্যানগ্রোভ বন, হরিণ, অতিথি পাখি আর সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত যাওয়ার অপরূপ দৃশ্য অবলোকন করা যায়। এই ‘দখিনা হাওয়া’ সি-বিচকে ঘিরে মনপুরা দেশের অন্যতম ট্যুরিস্ট স্পট হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। প্রতিনিয়ত এই ট্যুরিস্ট স্পটে ঘুরতে আসেন হাজারও পর্যটক।
কীভাবে যাবেন
ঢাকার সদরঘাট থেকে বিকাল ৫টায় এমভি ফারহান ও সাড়ে ৫টায় এমভি তাসরিফ লঞ্চের ডেকে ৩৫০ টাকা ও কেবিনে এক হাজার ২০০ টাকায় সরাসরি মনপুরায় আসতে পারেন। এছাড়া বরিশাল থেকে লঞ্চযোগে ভোলার ভেদুরিয়া হয়ে বাসযোগে তজুমুদ্দিন উপজেলা থেকে সি ট্রাক ঘাট, সেখান থেকে লঞ্চে সন্ধ্যায় মনপুরা। শীত মৌসুমে নদী শান্ত থাকায় অনেকে আবার স্পিডবোটেও যেতে পারেন মনপুরা।
অপরদিকে ভোলার ভেদুরিয়া থেকে বাসযোগে চরফ্যাশন লঞ্চঘাট। সেখান থেকে লঞ্চ করে সরাসরি মনপুরার জনতাঘাট হয়ে দখিনা হাওয়া সি বিচে যেতে পারে।
পর্যটকদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা
সি-বিচ সংলগ্ন থাকার ব্যবস্থা নেই। তবে মনপুরা উপজেলা শহরে জেলা পরিষদের চারতলা ও দোতলা দুটি ডাক বাংলো এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের রয়েছে একটি ডাক বাংলো। এছাড়া ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে উঠেছে আধুনিক আবাসিক হোটেল। মনপুরা সদর থেকে অটোরিকশা ও ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল করে বিচে যাওয়া যায়। এখানকার খাবার হোটেলে হাঁস, তাজা ইলিশ, রুপসি মাছ, দই পাওয়া যায়। খাবারের দামও কম।