বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি বাংলাদেশের একমাত্র বাস্তবায়িত কয়লা খনি। এটি দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অবস্থিত। এটি আবিষ্কৃত হয় ১৯৮৫ সালে। এর আয়তন ৬.৬৮ বর্গ কিলোমিটার। এই অঞ্চলে কয়লা মজুদের পরিমাণ ৩৯০ মিলিয়ন মেট্রিক টন। এখানে বিটুমিনাস কয়লা পাওয়া যায়। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির প্রকল্প ব্যয় ২৫১.০৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর থেকে প্রাপ্ত কয়লা দিয়ে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।
ব্রিটিশ ভারত ভাগের পূর্বে, মেঘালয়ের গারো পাহাড় থেকে পূর্ব বঙ্গের মধ্য দিয়ে কয়লা পরিবহন করা হত ও বাণিজ্য করা হত। পরে ঢাকায় একটি খনি অফিস খোলা হয় এবং ভারতের ব্রিটিশ রেল নেটওয়ার্ক বাণিজ্যের বিষয়টি নিয়ে সহায়তা করে। ১৯৬১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে, পাকিস্তানের ভূতাত্ত্বিক জরিপ কর্তৃপক্ষ জাতিসংঘ-পাক খনিজ জরিপ প্রকল্প শুরু করে। ১৯৬২ সালের জরিপে দেখা যায়, সুনামমগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জে ১.০৫ মিলিয়ন টন কয়লা রয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৮৫ সালে, বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর দিনাজপুরে কয়লা আবিষ্কার করে। বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর ১৯৮৯ সালে রংপুর জেলার খালাশপিরে একটি এবং ১৯৯৫ সালে দিঘিপাড়ায় একটি কয়লাক্ষেত্র আবিষ্কৃত। বহুজাতিক বিএইচপি ১৯৯৭ সালে ফুলবাড়ি কয়লাক্ষেত্র আবিষ্কার করে।
কয়লা উত্তোলনের জন্য বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি কোম্পানি চীনের কোম্পানি সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন চুক্তি করে। ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির অভ্যন্তর থেকে বাণিজ্যিকভাবে কয়লা উৎপাদন শুরু হয়। এই কয়লাখনিতে মোট কয়লার মজুত প্রায় ৩০ কোটি টন, যা প্রায় ৬৫০ হেক্টর এলাকাব্যাপী বিস্তৃত। এলাকাটি তিনটি অংশে বিভক্ত, উত্তর এলাকা (২৭০ হেক্টর), মধ্য এলাকা (৩০০ হেক্টর) ও দক্ষিণ এলাকা (৮০ হেক্টর)।