ঈদুল ফিতরের ছুটির আমেজ শেষ না হতেই ফের কুয়াকাটায় পর্যটকের ঢল নেমেছে। ঈদের পর টানা তিন দিনের ছুটি পেয়ে ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে যান সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের বেলাভূমিতে।
শুক্র-শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি এবং এর একদিন আগে বৃহস্পতিবার বুদ্ধ পূর্ণিমার সরকারি ছুটি ছিল। সব মিলিয়ে টানা তিন দিনের ছুটিতে কর্মজীবীরা কুয়াকাটায় ভিড় জমান। পর্যটকদের পদচারণায় মুখর ছিল কুয়াকাটার সবগুলো পর্যটন স্পট।
কুয়াকাটা সৈকতে নানা বয়সের হাজারো পর্যটক তীরে নেচে-গেয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেন। রোদ ও মেঘের প্রকৃতিতে সমুদ্রের নোনা পানিতে গা ভাসিয়ে ভ্যাপসা গরমে একটু প্রশান্তির পরশ নিতে দেখা গেছে অনেককে। কেউ কেউ ওয়াটারবাইকে গভীর সমুদ্রে গিয়ে সৌন্দর্য উপভোগ করেছেন।
আবার কেউ ভাসমান টিউব নিয়ে সাগরের নোনাজলে সাঁতার কেটেছেন। ঘোড়ায় চড়ে সৈকতে ঘুরছেন এবং ছবি তুলছেন তার সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। অনেকে আবার মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে ৩০ কিলোমিটার সৈকত চষে বেড়িয়েছেন।
বয়স্ক পুরুষ-নারী পর্যটকরা সৈকতের ছাতার নিচে বেঞ্চিতে বসে সমুদ্রের তীরে আছড়েপড়া ঢেউ উপভোপ করছেন। সৈকতের বালিয়াড়িতে ভিজা বালু দিয়ে পিরামিড তৈরি করে নিজেকে বন্দী করছেন ক্যামেরার ফ্রেমে নানা বয়সের পর্যটক।
সৈকতের জিরো পয়েন্ট এলাকার পাশাপাশি রাখাইন পল্লি, রাখাইন মহিলা মার্কেট, শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, মিশ্রিপাড়া সীমা বৌদ্ধ বিহার, ঝাউবাগান, গঙ্গামতির লেক, গঙ্গামতিরচর, কাউয়ারচর, লাল কাকড়ার চর, লেম্বুরবন, আন্ধারনামিক নদীর মোহনা, ফরাতারবনসহ দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে বেড়ান পর্যটকরা।
এদিকে আবাসিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্টগুলোতে আশাতীত বুকিং ছিল। ঝিণুক মার্কেট, খাবার হোটেল, রেস্টুরেন্টসহ পর্যটন নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠাগুলোতে বেচাকেনার ধুম ছিল চোখে পড়ার মতো।
সৈকতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলেন, ঈদের আমেজ কাটতে না কাটতেই তিনদিনের ছুটিতে ফের প্রচুর পর্যটক এসেছেন কুয়াটায়। বেচাকেনা ভালো হচ্ছে।
আবাসিক হোটেল মালিকরা জানান, বৃহস্পতি-শুক্রবার তাদের হোটেলের সবগুলো কক্ষ পর্যটক ছিল।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ও আবাসিক হোটেল সৈকতের মালিক শেখ জিয়াউর রহমান বলেন, তিন দিনের ছুটিতে আশানুরূপ পর্যটক কুয়াকাটায় এসেছেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের ইনচার্জ হাসনাইন পারভেজ জানান, টানা তিন দিনের ছুটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সেবা নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ তৎপর সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। সবগুলো স্পটে নিরাপত্তা জোরদার রয়েছে।