পর্যটন বিচিত্রা প্রতিবেদন
খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত সীমান্তের ওপারে ডাউকি পাহাড় থেকে নেমে আসা পিয়াইন নদীর প্রবাহে সৃষ্ট ঝরনাধারা জাফলংকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ এক লীলাভূমিতে পরিণত করেছে।
পিয়াইন নদীর তীরে স্তরে স্তরে বিছানো পাথরের স্তূপ জাফলংকে করেছে আকর্ষণীয়। একই সাথে ঝুলন্ত ডাউকি ব্রিজ, পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ হিমেল পানি, উঁচু পাহাড়, গহিন অরণ্য ও নিস্তব্ধ নিরবতার কারণে এলাকাটি পর্যটকদের দারুণভাবে আকৃষ্ট করে। এসব দৃশ্যপট দেখতে প্রতিদিনই দেশি-বিদেশি পর্যটকরা ছুটে আসেন এখানে। বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন এখানে একটি রেস্তোরাঁ এবং আবাসন সুবিধাদি নির্মাণ করেছে। জাফলং-এর শীত ও বর্ষা মৌসুমের রূপ ভিন্ন। বর্ষায় ধূলিধূসরিত পরিবেশ হয়ে উঠে স্বচ্ছ। খাসিয়া পাহাড়ের সবুজাভ চূড়ায় তুলার মতো মেঘরাজির বিচরণ এবং যখন-তখন অঝোর ধারায় বৃষ্টি ভিন্ন মাত্রা যুক্ত করে।
ঐতিহাসিক সূত্রে জানা যায়, হাজার বছর ধরে জাফলং ছিল খাসিয়া জৈন্তা-রাজার অধীন নির্জন বনভূমি। ১৯৫৪ সালে জমিদারি প্রথা বিলুপ্তির পর খাসিয়া জৈন্তা রাজ্যের অবসান ঘটে। অনেক আগে থেকেই ব্যবসায়ীরা পাথরের সন্ধানে নৌপথে জাফলং আসতে শুরু করেন। আশির দশকে সিলেটের সাথে জাফলং-এর ৫৫ কিলোমিটার সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে জাফলং-এর নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের কথা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পাশাপাশি প্রকৃতিপ্রেমীরাও জাফলংয়ে ভিড় করতে থাকেন। জাফলং এখন দেশের অন্যতম সেরা পর্যটন স্পট।