পর্যটন বিচিত্রা ডেস্ক
প্রাচীনকালে দীঘিটির দৈর্ঘ্য ছিল আধা মাইল, প্রস্থ ছিল আধা মাইল এর কিছু কম, অর্থাৎ আয়তন প্রায় ৫৮ একর ছিল। এই দিঘীর স্বচ্ছ জলের সৌন্দর্য মুগ্ধ করে আগত পর্যটকদের। এই দিঘীটি নিয়ে অনেক লোককথা প্রচলিত আছে। সেন বংশীয় রাজা অচ্যুত সেন গৌড়াধিপতি ফিরোজ শাহর করদ রাজা ছিলেন। তার রাজধানী ছিল কমলাপুর।
জানা যায়, ফিরোজ শাহের পুত্র বাহাদুর শাহ অচ্যুত সেন রাজার কন্যা অপরূপ সুন্দরী ভদ্রাবতীকে দেখে মুগ্ধ হন। তিনি তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু রাজা অচ্যুত সেন সম্মত না হওয়ায় বাহাদুর শাহ কমলাপুর আক্রমণ করে ভদ্রাবতীকে অপহরণ করে নিমগাছিতে নিয়ে যান। রাজা অচ্যুত সেন তার সৈন্যবাহিনীসহ বাহাদুর শাহকে আক্রমণ করেন। নিমগাছি প্রান্তরে ব্যাপক যুদ্ধ হয়। বাহাদুর শাহের মুষ্টিমেয় সৈন্য সেনরাজের বিরাট সৈন্যবাহিনীর কাছে যুদ্ধে (১৫৩২-৩৪ খ্রি.) পরাজয়বরণ করেন। রাজা অচ্যুত সেন যুদ্ধে জয়লাভ করে ভদ্রাবতীকে উদ্ধার করেন।
এ বিজয় গৌরবের স্মৃতি হিসেবে এবং পরকালের কল্যাণের জন্য তিনি নিমগাছির কাছে ‘জয়সাগার’ নামে এক দীঘি খনন করান। যুদ্ধজয়ের কারণেই দীঘিটির নাম হয় জয়সাগর। ৪ পাড়ে ২৮টি বাধা ঘাট দিয়ে জয়সাগর দীঘি তৈরি করা হলেও, বর্তমানে এ ঘাটের কোনো চিহ্ন নেই। বল্লাল সেনের বংশধর রাজা অচ্যুত সেনের দুর্গ ও সেনানিবাস ছিল এই দীঘির পারে, এখন তা বিলুপ্ত হয়েছে গেছে। জয়সাগর দীঘি ছাড়াও রাজা অচ্যুত সেন তার সেনাপতি প্রতাপের নামে, প্রতাপ দীঘি, ভৃত্য উদয়ের নামে উদয় দীঘি এবং কন্যা ভদ্রাবতির নামে ভদ্রা দীঘি খনন করেন। প্রতিদিন এখানে প্রচুর দর্শনার্থী ঘুরে বেড়াতে আসেন।