পর্যটন বিচিত্রা প্রতিবেদন
বাটারফ্লাই পার্ক পার্কটিতে হাজারেরও বেশি প্রজাপতি রয়েছে। মার্চ থেকে আগস্ট/ সেপ্টেম্বর মাস প্রজাপতির স্বাভাবিক প্রজননের সময়। তবে এখানে প্রজাপতির কৃত্রিম প্রজননও করানো হয়।
প্রজাপতি পার্কে রয়েছে- ট্রপিক্যাল গার্ডেন, বাটারফ্লাই জোন, বাটারফ্লাই মিউজিয়াম, বাটারফ্লাই রিয়ারিং রুম, কৃত্রিম লেক-ঝরনা, ফিশফিডিং জোন ও বাটারফ্লাই ফিডিং জোন। রয়েছে একটি রিসোর্ট, রেস্টুরেন্ট, ওয়াটার রাইড ও বর্ণিল ফুলের বাগান। আর সেই বাগানে বসে অসংখ্য প্রজাপতির মেলা।
চট্টগ্রাম পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতসংলগ্ন প্রজাপতি পার্ক অবস্থান। পার্কে প্রবেশ পথের পরই কৃত্রিম ঝরনা ও বাটারফ্লাই জোনের দেখা মিলবে। এই জোন পেরিয়ে সামনে এগিয়ে গেলেই আছে বাটারফ্লাই মিউজিয়াম। এখানে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ধরনের প্রজাপতি প্রদর্শনের জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে। প্রজাপতির জাদুঘরের সামনে আছে শিশুদের খেলাধুলার জন্য আকর্ষণীয় রাইড।
পার্কের জলাশয়ে আছে সাম্পান নৌকায় ভ্রমণের সুবিধা। প্রজাপতি উদ্যানে বনভোজন আয়োজনের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য আছে কনফারেন্স রুম। আরও আছে আধুনিক রেস্টহাউস এবং রেস্টুরেন্ট সুবিধা।
প্রজাপতির মিলনমেলা উপভোগ করতে ছুটির দিন কিংবা কোনো অনুষ্ঠানে শিশুদের নিয়ে অভিভাবকরা ছুটে আসেন এই পার্কে। বাটারফাই পার্ক দিয়ে ঢুকলে প্রথমে গেটে বিশালকার লোহার তৈরি এক প্রজাপতি নজর কাড়বে সবার। কিন্তু ভিতরে ঢুকলেই দেখা যায় শত শত সত্যিকারের প্রজাপতির উড়াউড়ি। ঝলমলে রোদে আলোর ঝিলিকে গাছ থেকে গাছে, ফুল থেকে ফুলে, নেচে নেচে ঘুরে বেড়াচ্ছে এসব রংবেরংয়ের প্রজাপতির দল।
সকালের মিষ্টি রোদে খাবার সংগ্রহে প্রজাপতিরা চারদিকে রঙিন পাখা মেলে ঘুরে বেড়ায় এক গাছ থেকে আরেক গাছের ফুলে ফুলে। গাছের ফাঁকে ফাঁকে খাবারের জায়গা রাখা হয়েছে প্রজাপতিদের জন্য। সেখান থেকে প্রজাপতিরা প্রভোসিস বা শুর দিয়ে ফলের রস সংগ্রহ করে।
লেক, পুকুর, খোলা জায়গাসহ সবখানেই প্রজাপতি। ভেতরে লোহার নেটের তৈরি খাচার ভিতরে ‘প্রজাপতি জোনে’ বিভিন্ন প্রজাপতির মিলনমেলা। এরমাঝে আবার রয়েছে প্রজাপ্রতির আঁদলে তৈরি লোহার চেয়ার। এখানে বসে দর্শনার্থীরা ছবি তুলেন।
প্রজাপতির জীবনকাল সম্পর্কে পার্কের উদ্যোক্তা মনোয়ারা হাকিম আলী জানান, ডিম থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক একটি প্রজাপতির জীবনকাল এক থেকে ১০ মাস। মারা যাওয়ার পর এই এগুলোকে সংরণের জন্য ‘প্রজাপতি জাদুঘর’ তৈরি করা হয়েছে। কাঁচে ঘেরা এই জাদুঘরে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির দেহাবশেষ ও ডিম। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও গবেষকরা গবেষণায় ব্যবহার করতে পারেন। বাটারফাই পার্কের কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্ল্যান ও ডিজাইনে প্রফেসর ড. শফিক হায়দার চৌধুরীর তত্ত¡বধানে পতেঙ্গায় এই পার্ক তৈরি করেছে ইন্ট্রাকো গ্রুপ।
পার্কের উপদেষ্টা ড. শফিক হায়দার চৌধুরী জানান, দেশের প্রথম এই বাটারফ্লাই পার্ক সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র জীবিত প্রজাপতির বাটারফাই পার্ক। বনজ বৃক্ষের পরাগায়নের ক্ষেত্রে প্রজাপতি বিশেষ অবদান রাখে জানিয়ে তিনি বলেন, এই পার্ক শিশু-কিশোরদের প্রকৃতিকে ভালবাসতে শেখাবে এবং নির্মল আনন্দদানেও ভুমিকা রাখবে।
প্রজাপতি দেখার উপযুক্ত সময়
প্রজাপতি রৌদ্রোজ্বল দিন পছন্দ করে। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সর্বাধিক প্রজাপতির দেখার সম্ভাবনা থাকে। বিকাল বেলা বা আবহাওয়া মেঘলা থাকলে প্রজাপতিরা সাধারনত ঝোপের আড়ালে থাকে।