বাংলাদেশ নয় বরং পৃথিবীর অসংখ্য সমুদ্র প্রেমীদের প্রিয় গন্তব্যস্থল কক্সবাজার। শুধু বঙ্গোপসাগরের প্যানোরামাকে চোখে ধারণ করেই কাটিয়ে দেওয়া যায় পুরো একটি বিকেল। এমন প্রশান্ত দৃশ্যকল্পের সবটুকুই দৃষ্টিগোচর হয় ইনানী সৈকতে।
ইনানী সমুদ্রসৈকতের অবস্থান
কক্সবাজারের অন্তর্গত উখিয়া উপজেলায় অবস্থিত সৈকত ইনানী। কক্সবাজার সদর থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দক্ষিণের এই প্রবাল সৈকতটিতে পৌঁছাতে হিমছড়ি ছাড়িয়ে আরও ১৫ কিলোমিটার যেতে হবে। ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সৈকতের আরও একটি নাম পাথুরে সৈকত।
ঢাকা থেকে কক্সবাজার ইনানী সমুদ্রসৈকত যাওয়ার উপায়
বাসযাত্রার ক্ষেত্রে সরাসরি কক্সবাজারের বাস পাওয়া যাবে ঢাকার গাবতলী, কল্যাণপুর,যাত্রাবাড়ী,ফকিরাপুল অথবা কলাবাগান থেকে। বাস কোম্পানি এবং ধরণ (এসি/নন-এসি) ভেদে প্রতি জনের জন্য ভাড়া পড়তে পারে ৯০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা। এভাবে কক্সবাজার যেতে সময় লাগতে পারে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা।
যারা ট্রেনে যেতে ইচ্ছুক তাদের বিমানবন্দর বা কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে কক্সবাজারের ট্রেন ধরতে হবে। বিভিন্ন ধরনের সিটে যাত্রীপ্রতি ভাড়া পড়বে ন্যূনতম ৬৯৫ থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩৮০ টাকা। রেলপথে কক্সবাজার পর্যন্ত যেতে প্রায় ৯ ঘণ্টা সময় লাগবে। এছাড়া কক্সবাজারের সরাসরি বিমানও রয়েছে, যেগুলো গন্তব্যে পৌঁছাতে সময় নেয় মাত্র ১ ঘণ্টা।
কক্সবাজার থেকে ইনানী যেতে হয় মেরিন ড্রাইভ সড়ক দিয়ে। এর জন্য চাঁদের গাড়ি, ছাদ খোলা জিপ, ট্যুরিস্ট জিপ ও মাইক্রোবাসের মতো বিভিন্ন ধরনের স্থানীয় পরিবহন রয়েছে। এগুলো সবই সুগন্ধা পয়েন্টে ভিড় করে থাকে। ১০ থেকে ১২ জনের বড় গ্রুপ হলে ইনানী যাওয়ার জন্য পুরো একটি চান্দের গাড়ি রিজার্ভ নেওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে খরচ হতে পারে ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। একটানা ভ্রমণে ইনানী বিচ পর্যন্ত যেয়ে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে ঘুরে আসা সম্ভব।
এছাড়া রয়েছে অ্যাকোয়াহলিক ট্যুরিস্ট ক্যারাভান নামে ছাদ খোলা ডাবল ডেকার বাস। শুধু মেরিন ড্রাইভে যাতায়াতের উদ্দেশ্যে বানানো এই পরিবহনে করে বেশ আরামদায়কভাবে ইনানী পর্যন্ত যাওয়া যায়।
ইনানী সৈকতের প্রধান পর্যটন আকর্ষণ
৮০ কিলোমিটারের মেরিন ড্রাইভ সড়কে সর্বাধিক সুন্দর দর্শনীয় স্থান হচ্ছে ইনানী বিচ। এখানকার বিশেষত্ব হচ্ছে ভাটার সময় সৈকত জুড়ে প্রবাল পাথর এবং শান্ত সাগর। জোয়ারের সময় এই পাথরগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। পাথরগুলোর সর্বাঙ্গ জুড়ে থাকে ধারালো ঝিনুক আর শামুক।
এখানকার শান্ত পরিবেশে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের দৃশ্য দেখার অভিজ্ঞতা আর কোনো সৈকতে পাওয়া যায় না। এছাড়াও দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য এখানে নানান ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে।