■ পর্যটন বিচিত্রা প্রতিবেদন
স্বাধীনতার পর নীলসাগর নামে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে এবং বর্তমানে এখানে ব্যাপক সংস্কার করে ভ্রমণ পিপাসুদের চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতি বত্সর শীত মৌসুমে অসংখ্য অতিথি পাখির সমাগম ঘটে এই নীলসাগরে।
সদর উপজেলার জিরো পয়েন্ট চৌরঙ্গী মোড় থেকে উত্তর-পশ্চিম কোণে ১৪ কিলোমিটার দূরে গোড়গ্রাম ইউনিয়নের ধোবাডাঙ্গা মৌজায় ৫৩.৯০ একর জমির ওপর নীলসাগরের অবস্থান। এর জলভাগ ৩২.৭০ একর, এবং চারদিকের পাড়ের জমির পরিমাণ ২১ একরের মতো। আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম শতাব্দীর কোন এক সময়ে এ জলাশয়টির খননকাজ শুরু হয়েছিল। নীল সাগর ‘বিরাট দিঘি’ ও ‘বিন্না দিঘি’ নামেও পরিচিত। বিরাট দিঘির কালক্রমে এ দিঘিটি বিরাট দিঘি, বিল্টা দিঘি এবং অবশেষে বিন্না দিঘি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
কারো কারো মতে, রাজা বিরাট তার বিশাল গরুর পালের জন্য পানির সংস্থান করতেই এ দিঘি খনন করেন এবং তার কন্যা বিন্নাবতীর নামে এর নামকরণ করেন। পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালে নীলফামারীর তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক ও অবসর প্রাপ্ত সচিব এম.এ জব্বার কর্তৃক এই দিঘিকে পর্যটনক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত করতে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় ও নীলফামারীর নামানুসারে বিন্না দিঘির পরিবর্তে এর নামকরণ করা হয় নীলসাগর।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যই মূলত নীলসাগর বিখ্যাত। এর পাড়ে রয়েছে নারকেল, বনবাবুল, আকাশমণি, মেহগনি, শিশুসহ অজানা-অচেনা হরেকরকম ফুল ও ফলের সারি সারি বৃক্ষরাজি। পাশেই রয়েছে একটি ছোট পার্ক। ১৯৯৮ সালে এ এলাকাকে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়। ১৯৯৯ সালে তৎকালীন ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব রাশেদ মোশারফ এ অভয়ারণ্যের উদ্বোধন করেন। এখানে প্রতি বছর চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে সনাতন (হিন্দু) সম্প্রদায় বারুণী স্নান উৎসবের আয়োজন করে থাকে। দিঘির পাশেই সরকারের অনুদানে একটি রেস্টহাউজ স্থাপন করা হয়েছে।