পর্যটন বিচিত্রা ডেস্ক
টাঙ্গুয়ার হাওর সুনামগঞ্জ জেলায় অবস্থিত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠাপানির জলাভূমি। বর্তমানে হাওর ভ্রমণের জন্য রয়েছে বেশ কিছু আধুনিক হাউজ বোট। হাউজ বোট ভাড়া করতে হলে আগে থেকেই বুকিং করতে হয়। হাউজ বোটে ভ্রমণ করতে চাইলে আপনার কাজ হবে শুধু সুনামগঞ্জ বা তাহিরপুর পৌঁছানো। এরপর ভ্রমণের সব দায়িত্ব হাউজ বোটের।
হাউজ বোট সুনামগঞ্জ শহরের সাহেব বাড়ি ঘাট থেকে ছাড়বে নাকি তাহিরপুর থেকে ছাড়বে তা আগে থেকেই জেনে নিতে হবে। সাহেব বাড়ি ঘাট থেকেই হাউজবোট ছাড়লে তখন কষ্ট করে তাহিরপুর যাবার প্রয়োজন পড়ে না।
টাঙ্গুয়া যেতে প্রথমে যেতে হবে সুনামগঞ্জ জেলা শহরে। ঢাকা থেকে সড়ক পথে সুনামগঞ্জ যাওয়া যায়। ফকিরাপুল, সায়দাবাদ থেকে শ্যামলী পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, এনা পরিবহণ, মামুন পরিবহণের বাসগুলো সুনামগঞ্জ যায়। বাসে সুনামগঞ্জ পৌঁছাতে ৬ ঘণ্টার মতো সময় লাগবে।
সুনামগঞ্জ থেকে টাঙ্গুয়া
সুনামগঞ্জ নেমে সুরমা নদীর ওপর নির্মিত বড় ব্রিজের কাছে লেগুনা/সিএনজি/বাইক করে তাহিরপুরে যাওয়া যায়। সময় লাগবে প্রায় দেড় ঘণ্টা। তাহিরপুরে নৌকা ঘাট থেকে আকার ও সামর্থ্য অনুযায়ী ইঞ্জিন চালিত নৌকা ভাড়া করতে হবে।
নৌকার ভাড়া কয়েকটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। যেমন নৌকার আকার, ধারণক্ষমতা, সুযোগ-সুবিধা, মৌসুম ইত্যাদি। এছাড়াও ছুটির দিনে ভাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিনের তুলনায় কিছুটা বেশি থাকে।
এক রাত থাকার জন্য ছোট নৌকাগুলোর ভাড়া পড়ে ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা, মাঝারি আকারের নৌকাগুলোর ৬ হাজার থেকে ৮ হাজার এবং বড় নৌকাগুলোর ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকার মতো।
বর্তমানে টাঙ্গুয়ার হাওর ঘুরে আসার জন্য প্রায় অর্ধশতাধিক আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন হাউজবোট রয়েছে। এই হাউজবোটগুলোতে খাওয়া-দাওয়া, রাতে থাকাসহ ২ দিন ১ রাত ভ্রমণের সমস্ত ব্যবস্থা থাকে। খরচ হবে জনপ্রতি ৬-৮ হাজার টাকা। তবে দল যদি অনেক বড় হয়, যেমন ১৬-২০ জনের মতো হলে তখন জনপ্রতি ভাড়া অনেকটাই কমে আসবে। তখন জনপ্রতি ৪ হাজার -৫ হাজার টাকার মতো খরচ হবে।
প্রয়োজনীয় সামগ্রী
নৌকা ভাড়া করার সময় লাইফ জ্যাকেট, টয়লেট ব্যবস্থা, রান্নার চুলা, লাইট-ফ্যান, বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য শামিয়ানা ইত্যাদি ঠিকঠাক আছে কি না তা দেখে নিতে হবে। তাহিরপুর বাজারে আইপিএস ও লাইফ জ্যাকেট ভাড়া পাওয়া যায়। নৌকায় যদি বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও লাইফ জ্যাকেট না থাকে তবে সেগুলো ভাড়া করে নিতে হবে।
খাবারের ব্যবস্থা
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর এবং টেকেরঘাটে বেশকিছু খাবার হোটেল রয়েছে। এসব হোটেলে হাওরের প্রায় ২০-৩০ প্রজাতির মাছ, শুঁটকি আর হাঁসের মাংসের নানা পদ দিয়ে চাইলে সকাল কিংবা দুপুরের আহার পর্ব সারতে পারবেন। আর টেকেরঘাটে যদি রাত্রিযাপন করা হয় তবে রাতের আহারও এখানেই সেরে নেওয়া সম্ভব।
আর যদি নৌকাতেই রাত্রিযাপন করা হয় তবে রান্নার ব্যবস্থা নৌকাতেই করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে নৌকায় উঠার আগেই তাহিরপুর বাজার থেকে প্রয়োজনীয় বাজার করে নিতে হবে। তবে তাজা মাছ কেনার জন্য হাওরের মাঝের ছোট ছোট দোকানগুলো আদর্শ জায়গা। মাঝিকে বললে এই দোকানগুলো চিনিয়ে দেবে।
নৌকায় নিজেরাই রান্না করা যায় আবার রান্নার জন্য তাহিরপুরে বাবুর্চিও ভাড়া পাওয়া যায়। অনেক নৌকার মাঝিরাই রান্না করে দিতে আগ্রহী হন। এসব বিষয়ে তাই নৌকায় উঠার আগে মাঝির সঙ্গে আলাপ করে নেওয়া উচিত।
আর যদি হাউজবোটে থাকা হয় সেক্ষেত্রে খাবার নিয়ে আলাদা করে ভাবতে হবে না। খাবারের সব ব্যবস্থা হাউজবোটের স্টাফরাই করে থাকেন। খাবারের মেনুও সাধারণত আগে থেকেই জানানো হয়। মেনুতে কোনো পরিবর্তন করতে চাইলে আগে থেকেই কথা বলে নিতে হয়।
দর্শনীয় স্থান
হাওর ভ্রমণকালে পানিতে না নামলে ভ্রমণ অনেকটাই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। ওয়াচটাওয়ার এলাকায় এসে পানিতে নেমে আশপাশের জলাবনে ঘুরে বেড়ানো যায়। ওয়াচটাওয়ারের ওপরতলায় উঠে হাওর অঞ্চলের সৌন্দর্য বেশ ভালোভাবে দেখতে পাওয়া যায়।
এরপর নৌকায় করে টেকেরঘাট এলাকায় চলে যেতে হবে। এখানে দেখতে যেতে পারেন অপার্থিব সৌন্দর্যের নীলাদ্রি লেক। একদিকে টিলা-পাহাড়ের সমারোহ আর অন্যদিকে স্বচ্ছ নীল জলের হ্রদ সব মিলিয়ে এটি যেন এক অপরূপ সৌন্দর্যের আধার।
নীলাদ্রি লেক থেকে সিএনজিতে করে চলে যেতে পারেন লাকমাছড়া। ভারত সীমান্তঘেঁষা এই এলাকায় দেখা যাবে মেঘে আচ্ছাদিত সবুজ সব পাহাড় আর পাহাড় থেকে নেমে আসা স্বচ্ছ পানির ঝর্ণাধারা।
এ ছাড়া পরদিন বারিক টিলা ও যাদুকাটা নদী দেখতে যেতে পারেন। পাশাপাশি ঘুরে আসতে পারেন শিমুল বাগানে। তবে যেখানেই যেতে চান না কেন নৌকার মাঝিকে ভ্রমণের শুরুতেই সবকিছু জানিয়ে রাখতে হবে।
হাওর ভ্রমণকালে আরও কিছু পরামর্শ
১। পরিবেশের যেন কোন ক্ষতি না হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
২। ভ্রমণকালে নৌকায় ময়লা আবর্জনা জমিয়ে রাখার জন্য ঝুড়ি রাখতে হবে।
৩। কোনরূপ খাবারের অংশ বা উচ্ছিষ্ট, প্যাকেট, খোসা বা পাত্র হাওরের পানিতে ফেলা যাবে না।
৪। মাইক ব্যবহার করে বা অন্যকোন প্রকারে শব্দ তৈরি করা যাবে না
৫। রাতের বেলা অবস্থান করলে অস্বাভাবিক উজ্জ্বল আলো তৈরি করা যাবে না।
৬। পাখি বা বন্যপ্রাণী লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়া যাবে না।
৭। টাঙ্গুয়ার মাছ, বন্যপ্রাণী বা পাখি ধরা যাবে না বা এদের জীবন হুমকির মধ্যে পড়ে এমন কোন কাজ করা যাবে না।
৮। টাঙ্গুয়ায় কোনো গাছপালা, বন জঙ্গল বা লতা পাতার ক্ষতিসাধন করা যাবে না।
৯। টাঙ্গুয়ায় শামুক, ঝিনুক বা অন্য কোন প্রকার জলজ বা স্থলজ প্রাণী/কীটপতঙ্গের ক্ষতিসাধন করা যাবে না।
১০। টাঙ্গুয়ায় ভ্রমণকালে হাতে চালিত নৌকার ব্যবহার বাঞ্চনীয়।
১১। টাঙ্গুয়ায় ভ্রমণকালে প্রতিটি দর্শনার্থী একজন প্রকৃতিপ্রেমীর মতো বিনা উপদ্রপে প্রাকৃতিক রূপ উপভোগ করবেন এটাই প্রকৃতিবান্ধব পর্যটনের প্রত্যাশা।
টাঙ্গুয়ার হাওরে ইকোট্যুরিজম
বিশ্বে দিন দিন ইকোট্যুরিজমের পরিধি বেড়েই চলেছে। আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদকে সুষ্ঠভাবে ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ইকোট্যুরিজমের উন্নয়ন সম্ভব। ইকোট্যুরিজম হচ্ছে কোন এলাকার স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ ও ব্যবস্থাপনায় পরিবেশ, প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি না করে প্রকৃতিকে উপভোগ করার এমন একটি দায়িত্বপূর্ণ ভ্রমণ যা ঐ এলাকার জনগণের ধর্মীয় ও সামাজিক সংস্কৃতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না এবং স্থানীয় জনগণের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। ইকোট্যুরিজমে স্থানীয় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকায় তারা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয় এবং অর্জিত আয়ের একটি অংশ ঐ এলাকার পরিবেশের উন্নয়ন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের পাশাপাশি পরিবেশ বান্ধব পর্যটনের বিকাশে ব্যবহার হয়ে থাকে।
বিশ্বের সর্বাধিক বৃষ্টিবহুল অঞ্চল চেরাপুঞ্জির খুব কাছেই অবস্থিত রামসার সাইট টাঙ্গুয়ার হাওর। সিলেটের সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা ও তাহিরপুর উপজেলা অংশবিশেষ নিয়ে এ হাওরের অবস্থান। হাওরের চারপাশে রয়েছে ৮৮টি গ্রাম। ‘ছয় কুড়ি বিল আর নয় কুড়ি কান্দার’ সমন্বয়ে পরিচিত দৃষ্টিনন্দন বিলটির দৈর্ঘ্য ১১ ও প্রস্থ ৭ কিলোমিটার। বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৯ সালে টাঙ্গুয়ার হাওরের ৯,৭২৭ হেক্টর এলাকাকে ‘পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা’ ঘোষণা করে। হাওরটি দেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট এবং পৃথিবীর ১০৩১ তম রামসার সাইটের মর্যাদা পায় ২০০০ সালে। কয়েকটি বৈশিষ্ট্যের কারণে হাওরটি উল্লেখযোগ্য। তা হলো: জলাভূমি পরিবেশের অনন্য উদাহরণ, জলচর পাখি, সংকটাপন্ন প্রজাতির মাছ, প্রাণী ও উদ্ভি দের আবাসস্থল এবং মা-মাছের উত্তম প্রজননস্থল। এই হাওরে ৫২টি বিলের মধ্যে ১৬টিতে সারা বছরই পানি থাকে। এই হাওরের ১২০টি কান্দায় প্রায় ষাট হাজার মানুষ বাস করে। এক হিসাবে এখানে ১৪১ প্রজাতির মাছ, ২০০ উদ্ভিদ, প্রায় পাঁচশত পাখি, স্তন্যপায়ী, সরীসৃপ ও উভচর ইত্যাদি বন্যপ্রাণী দেখা গেছে। টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু রক্ষনাবেক্ষণ ও টেকসই নিশ্চিতকল্পে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় টাঙ্গুয়ার হাওরে একটি সমাজভিত্তিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়। স্থানীয় জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের পক্ষে আন্তর্জাতিক সংস্থা আইইউসিএন, দাতা সংস্থা এসডিসি এর আর্থিক সহায়তায় ‘টাঙ্গুয়ার হাওর সমাজভিত্তিক টেকসই ব্যবস্থাপনা’ প্রকল্প পরিচালনা করছে।
পরিবেশ রক্ষা করে পর্যটন
১৯৯৯ সালে টাঙ্গুয়ার হাওরকে ‘প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। পরের বছর এটি বিশ্ব ঐতিহ্যর স্বীকৃতি পায়। এর আগ পর্যন্ত এই হাওর জলমহাল হিসেবে ইজারা দেওয়া হতো। আধুনিক নৌযানের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে পর্যটকের সমাগমও বেড়েছে। পরিবেশবাদীরা বলছেন, এতে হুমকিতে পড়েছে টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্য।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরপাড়ের রাজাই গ্রামের বাসিন্দা এন্ড্রু সলমার বলেন, প্রতিদিন শত শত নৌকা হাওর চষে বেড়ায়। নানাভাবে ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এখন পর্যটন নিয়েই আলোচনা বেশি হচ্ছে। হাওরের পরিবেশ ও প্রকৃতি নিয়ে আলোচনায় নেই। পর্যটনকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রকৃতি, পরিবেশ ও হাওরের জীববৈচিত্র্যের যেন কোনো ক্ষতি না হয়, সেটিকে গুরুত্ব দিতে হবে।
গত আগস্টে পর্যটক প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে ১২টি শর্ত দেয় তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসন। এর মধ্যে ২টি শর্ত নৌযানের নিবন্ধনসংক্রান্ত এবং বাকি ১০টি পর্যটন পরিবহণ ও পরিবেশ সংরক্ষণের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান বলেন, হাউসবোটসহ ১০৯টি নৌযানের নিবন্ধন করানো হয়েছে। বাকিগুলো পর্যায়ক্রমে করানো হচ্ছে। এটা করার মূল উদ্দেশ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, পর্যটক ও বোটমালিকদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করা। তদারকি বেড়ে যাওয়ায় আগে পরিবেশদূষণের যতটা অভিযোগ আসত, এবার অভিযোগ কম আসছে।
তরুণদের পাশে থাকতে হবে
সরকারি ছুটির দিনগুলোতে প্রায় এক হাজার মানুষ টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ করেন। কর্মদিবসেও ঘুরতে আসেন অনেকে। সুনামগঞ্জ ছাড়াও নেত্রকোনার কলমাকান্দা ও কিশোরগঞ্জের নিকলী থেকে পর্যটকবাহী নৌযান টাঙ্গুরার হাওরে প্রবেশ করে। তাই হাওর পর্যটনসহ দেশের পর্যটন খাতকে এগিয়ে নিতে তরুণদের উৎসাহিত করতে বলছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান সন্তোষ কুমার দেব বলেন, প্রকৃতিনির্ভর পর্যটন জনপ্রিয়তা পেয়েছে, যার অন্যতম মাধ্যম ‘হাওর পর্যটন’। ঠিকমতো ব্র্যান্ডিং করা গেলে বাইরের পর্যটকও পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, যেসব তরুণ হাওর পর্যটনে এগিয়ে এসেছেন, তাঁদের সহজ শর্তে ঋণসহ সব ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে। তরুণ এই উদ্যোক্তাদের আগ্রহে যেন ভাটা না পড়ে।
টাঙ্গুয়ার হাওরে পর্যটকদের নিরাপত্তায় ১০ নির্দেশনা জারি
সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে আগত পর্যটক ও পর্যটকবাহী নৌযানের নিরাপত্তায় ১০ দফা নির্দেশনা জারি করেছে মধ্যনগর থানা পুলিশ প্রশাসন।
হাওরের পরিবেশ রক্ষা, নৌ দুর্ঘটনা এড়ানো, গণউপদ্রব রোধ এবং সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে এ ১০ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল হক। তিনি বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা এই নির্দেশনা দিয়েছি।
নির্দেশনাগুলো হলো-
১. কোন নৌযানে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত পর্যটক বা যাত্রী পরিবহন করা যাবে না।
২. নৌযান চলাচলের সময় কিংবা পানিতে নামার সময় প্রত্যেক পর্যটক এবং নৌচালক আবশ্যিকভাবে লাইফ জ্যাকেট পরিধান করবেন।
৩. বিরূপ আবহাওয়া থাকলে নদীতে কিংবা হাওরে ভ্রমণ করা যাবে না।
৪. প্রতিটি নৌযানকে হাওর বাননদীতে যাত্রা শুরুর অন্তত ৬ ঘণ্টা পূর্বে নির্ধারিত ফরমে মধ্যনগর থানার ডিউটি অফিসারকে (মোবাইল নম্বর-০১৩২০-১২১০৫৫) অবহিত করতে হবে।
৫. পর্যটকদেরকে ও নৌচালকদেরকে নৌযানে এবং স্থলভাগে চলাচলের সময় মাঙ্ক পরিধান করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
৬. প্রতিটি নৌযানে এবং নৌঘাটে ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য নির্ধারিত ডাস্টবিনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। নৌযান মালিক সমিতি এবং নৌচালকরা বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
৭. নির্ধারিত স্থান ছাড়া হাওর বা নদীর পানিতে বা স্থলভাগের কোথাও কোন ধরনের ময়লা আবর্জনা ফেলা যাবে না।
৮. পর্যটকবাহী নৌযান যেকোনো স্থলভাগের কাছাকাছি অবস্থানকালে উচ্চশব্দে কোনো ধরনের মাইক বা লাউড স্পিকার বাজাতে পারবে না।
৯. প্রতিটি নৌযান, পর্যটকদের জন্য মানসম্মত পরিবেশ তথা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও পর্যাপ্ত সুবিধাদি নিশ্চিত করবে। পর্যটকদেরকে তাদের সার্বক্ষণিক নিজস্ব দায়িত্বে সংরক্ষণ করতে হবে।
১০. নোঙরের স্থানে দুষ্কৃতিকারীরা থাকতে পারে। তাদের থেকে পর্যটকদেরকে সাবধান থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো।