পর্যটন বিচিত্রা প্রতিবেদন
আছরাঙ্গা দিঘি বাংলাদেশে এক ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা নিষ্কলুষ একটি জলাধার, যেখানে ৯ম শতকের খননের ইতিহাস, মিষ্টি পানির আচার-ব্যবহার, ও প্রকৃতির বিশুদ্ধতা আজও মিশে আছে। ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এটি চমৎকার এক বিকল্প: ঐতিহাসিক আভা, পাখিবিশেষ এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ উপভোগের জন্য দারুণ জায়গা।
জনশ্রুতি আছে যে, আদিকালে অগ্রহায়ণ মাসে আমন ধানের ক্ষেত পেকে লাল রঙ ধারণ করত বলেই এই এলাকার নাম ক্ষেতলাল হয়েছে। এর মোট আয়তন ২৫.৫০ একর। ধারণা করা হয় প্রায় ১২০০ বছর পূর্বে ১১০০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ১০৭০ ফুট প্রস্থবিশিষ্ট এ দিঘিটি খনন করা হয়। চারদিকে বাঁধাই করা ঘাট রয়েছে এবং চারপাশে ছড়া বন, গাছপালা ও স্বচ্ছ পানির প্রাকৃতিক দৃশ্য ঝলমল করছে। শীতে বিভিন্ন অতিথি-পাখি আনে, এলাকার পরিবেশে কলকাকলির ধ্বনি ভরিয়ে তোলে।
স্থানীয় একটা বিশ্বাস অনুসারে, দীঘির পানি “কাকচক্ষু” (crow’s eye) মতো স্বচ্ছ ও মিষ্টি হওয়ায়, ঐতিহাসিকভাবে চিকিৎসা ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্টানেও ব্যবহৃত হতো। দিঘিটির চারপাশে চারটি বাধাই করা ঘাট আছে। শীতকালে বিভিন্ন প্রকার অতিথি পাখির আগমনে দিঘিটি হয়ে উঠে কলকাকলিতে ভরপুর। দিঘিটির চারদিকের অসংখ্য গাছ-পালা এবং এর স্বচ্ছ পানি এক মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশের সৃষ্টি করেছে যা সকলকে আকৃষ্ট করে।

প্রতি বছর অসংখ্য ভ্রমণপিপাসু লোকের এখানে সমাগম ঘটে। ১৯৯২ সালে এ দিঘিটি পুনরায় খনন করা হয় এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া নিজ হাতে দিঘিটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে উদ্বোধন করেন। এ দিঘিটি খনন কালে ১২টি মূর্তি পাওয়া গেছে যা বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। বর্তমানে দিঘিটির চর্তুদিকের পাড়ে একটি পাকা রাস্তা তৈরির কাজ চলছে।