খাসিয়ারা মঙ্গোলীয় বংশোদ্ভূত উপজাতি। এদের গাত্র হরিদ্রাভ, নাক-মুখ চ্যাপটা, চোয়াল উঁচু, চোখ কালো ও ছোটো টানা এবং খর্বকায়। এরা বাংলাদেশের অন্যতম মাতৃতান্ত্রিক গোষ্ঠী। এককালে এই উপজাতিরা ছিল যাযাবর। তাদের আবাসস্থল উত্তর-পূর্ব ভারত। সমতল ও পাহাড়ি দু ধরনের জমিতেই খাসিয়া পুঞ্জি দেখা যায়। খাসিয়ারা গ্রামকে পুঞ্জি বলে। ১০ থেকে ১৫টি কিংবা তার অধিক পরিবার নিয়ে গঠিত হয় একটি পুঞ্জি।
পাহাড়-টিলা, ঝোপজঙ্গল এদের পছন্দনীয় পরিবেশ। কাঠ বা বাঁশের তৈরি মাচানের ওপর বাঁশের বেড়া বা মাটির দেয়াল এবং খড়ের ছাউনি দিয়ে ঘর বানায়। বারান্দাই বৈঠক ঘর হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বসত ঘরের সঙ্গেই রন্ধনশালা এবং সন্নিকটে থাকে পালিত শুকুরের খোঁয়াড়। পারিবারিক ঘরে যুবকদের ঠাঁই হয় না। তাদের থাকতে হয় দলবেঁধে নির্ধারিত ঘরে।
তাদের প্রিয় খাবারের নাম ‘ডরমিং’। তাদের প্রধান আয়ের মাধ্যম হলো পান ও ধান চাষ। তাদের পানকে বলা হয় খাসিয়া পান। খাসিয়া পান পাহাড়ি অঞ্চল ছাড়া আর কোথাও হয় না। খাসিয়া পুঞ্জিবাসীরা চা-গাছ, পান-সুপারি ও কমলালেবুর বাগান পরিচর্যাসহ পাতা ও ফল সংগ্রহ করে। আধুনিক সভ্যতার প্রভাবে খাসিয়া সমাজে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটছে। মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাও ক্রমে শিথিল হচ্ছে।