রংপুর সদর উপজেলার মাহিগঞ্জে এই প্রাচীন মসজিদটির অবস্থান। আগাছা ও শ্যাওলায় ঢাকা কালের সাক্ষী মসজিদটি এখন পরিত্যক্ত। আয়তাকার এই মসজিদটি উত্তর-দক্ষিণে ৯.৭৫ মিটার (৩২ ফুট) লম্বা এবং ৪ মিটার (১৩ ফুট) প্রশস্ত। মাটি থেকে কার্নিশের উচ্চতা ৩ মিটার (১০ ফুট)। পূর্বের দেয়ালে তিনটি অর্ধবৃত্তাকার খিলানাকৃতি প্রবেশপথ এবং পশ্চিম দেয়ালে অবতলাকৃতির তিনটি মেহরাব রয়েছে। এছাড়াও উত্তর ও দক্ষিণ দেয়ালের পশ্চিম কোণে দুটি কুলঙ্গি রয়েছে। মসজিদের ভেতরে রয়েছে তিনটি গম্বুজ। এছাড়াও চার কোনায় চারটি বুরুজ আছে। স্থাপত্যশৈলী দেখে এটি প্রাক মোগল যুগের বলে অনুমিত হয়।
ঐতিহাসিক সূত্র মতে, ১২০৪ সালে বঙ্গ বিজয়ের দু’বছর পর বখতিয়ার খলজি তিব্বত অভিযানকালে ঘোড়াঘাট থেকে কামরূপ যাওয়ার পথে রংপুরের ঘাঘট নদীর পশ্চিম পাড়ে যাত্রা বিরতি করেন। সে ঘটনার সাক্ষী হিসেবে আজও টিকে আছে ‘বখতিয়ারপুর’ নামের গ্রামটি। মধ্যযুগে রংপুরের প্রাণকেন্দ্র মাহিগঞ্জে বখতিয়ার খলজির বাংলা বিজয়ের পর নিজে বা তার নিযুক্ত শাসকরা সেসময় এই ছোট্ট মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন বলে এলাকাবাসীর ধারণা। শিলালিপি না পাওয়ায় বখতিয়ারি মসজিদের সঠিক নির্মাণকাল সম্পর্কে জানা যায় না। তবে এর প্রত্নতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে এটা ধারণা করা যায় যে. এটি সুলতানি আমল বা তারও পূর্বে বখতিয়ার খলজির আমলে নির্মিত হয়ে থাকলে তা আটশ বছরের পুরাতন হবে।