লেখকঃ মামুন আব্দুল কাইউম
ইকোট্যুরিজমে স্থানীয় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকায় তারা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয় এবং অর্জিত আয়ের একটি অংশ ঐ এলাকার পরিবেশের উন্নয়ন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের পাশাপাশি পরিবেশ বান্ধব পর্যটনের বিকাশে ব্যবহার হয়ে থাকে। পর্যটন বিচিত্রা দেশের পর্যটন উন্নয়নের নানা বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। এরই অংশ হিসেবে টাঙ্গুয়ার হাওরে ইকোট্যুরিজম নিয়ে এবারের প্রতিবেদন।
বিশ্বের সর্বাধিক বৃষ্টিবহুল অঞ্চল চেরাপুঞ্জির খুব কাছেই অবস্থিত রামসার সাইট টাঙ্গুয়ার হাওর। সিলেটের সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা ও তাহিরপুর উপজেলা অংশবিশেষ নিয়ে এ হাওরের অবস্থান। হাওরের চারপাশে রয়েছে ৮৮টি গ্রাম। ‘ছয় কুড়ি
যাতায়াত
ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ: সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন মামুন ও শ্যামলী পরিবহন এবং মহাখালী থেকে এনা পরিবহনের বেশ ক’টি ডে-নাইট বাস ছয় ঘন্টায় সরাসরি সুনামগঞ্জে যায়। সেখানে শহরে হোটেলে দুই বেডের একটি রুমের ভাড়া ৩০০-৪৫০ টাকা। আর এসির ভাড়া প্রায় দ্বিগুন। শহর থেকে সুরমা নদী পার হয়ে ওপারে গিয়ে বৈঠাখালি বা মনিপুর ঘাটে গেলে সেখান থেকে ভোর ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত যে কোন সময় মোটর সাইকেল বা লেগুনা ভাড়া করে তাহিরপুর যাওয়া যায়। এতে প্রায় এক ঘন্টা সময় লাগে। লেগুনাযোগে তাহিরপুর যেতে চাইলে সুনামগঞ্জ শহর সংলগ্ন সাহেববাড়ী ঘাট দিয়ে মনিপুর ঘাটে যেতে হবে। এতে প্রায় সময় লাগবে ২০ মিনিট। মনিপুর ঘাটে লেগুনা ও মোটর সাইকেল ভাড়ায় পাওয়া যায়। আর মোটর সাইকেলযোগে তাহিরপুর যেতে চাইলে সুনামগঞ্জ শহর সংলগ্ন মল্লিকপুর ঘাট দিয়ে পাঁচ মিনিটে সুরমা নদী পার হয়ে বৈঠাখালী ঘাটে পৌঁছে সেখান থেকে মোটর সাইকেল ভাড়া করে তাহিরপুর যাওয়াটা সহজ। এরপর তাহিরপুর থেকে দেশী ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভাড়া করে দু’ঘণ্টায় টাঙ্গুয়ার হাওরে যাওয়া যায়। তাহিরপুরে একমাত্র সরকারি ডাকবাংলোতে খুবই সীমিত সুবিধা রয়েছে।
টাংগুয়ার হাওর ভ্রমণকালে পরামর্শ
- ভ্রমণকালে নৌকায় ময়লা আবর্জনা জমিয়ে রাখার জন্য ঝুড়ি রাখতে হবে।
- কোনরূপ খাবারের অংশ বা উচ্ছিষ্ট, প্যাকেট, খোসা বা পাত্র হাওরের পানিতে ফেলা যাবে না।
- মাইক ব্যবহার করে বা অন্যকোন প্রকারে শব্দ তৈরি করা যাবে না
- রাতের বেলা অবস্থান করলে অস্বাভাবিক উজ্জ্বল আলো তৈরি করা যাবে না।
- পাখি বা বন্যপ্রাণী লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়া যাবে না কিংবা অন্য কোন প্রকারে এদের নিরাপদ অবস্থান ও চলাফেরায় বিঘ্নিত সৃষ্টি করা যাবে না।
- টাংগুয়ার মাছ, বন্যপ্রাণী বা পাখি ধরা যাবে না বা এদের জীবন হুমকির মধ্যে পড়ে এমন কোন কাজ করা যাবে না।
- টাংগুয়ায় কোন গাছপালা, বন জঙ্গল বা লতা পাতার ক্ষতিসাধন করা যাবেনা।
- টাংগুয়ায় শামুক, ঝিনুক বা অন্য কোন প্রকার জলজ বা স্থলজ প্রাণী/কীটপতঙ্গের ক্ষতিসাধন করা যাবে না।
- টাংগুয়ায় ভ্রমণকালে হাতে চালিত নৌকার ব্যবহার বাঞ্চনীয়।
- টাংগুয়ায় ভ্রমণকালে প্রতিটি দর্শনার্থী একজন প্রকৃতিপ্রেমীর মত বিনা উপদ্রপে প্রাকৃতিক রূপ উপভোগ করবেন এটাই প্রকৃতিবান্ধব পর্যটনের প্রত্যাশা।