■ পর্যটন বিচিত্রা ডেস্ক
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার শেরাটন হোটেলে আয়োজিত ‘নেইবারলি নেপাল: ল্যান্ড অব লাইফটাইম এক্সপিরিয়েন্স’ শীর্ষক ‘নেপাল-বাংলাদেশ ট্যুরিজম মিটে’ তিনি এ আহ্বান জানান।
নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি বাংলাদেশের পর্যটকদের মধ্যে নেপালের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, নেপাল তার অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার জন্য বিশেষভাবে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। তিনি নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে পর্যটন বিনিময়কে দুই দেশের ঐতিহ্য ও বন্ধুত্বের এক উৎসব হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি উভয় দেশের পর্যটন উদ্যোক্তাদের মধ্যে ব্যবসা-থেকে-ব্যবসা (বি২বি) সম্পর্ক আরো জোরদার করার আহ্বান জানান, যা পারস্পরিক সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করবে।
নেপাল ট্যুরিজম বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রোহিনী প্রসাদ খানাল নেপালের বৈচিত্র্যময় পর্যটন কেন্দ্রের ওপর একটি বিস্তারিত উপস্থাপনা প্রদান করেন। তিনি হিমালয় ট্রেকিং, পর্বতারোহণ, প্যারাগ্লাইডিং, জাম্পিংয়ের মতো রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা থেকে শুরু করে আধ্যাত্মিক শান্তি ও মেডিকেল ট্যুরিজমের মতো উদীয়মান খাতগুলোর কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, নেপাল শুধু দেখার দেশ নয়, বরং অনুভব করার দেশ; যেখানে এসে মানুষ এমন গল্প নিয়ে ফিরে যায় যা আজীবন মনে থাকে।
বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এ কে এম মনিরুজ্জামান বলেন, পর্যটন খাত নেপাল-বাংলাদেশ সম্পর্ককে আরো সুসংহত করতে পারে।
তিনি উভয় দেশকে সম্পূরক পর্যটন গন্তব্য হিসেবে তুলে ধরার জন্য যৌথ পর্যটন প্যাকেজ তৈরির উপর গুরুত্বারোপ করেন, যাতে দেশীয় পর্যটকদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যটকরাও আকৃষ্ট হন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে নেপালের দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন ললিতা সিলওয়াল বলেন, এই সম্মেলন বাংলাদেশের সঙ্গে নেপালের পর্যটন সহযোগিতা জোরদারে অঙ্গীকারের প্রতিফলন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পর্বতারোহী ইকরামুল হাসান শাকিল তার ‘সি টু সামিট’ অভিযানের গল্প শেয়ার করেন। তার বঙ্গোপসাগর থেকে যাত্রা শুরু করে ১৩৭২ কিলোমিটার অতিক্রম করে ১৯ মে ২০২৫ সালে সফলভাবে মাউন্ট এভারেস্টে আরোহণের কাহিনী উপস্থিত সবাইকে অনুপ্রাণিত করে। অনুষ্ঠানে আটাবের সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ এবং বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক ও এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ারের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন হেলাল বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে নেপালি লোকসংগীত পরিবেশন করা হয়। এ ছাড়া, একটি র্যাফেল ড্র আয়োজন করা হয় যেখানে পুরস্কার হিসেবে হিমালয়া এয়ারলাইন্স ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সৌজন্যে ঢাকা-কাঠমান্ডু রাউন্ড ট্রিপ এয়ার টিকিট এবং নেপালের বিভিন্ন ভ্রমণ সংস্থার স্পন্সরে বিশেষ হলিডে প্যাকেজ দেওয়া হয়। প্রধান আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে নেপাল ও বাংলাদেশের পর্যটন উদ্যোক্তাদের মধ্যে বি২বি ও নেটওয়ার্কিং সেশন অনুষ্ঠিত হয়।
নেপালের প্রতিনিধিদলে ছিলেন নেপাল ট্যুরিজম বোর্ডের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং ১৩টি পর্যটন সংস্থার প্রতিনিধিরা। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, ট্যুর ও ট্রাভেল এজেন্সি প্রতিনিধি, হোটেল ব্যবসায়ী, এয়ারলাইন্স প্রতিনিধি এবং পর্যটন ও আতিথেয়তা খাতের ১৫০ জনের বেশি অতিথি অংশগ্রহণ করেন।