পর্যটন বিচিত্রা প্রতিবেদন
২০২২ সালে ভারতে সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এর পরের স্থানেই ছিল বাংলাদেশ। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থানে যথাক্রমে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা। গত বছর এই পর্যটকদের কাছ থেকে ভারতের আয় হয়েছে ১৬ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৬৯৩ কোটি ডলার।
ভারতে গত বছর বিপুলসংখ্যক পর্যটক এসেছিলেন। দেশটিতে তখন মোট ৬১ লাখ ১৯ হাজার পর্যটক আসেন, আগের বছরের চেয়ে যা ৩০৫ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। তবে ২০১৯ সালে ভারতে রেকর্ড ১ কোটি ৯৩ লাখ পর্যটক এসেছিলেন। কিন্তু এরপর করোনা মহামারি শুরু হলে সেই ধারায় ছেদ পড়ে।
ভারতের কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রণালয় এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। মূলত, অভিবাসন ব্যুরোর সাময়িক তথ্যের ভিত্তিতে এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে। সেই পরিসংখ্যানে জানা গেছে, ২০২২ সালে ভারতে যত পর্যটক এসেছিলেন, তার অর্ধেকের বেশি এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য থেকে।
গত বছর ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটক গিয়েছিলেন মোট ১৩ লাখ ৭৩ হাজার ৮১৭ জন, বাংলাদেশে থেকে গিয়েছিলেন ১২ লাখ ৫৫ হাজার ৯৬০ জন আর যুক্তরাজ্য থেকে গিয়েছিলেন ৬ লাখ ১৭ হাজার ৭৬৮ জন।
২০২২ সালের মতো ২০২১ সালেও ভারতে সবচেয়ে বেশি পর্যটক এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে, যদিও এর আগের পাঁচ বছরে ভারতে সবচেয়ে বেশি পর্যটক গেছেন বাংলাদেশ থেকে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাংলাদেশে ইউরোপের বেশ কিছু দেশের কনস্যুলেট না থাকার কারণে অনেকে ভারতে এসে ভিসার আবেদন করতে বাধ্য হন। এ ছাড়া বাংলাদেশের অনেক মানুষ ভারতে চিকিৎসা করাতে যান।
শুধু ভুটান ও নেপালের অধিবাসী ছাড়া বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশের নাগরিকদের ভারতে আসতে ভিসা নিতে হয়।
নিউজ ১৮-এর সংবাদে বলা হয়েছে, কোন দেশে কোন দেশের মানুষ বেশি যান, তা নির্ভর করে অনেকটা দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর। এ ছাড়া ব্যবসায়িক সম্পর্ক এবং মানুষে মানুষে যোগাযোগের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার অবশ্য পর্যটক আকৃষ্ট করতে বেশ কিছু পর্যটনকেন্দ্রকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। সেই সঙ্গে পর্যটকদের জন্য ২৪ ঘণ্টার বহুভাষী হেল্পলাইন চালু করা হয়েছে।
ভারতে চিকিৎসার মান ভালো ও ব্যয় কম হওয়ার কারণে দেশটির পর্যটন খাত আরও সম্প্রসারিত হতে পারে বলে দেশটির বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। পর্যটন থেকে দেশটি বিপুল বিদেশি মুদ্রা আয় করার পাশাপাশি এই খাতে অনেক মানুষের কর্মসংস্থানও হচ্ছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশটিতে মোট যে কর্মসংস্থান হয়েছে, তার ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশই হয়েছে এই খাতে।