পর্যটন বিচিত্রা প্রতিবেদন
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দক্ষিণবঙ্গের পর্যটন শিল্পে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফলে এই সেতু পর্যটন শিল্প বিকাশের সম্ভাবনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। পদ্মা সেতুর কারণে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে ২১ জেলার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে। এই অঞ্চলে পর্যটন শিল্পের উন্নয়নও অনিবার্যভাবে হচ্ছে। দেশি-বিদেশি পর্যটকরা সহজেই নিজস্ব গাড়ি কিংবা গণপরিবহণে স্বল্প খরচে এবং স্বল্প সময়ে পদ্মা সেতু হয়ে সুন্দরবন এবং কুয়াকাটায় যেতে পারছেন। আন্তর্জাতিক পর্যটকরা বেনাপোল এবং ভোমরা বন্দর সাতক্ষীরা হয়ে কুয়াকাটা, সুন্দরবন দেখে রাজধানী ঢাকা হয়ে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের পর্যটন আকর্ষণসমূহ অবলোকন করতে পারবেন।
দক্ষিণাঞ্চলের কুয়াকাটা ও সুন্দরবনসংলগ্ন ছোট ছোট দ্বীপ পর্যটন উপযোগী করা যাবে। কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত, সুন্দরবন ও পায়রা বন্দর ঘিরে দেখা দেবে পর্যটনের বিপুল সম্ভাবনা।
দক্ষিণ বাংলার গ্রামেও পরিবর্তনের হাওয়া লাগবে। এ অঞ্চলের কৃষক, মৎস্যজীবী, তাঁতি, ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ভোক্তার সমাবেশ যে রাজধানী ঢাকা, তার সঙ্গে অনায়াসে সংযুক্ত হতে পারবেন।
নতুন নতুন ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-কারখানা, আবাসন প্রকল্প, রিসোর্ট, বিশ্ববিদ্যালয়, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাই-টেক পার্ক, মানবসম্পদ প্রশিক্ষণকেন্দ্র, রেস্টুরেন্ট ও নানা ধরনের এসএমই উদ্যোগ স্থাপনের হিড়িক পড়ে গেছে। খুলনা ও বরিশালে জাহাজ নির্মাণশিল্পের প্রসার ঘটতে শুরু করেছে। কুয়াকাটায় পর্যটনশিল্পের বিকাশ ঘটছে দ্রুতগতিতে। পদ্মা সেতুর কল্যাণে ওই সব এলাকায় ব্যাপক আকারে শিল্পায়ন হবে, লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। মানুষের আয় বাড়বে এবং জীবন-জীবিকায় পরিবর্তন আসবে। এছাড়া এই অঞ্চলের বিশেষ করে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকাগুলোতে কমিউনিউটি ট্যুরিজমের ব্যাপক উন্নতি হবে।
দক্ষিণের পর্যটন বিকাশ
কুয়াকাটা একদিকে যেমন সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ করে দেবে অন্যদিকে খুব কম সময়ে সুন্দরবনের অন্যতম আকর্ষণীয় স্পট-কচিখালী, কটকা সৈকত, জামতলা সি-বিচ, সুন্দরবন সংলগ্ন সাগরে জেগে ওঠা দ্বীপ পক্ষীর চর, ডিমের চর ঘুরে দেখার অপার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। কটকাতে হরিণপালের বিচরণ দেখতে অনেকেই ছুটে যান সেখানে। খুলনা শহর থেকে নদী পথে কটকা যেতে হলে সময় লাগে ১৫ ঘণ্টার মতো, আর মংলা থেকে সময় লাগে ১২ ঘণ্টা।
তবে কুয়াকাটা থেকে কটকায় পৌঁছাতে সময় লাগে মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টার মতো। খুলনা থেকে ওই স্পটে যেতে হলে রাত্রিযাপন ছাড়া ফিরে আসা সম্ভব না। কিন্তু কুয়াকাটা থেকে সকালে গিয়ে কয়েক ঘণ্টা হরিণের সান্নিধ্যে কাটিয়ে সন্ধ্যায় ফিরে আসা সম্ভব।
কুয়াকাটা
কুয়াকাটার পশ্চিম দিকে সুন্দরবন যেমন পর্যটকদের হাতছানি দেয় তেমনি পূর্ব দিকেও রয়েছে পর্যটনের বিশাল ভা-ার। যার কথা মাথায় এলেই পর্যটকদের মন আনচান করে ওঠে। কিন্তু সময়ের অভাবে যেতে পারেন না অনেকে। সেই পর্যটন ভা-ার চর কুকরি মুকরি, ঢাল চর, চর নিজামও কুয়াকাটার হাতের নাগালেই।
ঢাকা থেকে রাতে গিয়ে দিনের বেলা ঘুরে পরের রাতেই ঢাকায় ফেরা সম্ভব হবে। ছুটির দিনটি দারুণভাবে উপভোগ করা যাবে সেখানে। আর যাদের সাপ্তাহিক ছুটি শুক্র-শনি, পদ্মা সেতু হলে তারা তো সোনায় সোহাগা। খরচও থাকবে সাধ্যের নাগালে।
শুধু কি সুন্দরবন, সাগরকন্যা কুয়াকাটার নিজেরও রয়েছে অপরূপ সৌন্দর্য। এখানে একদিকে যেমন রয়েছে সূর্যাস্ত উপভোগ করার সুযোগ, তেমনি রয়েছে অপরূপ সূর্যোদয়। রয়েছে সৈকতকেন্দ্রিক পর্যটকপ্রিয় কার্যক্রম। সৈকতের কিটকটে হেলান দিয়ে মুখে পুরতে পারবেন সাশ্রয়ী মূল্যে সামুদ্রিক মাছের ফ্রাই ও বারবিকিউ। বর্ষা মৌসুমে রাতের নির্জনতাকে এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেয় সাগরের গর্জন। প্রথমবার গেলে রীতিমতো বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিতে সক্ষম সমুদ্রের গগনবিদারি ডাক।
কুয়াকাটার গা ঘেঁষে অবস্থিত ফাতরার চর, লাল কাকড়ার চর, শুঁটকি পল্লি, লালদিয়ার চর, চর বিজয়, ফকিরহাট, সোনার চর, ক্র্যাব আইল্যান্ড বা কম কিসে? একটি স্পট থেকে আরেকটির প্রকৃতি ভিন্ন, রয়েছে ভিন্ন রকম জীব-বৈচিত্র্য। এক কথায় বলতে গেলে একটির চেয়ে আরেকটি বেশি আকর্ষণীয়। দারুণ সময় কাটাতে চাইলে এসব স্থানের জুড়ি মেলা ভার।
আরও অনেক স্পট রয়েছে যেগুলো পর্যটকদের কাছে দারুণ আকর্ষণীয়। নানান দিক বিবেচনায় পর্যটনের নতুন গন্তব্য মনে করা হচ্ছে কুয়াকাটাকে। শুধু কি সড়কপথ কুয়াকাটাকে কাছে এনে দিচ্ছে তা কিন্তু নয়। এর খুব কাছেই পায়রা বন্দরকে কেন্দ্র করে রয়েছে বিমানবন্দর তৈরির পরিকল্পনা।
সুন্দরবন
পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বা প্যারাবন আমাদের এই সুন্দরবন। রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও চিত্রল হরিণের আবাস্থল এ বনে। এছাড়া বঙ্গোপসাগরের প্রচ- ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে বেঁচে থাকার দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র রক্ষাকবচ সুন্দরবনের মতো এমন অন্যন্য সবুজ প্রাচীর বেষ্টনী পৃথিবীতে খুব কমই দেখা যায়।
সুন্দরবনের উদ্ভিদ ও প্রাণিকুলে রয়েছে এক অপূর্ব বৈচিত্র্যময় সামঞ্জস্য। সুন্দরবনসংলগ্ন সাগরের বুকে জেগে ওঠা কোনো নতুন দ্বীপে প্রাত্যহিক জোয়ার-ভাটার স্রোতে বয়ে উদ্ভিদের আগমন ঘটে তেমনি সেই নির্জন বনানীতে যথাসময়ে বন্যপ্রাণীদের আগমন ঘটে প্রাকৃতিক বিন্যাসেই।
উল্লেখযোগ্য স্পট
সুন্দরবন ভ্রমণে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য স্পট হলো- কটকা, কচিখালী, হিরণ পয়েন্ট, কোকিলমনি, তাম্বুলবুনিয়া, হাড়বাড়িয়া, করমজল। এছাড়া সুন্দরবন প্রবেশদ্বার থেকে শেষ পর্যন্ত সবটুকু দৃশ্যই আপনাকে মনোমুগ্ধ করে রাখবে এক নিবিড় আনন্দে।
প্রাচ্যের ভেনিস বরিশাল
প্রাচ্যের ভেনিস বরিশালেও অনেক পর্যটন স্পট রয়েছে। এই জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- দুর্গাসাগর, কালেক্টরেট ভবন, চাখার প্রতœতাত্ত্বিক জাদুঘর, রামমোহনের সমাধি মন্দির, সুজাবাদের কেল্লা, সংগ্রাম কেল্লা, শারকলের দুর্গ, গির্জামহল্লা, বেলস পার্ক, এবাদুল্লা মসজিদ, কসাই মসজিদ,গুটিয়া মসজিদ, অক্সফোর্ড গির্জা, পাদ্রিশিবপুর গির্জা, শংকর মঠ, চারণ কবি মুকুন্দ দাসের কালীবাড়ি, কবি জীবনান্দ দাশের বসতভিটা, একগম্বুজ মসজিদ, সাড়ে তিন মণ ওজনের পিতলের মনসা।
ভাসমান বাজার
বরিশাল বিভাগে কয়েকটি ভাসমান বাজার আছে, যা দেখলে ফিলিপাইনের কাবিয়াও বা থাইল্যান্ডের ড্যামনোয়েন সাদুয়াক বাজারের নাম মাথায় আসবে। তাজা শাকসবজি, ফলমূলের পসরা সাজানো থাকে এসব ভাসমান বাজারে। পিরোজপুরের ভাসমান পেয়ারা বাজার সেগুলোর মধ্যে একটি। পেয়ারার মৌসুমে এই ভাসমান বাজারে বেচাকেনা হয় সর্বোচ্চ।
ভাসমান পেয়ারার বাজারটি পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার অন্তর্গত স্বরূপকাঠির কীর্তিপাশা খালের ওপর অবস্থিত। সাধারণত পেয়ারার মৌসুম শুরু হয় জুলাই মাসে, চলে টানা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তাই পাইকারি বাজারের দেখা পেতে হলে সেখানে যেতে হবে জুলাইয়ের শেষ দিকের সময়টাতে।
আগে ঢাকা থেকে পেয়ারা বাজারে যেতে সময় বেশি লাগত। তবে পদ্মা সেতুর কল্যাণে দুই দিনের যাত্রা শেষ করা যাবে একদিনেই। এখন মাত্র ৬ থেকে ৮ ঘণ্টার বাস যাত্রায় যাওয়া যাবে পিরোজপুরে। অর্থাৎ, খুব ভোরে রওনা দিলে দুপুরের মধ্যেই দেখা যাবে বাজারের জমজমাট পরিবেশ।
বিগত কয়েক বছরে স্বরূপকাঠির ভিমরুলি গ্রামে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েই চলেছে। লঞ্চ যাত্রার জন্য, ঢাকা সদরঘাট থেকে রাত ৮টার সুরভী-৯ লঞ্চে গেলে বিকাল ৩ টার মধ্যেই পৌঁছানো যাবে বরিশালে। আর বাস যাত্রার জন্য, গাবতলী বাসস্ট্যান্ড অথবা অনলাইন থেকে টিকেট সংগ্রহ করে টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস, এমাদ পরিবহণ বাসে যাওয়া যাবে পিরোজপুরে।
খান জাহান আলীর মাজার ও ষাট গম্বুজ মসজিদ
দক্ষিণের আরেক পর্যটন গন্তব্য হলো খুলনার বাগেরহাটের খান জাহান আলীর মাজার শরিফ। বাগেরহাট শহর থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে এবং খুলনা থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত। এছাড়া বাগেরহাট জেলার দক্ষিণ-পশ্চিমে রয়েছে ষাট গম্বুজ মসজিদ। এটি বাংলাদেশের একটি প্রাচীন মসজিদ।
আর খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার দক্ষিণডিহিতে রয়েছে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুরালয়।
এছাড়া খুলনা অঞ্চল মৃৎশিল্পের খুবই বিখ্যাত। কালের আবর্তে হারিয়ে যেতে বসা ঐতিহ্যবাহী এই শিল্প নতুন করে ঘুরে দাঁড়াবে ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে।
দক্ষিণে বিলাসবহুল বাসযাত্রা
রাজধানী ঢাকা থেকে সরাসরি সড়ক পথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যোগাযোগের দ্বার উন্মোচিত হওয়ায় গাড়ির চাকার সঙ্গে ঘুরছে অর্থনীতিরও চাকা। পরিবহণ ব্যবসায়ীরাও চালু করেছেন নতুন নতুন বিলাসবহুল গাড়ি। রাজধানী থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ ঘণ্টায় পৌঁছানো যাচ্ছে দক্ষিণের ২১ জেলায়। বেনাপোল স্থল বন্দর, ভোমরা স্থল বন্দর, মংলা বন্দর, পায়রা বন্দর পৌঁছানো যাচ্ছে সহজেই। এ ছাড়া কুয়াকাটা-সুন্দরবনসহ পর্যটনখাতেও অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত থেকে বরিশাল যাওয়া যাচ্ছে সর্বোচ্চ ২ ঘণ্টায়, খুলনা ৩ ঘণ্টায় আর ফরিদপুর যেতে সময় লাগবে ৪৫ থেকে ৫০ মিনিট। সরাসরি বরিশাল থেকে ঢাকা যেতে সময় লাগছে মাত্র ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা।
পদ্মা সেতুর সুবাদে ঢাকা-খুলনা রুটে যুক্ত হয়েঠে বিলাসবহুল বাস। এ রুটে খুলনা থেকে বেশ কিছু নতুন বাস চালু হয়েছে। পদ্মা সেতু চালুর পরদিন থেকেই গ্রিন লাইন পরিবহণ খুলনা-ঢাকা রুটে চালু করেছে ৬টি নতুন বিলাসবহুল দোতলা বাস। এছাড়াও বিভিন্ন পরিবহণ সার্ভিস নতুন বাস চালু করেছে। তাছাড়া বিআরটিসিসহ বেশ কয়েকটি নতুন বাস সার্ভিস চালু করেছে।
গ্রিন লাইন ছাড়াও যেসব কোম্পানির বাস এসেছে তার মধ্যে রয়েছে ইলিশ, প্রচেষ্টা, এনা, সুপার সনি, গ্রিন সেন্ট মার্টিন, ইউনিক, ঈগলসহ অন্যান্য কোম্পানির বাস। সবগুলো বাসই শীততাপ নিয়ন্ত্রিত।
লঞ্চযাত্রায় করুণ চিত্র
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের বছর পার না হতেই মারাত্মক প্রভাব পড়েছে বরিশাল বিভাগের ১২টি নৌ-রুটে। লঞ্চ চলাচলের বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় রুট ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। যাত্রী সংকটের মধ্যে রয়েছে বরগুনা-পটুয়াখালীর মত জনগুরুত্বপূর্ণ রুটগুলো। এমনকি বরিশাল নদী বন্দরেও যাত্রীর খড়া নেমেছে।
লঞ্চ মালিকরা রোটেশন ব্যবস্থা চালু করে নিজেদের টিকিয়ে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালালেও যাত্রী ফেরাতে পারছেন না। সামনের ঈদেও কত সংখ্যক যাত্রী পাবেন তা নিয়ে শঙ্কা কাটছে না।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-বরিশাল নৌরুট এবং অভ্যন্তরীণ ১১টি রুটের মধ্যে ভান্ডারিয়া, টরকি, ঝালকাঠি এবং বরগুনা রুট যাত্রীর অভাবে সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া পটুয়াখালীর ৬টি রুটের মধ্যে ৫টি বন্ধ হয়ে গেছে। পটুয়াখালী থেকে দিনে একটি লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেলেও যাত্রীর সংকটে ঈদুল আজহার পরে সেটিও বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বরগুনা থেকেও মাত্র একটি লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে ছাড়ে। সেখানেও যাত্রী সংকটে প্রতিদিনের খরচ উঠছে না। পদ্মা সেতু চালুর পর যাত্রী সংকট হচ্ছে বলে লঞ্চ মালিকদের ভাষ্য।
এমতাবস্থায় লঞ্চ ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে বিকল্প রুট খোঁজার পাশাপাশি লঞ্চকে পর্যটক বাহন হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে। এর সঙ্গে সঙ্গে জড়িত সবার কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে হবে। যাত্রীবাহী লঞ্চকে পর্যটনবান্ধব করতে পারলে এই শিল্প ঘুরে দাঁড়াবে। পদ্মা সেতুর কারণে এই অঞ্চলের উন্নয়ন হবে। তবে পরিকল্পিত উন্নয়ন ঘটাতে পারলে পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন হবে।
এমতাবস্থায় লঞ্চ ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে বিকল্প রুট খোঁজার পাশাপাশি লঞ্চকে পর্যটক বাহন হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা হাতে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পর্যটন বিশেষজ্ঞরা। এর সঙ্গে জড়িত সবার কর্মসংস্থানের সৃষ্টির পাশাপাশি যাত্রীবাহী লঞ্চকে পর্যটনবান্ধব করতে পারলে এই শিল্প ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন তারা।
পর্যটন বিশেষজ্ঞ মহিউদ্দিন হেলাল বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে দক্ষিণবঙ্গের পর্যটন শিল্পে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফলে এই সেতু পর্যটন শিল্প বিকাশের সম্ভাবনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। তবে পরিকল্পিত উন্নয়ন ঘটাতে পারলে পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন হবে।