পর্যটন বিচিত্রা ডেস্ক
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলাধীন পাকশী ইউনিয়ন ও কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার মাঝে পদ্মা নদীর উপর অবস্থিত। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ভেড়ামারা ও ঈশ্বরদী উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা। ভেড়ামারা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৮.৫ কিমি উত্তরে এবং ঈশ্বরদী উপজেলার সদর থেকে প্রায় ৮ কিমি দক্ষিণে পদ্মা নদীর উপর সেতুটি নির্মিত।
১৮৮৯ সালে তৎকালীন অবিভক্ত ভারত সরকার আসাম, ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড ও উত্তরবঙ্গের সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগ সহজতর করার লক্ষ্যে পদ্মা নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাব করে। পরবর্তীতে ১৯০৮ সালে সেতু নির্মাণের মঞ্জুরী লাভের পর ব্রিটিশ প্রকৌশলী স্যার রবার্ট গেইলস সেতুটি নির্মাণের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
১৯০৯ সালে সেতু নির্মাণের সমীক্ষা শুরু হয়। ১৯১০-১১ সালে পদ্মার দুই তীরে সেতু রক্ষার বাঁধ নির্মাণ হয়। ১৯১২ সালে সেতুটির গাইড ব্যাংক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। পাশাপাশি সেতুর গার্ডার নির্মাণের কাজ শুরু হয়। গার্ডার নির্মাণের জন্য কূপ খনন করা হয়। ২৪ হাজার শ্রমিক দীর্ঘ ৫ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে ১৯১৫ সালে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ করেন।
তৎকালীন অবিভক্ত ভারতের ভাইসরয় ছিলেন লর্ড হার্ডিঞ্জ। তার নামানুসারে সেতুটির নামকরণ করা হয় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ। সেতুটির নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল ৩ কোটি ৫১ লক্ষ ৩২ হাজার ১৬৪ টাকা। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৫ হাজার ৮ শত ফুট বা ১.৮ কিমি। ব্রিজটিতে ১৫টি স্প্যান আছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সেতুটিতে বোমা ফেলা হলে ১২ নম্বর স্প্যানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেগুলো পরে মেরামত করা হয়েছে।
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ঈশ্বরদী ভেড়ামারা সীমানায় পদ্মা নদীর উপর অবস্থিত। সেতুটি দিয়ে শুধু ট্রেন চলাচল করে। বাংলাদেশ রেলওয়ে সেতুটির রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। ২০১৫ সালে এই হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণের শতবর্ষ পূর্ণ হয়। শতাব্দী প্রাচীন লৌহ কাঠামোতে নির্মিত সেতুটি দর্শনের জন্য প্রতিদিন অনেক পর্যটক এখানে এসে থাকেন।