পর্যটন বিচিত্রা প্রতিবেদন
বর্তমানে এই ঐতিহাসিক দুর্গ বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। ২০০৫-এর ১২ জুন স্থানীয় প্রশাসন দুর্গের ভেতরের দরবার কক্ষটি সংস্কার করে স্থাপন করে জাদুঘর ও পাঠাগার। নতুন সংস্কারকৃত কক্ষটিকে ‘ঈশা খাঁ স্মৃতি জাদুঘর ও পাঠাগার’ নাম দিয়ে উন্মুক্ত করা হয় দর্শনার্থীদের জন্য।
দুর্গটিকে দুটি চত্বরে ভাগ করেছে এর উত্তর-দক্ষিণে গড়া লম্বা ইটের প্রাচীর। স্থানীয়দের কাছে প্রাচীরটি ‘প্রাসাদ প্রাচীর’ নামে পরিচিত। দক্ষিণের তোরণের সামনের দিকে রয়েছে ‘করাচি’ নামের পূর্বমূখী একটি একতলা ভবন। আর পেছন দিকের দক্ষিণ মুখী এক তলা ভবনটির নাম ‘অন্দর মহল’। পুরো ইটের দেওয়ালটি চুনকামসহ লেপনে আবৃত। দক্ষিণ, পশ্চিম ও উত্তর দিকে খনন করা গভীর পরিখাটি পূর্বদিকে মিলিত হয়েছে নরসুন্দা নদীর সঙ্গে। বাড়ির সামনে রয়েছে ঈশা খাঁর আমলে খনন করা একটি দিঘি।
প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত দরবার হলের গায়ে এখনো দেখা যায় সে সময়ের বিভিন্ন নকশা। এ অংশেই করা হয়েছে জাদুঘর ও পাঠাগারটি। এখানে স্থান পেয়েছে ঈশা খাঁর ছবি, তার ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র এবং বংশধরদের তালিকা।
এখানকার সবচেয়ে মনোরম অবকাঠামো হচ্ছে প্রাচীন মসজিদটি। এর নির্মাণ কবে হয়েছে তা নিয়ে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে ধারণা করা হয়, এটি ঈশা খাঁই বানিয়েছিলেন। ৪৪ ফুট লম্বা ও ১৮ ফুট চওড়া এই আয়তকার মসজিদের ছাদে রয়েছে তিনটি বড় বড় গম্বুজ। প্রত্যেক কোণের মিনারগুলো মসজিদের শোভা বাড়াচ্ছে। প্রায় ৪ ফুট মোটা দেয়ালের এই মসজিদের পূর্বে দেখা যায় ১১ ফুট খোলা একটি বারান্দা।
কিভাবে যাবেন
এই দুর্গ দেখতে হলে যেকোনো স্থান থেকে প্রথমে যেতে হবে কিশোরগঞ্জ জেলা সদরে। সেখানে শহরের একরামপুর মোড়ের উদ্দেশ্যে উঠে পড়তে হবে রিকশা বা ইজিবাইকে। ইজিবাইকের খরচ হতে পারে মাথাপিছু ১০ টাকা, আর রিকশায় গেলে ২৫ টাকা।
আশেপাশের দর্শনীয় স্থান
শুধুমাত্র ডে-ট্যুরের মতো ঝটিকা সফর না দিয়ে হাতে বেশ কিছু সময় নিয়ে জঙ্গলবাড়ি দুর্গ ভ্রমণে যাওয়া যেতে পারে। কেননা এর কাছাকাছি রয়েছে কবি চন্দ্রাবতী মন্দির, মিঠামইন হাওর ও নিকলী হাওর, ঈশা খাঁর এগারসিন্দুর দুর্গ, কিশোরগঞ্জ লেক ওয়াচ টাওয়ার, ও গাঙ্গাটিয়া জমিদার বাড়ির মতো জনপ্রিয় পর্যটন স্থান।