পর্যটন বিচিত্রা ডেস্ক
পাহাড়ি ঝরনা ও গিরিখাতের জন্য পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা। তবে এখানে ঝরনা ও গিরিখাত দেখতে এসে হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। বিশেষ করে মেলকুম গিরিখাতে প্রবেশ করে পর্যটকরা বারবার পথ ভুল করে হারিয়ে যাচ্ছেন। এমন অবস্থায় মেলকুম গিরিখাতে পর্যটকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
সোমবার (১৫ মে) চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের পক্ষ থেকে মেলকুম প্রবেশ পথে পর্যটকদের নিষিদ্ধ করে সতর্কীকরণ নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জের সোনাপাহাড় এলাকায় অবস্থিত ঝুঁকিপূর্ণ মেলকুম গিরিখাত। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, রিজার্ভ ফরেস্ট এলাকায় মেলকুম ঝিরির প্রবেশ পথে মীরসরাই বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা শাহ নেওয়াজ নওশাদ, জোরারগঞ্জ ও হিঙ্গুলী বনবিট কর্মকর্তা মো. একরাম হোসেনসহ কয়েকজন বনবিভাগের কর্মকর্তা পর্যটকদের বিপজ্জনক মেলকুম ঝিরিপথে যাওয়ার জন্য নিষেধ করছেন।
কেউ কেউ শুনলেও অনেক পর্যটক বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করে মেলকুম ঝিরিপথে পৌঁছাচ্ছেন। এতে গহীন পাহাড়ে আলো আঁধারির মেলকুমে যাওয়া আসার পথে বিভিন্ন ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে পর্যটকরা। পাহাড়ের মধ্যে বনবিভাগের বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুনে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি লেখা দেখা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেলকুম এলাকাটি সম্পূর্ণ রিজার্ভ বনভূমি। বিপজ্জনক ট্রেইল নামেও পরিচিত। গত ১৪ মার্চ ও ২৪ এপ্রিল দুইটি দলে আসা ১০ জন পর্যটক পথ ভুলে গহীন জঙ্গলে হারিয়ে যায়। পরে জাতীয় সেবা ৯৯৯ কল দিলে ভীতসন্ত্রস্ত পর্যটকদের গভীর রাতে উদ্ধার করে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। সরকারিভাবে পর্যটন এলাকা হিসেবে স্বীকৃত কিংবা ইজারা না দেওয়া সত্ত্বেও পর্যটকরা স্থানীয় গাইড ছাড়া বিপজ্জনক মেলকুমে প্রবেশের ফলে বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ঘটছে।
স্থানীয় মহিউদ্দিন মেম্বার জানান, আলো আঁধারির ভয়ংকর মেলকুমে অনেকে যেতে ভয় পেত। এলাকার সাহসী বয়োজ্যেষ্ঠরা কূপে মেল লতার রস ঢেলে দিলে মাছ মৃত কিংবা সংজ্ঞা হারিয়ে ঝিরিপথে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ত। এভাবে মাছ শিকারের জন্য মেল লতার ব্যবহার করতে করতে এই কূপ পরিচিতি পায় মেলকুম নামে।
এ বিষয়ে মীরসরাই বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা শাহ নেওয়াজ নওশাদ বলেন, এটি বনবিভাগের রিজার্ভ জায়গা; যা জনসাধারণ প্রবেশ নিষেধ থাকলেও অনেকে তা মানছেন না। আমরা বিভিন্ন সময় ব্যানার ফেস্টুন সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি লেখা দিয়ে সর্তক করছি। যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে বিট কর্মকর্তারা সব সময় পর্যটকদের মেলকুম গিরিপথে যাওয়ার জন্য নিষেধ করছেন।