পর্যটন বিচিত্রা ডেস্ক
গ্রামাঞ্চলে সামাজিকভাবে দূরত্ব বজায় রেখে আনন্দময় সময় কাটায়। এর পর থেকে এই শিল্পের আকার বড় হতে থাকে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কৃষি মন্দা মোকাবিলায় পর্যটন ও এয়ারবিএনবির দিকে ঝুঁকছেন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকেরা। তারা নিজেদের খামারে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় ভ্রমণ, খেলাধুলা ও রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা করছেন। দেশটির কৃষি অর্থনীতির অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে রোজগারের উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে কৃষি পর্যটন।
একাকী ও শান্ত সময় কাটাতে চাওয়া শহরের বাসিন্দাদের ভিড় বাড়ছে এই খাতে। কৃষকরা তাদের খামারে নতুন নতুন পদ্ধতিতে শহর থেকে আসা মানুষকে আরামদায়ক ও শান্তিময় সময় কাটানো ব্যবস্থা করে দেন। উইসকনসিনের কৃষক ব্রিট থম্পসন তার খামারে রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা রেখেছেন। শহর থেকে মানুষজন এসে তার খামারে থাকা হাইল্যান্ড গরু, আইসল্যান্ডিক ভেড়ার সঙ্গে সময় কাটান। গ্রামে ঘুরে বেড়ান।
থম্পসন জানান, খামারে মাংসের জন্য পশু পালেন তিনি। এর পাশাপাশি পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা রেখেছেন। তার অতিথিদের বেশিরভাগই শিকাগোর। অর্থনীতির এই অস্থিতিশীল সময়ে এটাই তার রোজগারের উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। গরু ও ভেড়া বিক্রি করে যা আয় করতেন, তার তুলনায় এই আয়ের পরিমাণ অনেক বেশি।
তিনি আরও বলেন, প্রায় প্রতি সপ্তাহান্তে তার খামারে পর্যটকেরা আসেন। ঝরনা, বন-হাইকিং ট্রেইলে সময় কাটান। রাতের আকাশের সৌন্দর্য উপভোগ করেন।
ইলিনয়ের হিপস জায়ান্ট পাম্পকিন ফার্ম ভুট্টা ও সয়াবিন উৎপাদন করে। ফার্মটির সহব্যবস্থাপক ৩৫ বছর বয়সী কাইলি হিপ বলেন, ‘আমরা আমাদের আয়ের পথ বৈচিত্র্যময় করায় কঠিন বা লোকসানের বছরগুলো সামলাতে সক্ষম হচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, শরৎকালে হিপের গ্রাহকেরা সূর্যমুখী ও কুমড়া তুলতে আসেন। খড়ের গাড়িতে চড়েন। ভুট্টাখেতে তৈরি গোলকধাঁধায় (কর্ন মেজ) ঘুরে বেড়ান।
কৃষক এবং শিল্পবিশেষজ্ঞরা বলছেন, শস্য মূল্য কমে যাওয়া, উচ্চ সুদের হার এবং বীজ, সার ও শ্রমের খরচ বাড়তে থাকায় কৃষকদের জন্য কৃষি পর্যটনের আয় টিকে থাকার অন্যতম মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) তথ্যমতে, কৃষি পর্যটনশিল্প থেকে ৪৫০ কোটি ডলার আয় হয়।
ভারমন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লিসা চেইস বলেন, অনেক খামার প্রতিবছর ২৫ হাজার থেকে ১ লাখ ডলার আয় করছেন কৃষি পর্যটন থেকে। কিছু খামার প্রতি বছর ‘বেড অ্যান্ড ব্রেকফাস্ট’, ‘পিক ইউর ওন অ্যাপল’ বাগান এবং অন্যান্য আয়োজনের মাধ্যমে ১০ লাখ পর্যন্ত আয় করছেন।