চিলমারী বন্দর কুড়িগ্রাম জেলা সদর থেকে ৩৫ কিমি. দক্ষিণে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত। ব্রহ্মপুত্র নদ ও চিলমারী বন্দরের গুরুত্ব অপরিসীম। ব্রহ্মপুত্র নদ পৃথিবীর অষ্টম বৃহত্তম নদ। এই চিলমারী বন্দর থেকে ব্রহ্মপুত্র নদীপথে ব্রিটিশ আমলে বড় বড় জাহাজ চলাচল করত। একসময় এই বন্দর থেকে জাহাজ ভর্তি পান, সুপারি, পাট ইত্যাদি ভারতের পূর্বাঞ্চলসহ চীন, ভুটান ও নেপালে রপ্তানি হতো। একসময় জাহাজ নির্মাণশিল্পের জন্য এই বন্দরের সুখ্যাতি ছিল। বিভক্ত বাংলায় পাট ও পাটজাত দ্রব্যাদি বেচাকেনার জন্য চিলমারী বন্দর ছিল একটি প্রসিদ্ধ স্থান। আসামের ধুবড়ী নৌবন্দর এবং নারায়ণগঞ্জ বন্দরে চিলমারী থেকে পণ্য আনা-নেয়া করা হতো।
ভাওয়াইয়া শিল্পী আব্বাসউদ্দীনের বিখ্যাত ‘ওকি গাড়িয়াল ভাই’, ‘হাঁকাও গাড়ী তুই চিলমারীর বন্দরে’ গানটি চিলমারীর অতীত সমৃদ্ধিকে ইঙ্গিত করে। কালের আবর্তে ব্রহ্মপুত্র নদের করাল গ্রাসে চিলমারী বন্দরটি সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়েছে। এখনো জেলার অধিকাংশ মানুষের কাছে এটি দর্শনীয় স্থান। এখানে নৌকা ভ্রমণ, চরাঞ্চল, মেঘালয়ের পর্বতরাশি এবং ব্রহ্মপুত্র নদের জলরাশি পর্যটককে আকৃষ্ট করে।
শীতকালে এখানকার অষ্টমীর চর, নয়ারহাট ও চিলমারী ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্রের শাখা নদীসমূহের তীরজুড়ে বিভিন্ন প্রজাতির পাখির আগমন এলাকাটিকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে। এখানে উত্তরাঞ্চলের একমাত্র ভাসমান তেল ডিপো অবস্থিত। চিলমারীর রমনা ঘাট থেকে প্রতিদিন বাহাদুরাবাদ, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, বাঘাবাড়ি, ফুলছড়ি, রৌমারী ও রাজিবপুরে নৌকা চলাচল করে।