লেখক: তানি ইয়াছমিন (প্রকাশনা সম্পাদক, বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটি)
পল্লী অঞ্চলটি মোটামুটি ২০ একর সীমানাজুড়ে ৮০০ থেকে ১৮০০ বর্গফিট আয়তক্ষেত্রে মোট ৪১৬টি প্লট রয়েছে এই পল্লীতে; যার মাঝে ৪০৭টি প্লটই তাঁতকার্যে সক্রিয়। এক একটি প্লটে তাঁতিরা অন্তত ১০টি করে তাঁতকল স্থাপন করতে পারে ও সাথে নিজেরাও বসবাস করতে পারে। এদের অধিকাংশই বুননে সম্পৃক্ত, কেউ কেউ আবার সুতো প্রক্রিয়াকরণের নানা কাজে লিপ্ত।
সরকারিভাবে নির্দেশনা আছে, এই শিল্পনগরীতে যারা বসবাস করবেন তাদের প্রতিটা ঘরেই তাঁতকল থাকা অত্যাবশ্যকীয়। সপ্তাহে একদিন দিনের প্রথম প্রহরে হাট বসে, সপ্তাহজুড়ে যার যা কাজ জমে হাটে নিয়ে আসেন । ভাঁজে ভাঁজে বিশেষ অর্ডারের কাজ তো আছেই, আছে স্থানীয় বিক্রয় কেন্দ্র, যেখানে পাইকারি ও খুচরা বেচাকেনা হয় ।
৪৮ ইঞ্চি প্রস্থে ১২ হাত লম্বায় জ্যামেতিক আঙ্গিকে নকশা খচিত একটি বস্ত্র হাত-পায়ের সাহায্যে বুনন করা তো নিশ্চয়ই এক বিস্ময়, তার চেয়েও বিস্ময়কর বিষয় হলো ৮-৯ বছরের শিশুরাও যখন এই অনিন্দ্য শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যায়! ছোট্টবেলা থেকেই পারিবারিকভাবেতারা ধীরে ধীরে দৃষ্টি, মেধা এবং মননের সমন্বয়ে জামদানি শিল্পে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হতে থাকে, আর দিনে দিনে এই অসাধারণ শিল্পের দক্ষ কারিগর হয়ে ওঠে । রূপগঞ্জের জামদানি পল্লীর সরল মানুষগুলোর অমায়িক আচার-ব্যবহার জামদানির মতই মায়াময় এবং শৈল্পিক । দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে নারী-পুরুষ একই কাতারে এই বহুল।
জনপ্রিয় কুঠির শিল্পের কাজে মনোনিবেশ করে থাকেন। পরিবারের প্রবীণ সদস্যটিও এ কাজে অংশগ্রহণ করেন । এই অনিন্দ্য সুন্দর বস্ত্রশিল্পটি ২০১৬ সালে প্রথম ইউনেস্কো থেকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে এবং তারই ধারাবাহিকতায় জামদানি হয় বাংলাদেশের অহংকার।