মহাস্থানগড়ের প্রধান আকর্ষণ হলো তার বৌদ্ধ বিহার। এটি একটি গোপুরের মতো স্থানের উপর অবস্থিত ছিল এবং এটি একটি প্রাচীন বৌদ্ধ স্থান ছিল, যেখানে বৌদ্ধ বিভাগের ব্রাহ্মণ গোত্রের শিষ্য বা পরিচারকদের অধিকাংশই শিক্ষা পেতেন। এছাড়াও, এই স্থানটি অনেক প্রাচীন মহিষমারী বা গ্রব এলাকা হিসেবেও পরিচিত।
প্রাচীন দুর্গ শহর: মহাস্থানগড় একটি প্রাচীন দুর্গ শহর, যার চারপাশে বিশাল পাথরের প্রাচীর রয়েছে। প্রাচীরের অভ্যন্তরে রয়েছে বিভিন্ন ধ্বংসাবশেষ, প্রাচীন রাস্তা এবং আবাসিক স্থাপনার নিদর্শন।
গোকুল মেধ: মহাস্থানগড়ের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হলো গোকুল মেধ, যা একটি প্রাচীন বৌদ্ধ স্তূপ হিসেবে পরিচিত। এটি একটি টেরেসে স্থাপিত এবং খননকাজের মাধ্যমে এর বিভিন্ন স্তর উন্মোচিত হয়েছে।
মাজার: মহাস্থানগড়ে হযরত শাহ সুলতান বলখী মাহিসাওয়ার (রহঃ) এর মাজার রয়েছে, যা একটি পবিত্র স্থান হিসেবে পরিগণিত।
জিয়ৎকুণ্ড: জিয়ৎকুণ্ড মহাস্থানগড়ের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান, যা একটি প্রাচীন পবিত্র কূপ হিসেবে পরিচিত। মহাস্থানগড়ে প্রত্নতাত্ত্বিক খননকাজের মাধ্যমে বিভিন্ন নতুন নিদর্শন উন্মোচিত হচ্ছে, যেমন প্রাচীন মুদ্রা, পাত্র, এবং স্থাপত্য নিদর্শন।
পাথরের প্রাচীর: মহাস্থানগড়ের প্রাচীর পাথর এবং ইট দিয়ে নির্মিত, যা তার স্থাপত্যশৈলীর অনন্যতা তুলে ধরে। প্রাচীরের উচ্চতা এবং প্রস্থ এই স্থানটির প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা প্রদর্শন করে।
প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ: মহাস্থানগড়ের অভ্যন্তরে প্রাচীন বসতি, ধর্মীয় স্থাপনা, এবং অন্যান্য নির্মাণের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে যা এটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব প্রদর্শন করে।
করতোয়া নদী: মহাস্থানগড় করতোয়া নদীর তীরে অবস্থিত, যা এই স্থানটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। নদীর তীরবর্তী অঞ্চলটি সবুজে ভরপুর এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা।
খোলা প্রান্তর: মহাস্থানগড়ের আশেপাশে খোলা প্রান্তর এবং মাঠ রয়েছে, যা ভ্রমণকারীদের একটি প্রশান্তিপূর্ণ অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
প্রাচীন রাজধানী: মহাস্থানগড় প্রাচীন পুন্ড্রবর্ধনের রাজধানী ছিল, যা এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব বৃদ্ধি করে। এখানে খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতাব্দী থেকে বসবাসের প্রমাণ পাওয়া যায়।
মধ্যযুগের বৌদ্ধ সংস্কৃতি: মহাস্থানগড়ে বিভিন্ন বৌদ্ধ স্তূপ এবং মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে, যা এর বৌদ্ধ সাংস্কৃতিক ইতিহাস তুলে ধরে।
সার্বিকভাবে, মহাস্থানগড় একটি প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান যা বাংলাদেশের ইতিহাস এবং সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, এবং ঐতিহাসিক গুরুত্ব একে ভ্রমণকারীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্যস্থল করে তুলেছে।