গোর-এ-শহীদ ঈদগাহ ময়দান বাংলাদেশের দিনাজপুরের অবস্থিত একটি ঈদগাহ ময়দান। এটি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় ঈদগাহ ময়দান। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় হতে এ মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে স্থায়ী কোনো মিম্বার সেখানে নির্মাণ করা হয়নি। জেলা প্রশাসন স্থায়ী ঈদগাহ মিম্বার নির্মাণ কাজ শুরু করেছিল ২০১৫ সালে। ঈদগাহটির পরিকল্পনা ও অর্থায়ন করেছেন দিনাজপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম।
২০১৭ সালে বাংলাদেশের বৃহত্তম ঈদ-উল-ফিতরের জামাত এখানে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ২০১৭ সালে দেশের ৫ম বৃহৎ ঈদ-উল-ফিতর জামাত ৮:৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয় যেখানে প্রায় ৬০০,০০০ মুসুল্লি অংশ নেয়। ঈদগাহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা ছাড়াও আশপাশে ৫ শতাধিক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল। ৬ষ্ঠ তম-উল-আযহার বৃহত্তম জামাত সকাল সাড়ে ৮ টায় দিনাজপুরের গোর-ই-শহীদ ঈদগাহ ময়দানে প্রায় ৪ লক্ষ মুসল্লীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়।
ঈদগাহটি তৈরি করা হয়েছে মোগল স্থাপত্যরীতিতে। মেহরাবের উচ্চতা ৫৫ ফুট। ৫২ গম্বুজবিশিষ্ট এই ঈদগাহে রয়েছে দুটি মিনার, যাদের প্রতিটির উচ্চতা ৬০ ফুট। মাঝের গেট দুটি ৪৭ ফুট করে চওড়া। এতে খিলান আছে ৩২টি। ঈদগাহ তৈরিতে রড, সিমেন্ট, বালু ছাড়াও সিরামিক টাইলস ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিটি গম্বুজে আছে বৈদ্যুতিক সংযোগ। সন্ধ্যার পর থেকেই মিনারে নান্দনিক আলো জ্বালানো হয়। ঈদগাহ মাঠের দুধারে করা হয়েছে ওজুর ব্যবস্থা। ইসলামী ভাবগাম্ভীর্যে সমৃদ্ধ ইরাকের মসজিদে নববি, কুয়েত, ভারত, ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের স্থাপনার আদলে এর আকৃতি দেওয়া হয়েছে। এই ঈদগাহ নির্মাণে প্রায় ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে।
এই ঈদগাহে ৭ লাখ মানুষ একসঙ্গে ঈদের নামাজ পড়তে পারে। ২০১৭ সালে গোর-ই শহীদ ময়দানে ঈদের প্রথম জামাতে প্রায় চার লাখ লোকের সমাগম হয়। কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ার ঈদগাহে একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন দেড়লাখ থেকে দুই লাখ। তবে এখন মাঠের বাইরে রাস্তাঘাটে, বাড়িঘরের উঠানেও জামাত হয়। তাতে তিন লাখ পর্যন্ত লোক সমাগম হয়। শোলাকিয়া ঈদগাহের আয়তন সাত একর। অন্যদিকে দিনাজপুর গোর-ই শহীদ বড় ময়দানের আয়তন ২২ একর, তিনগুণেরও বেশি। সে হিসাবে এটি দেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ।