পর্যটন বিচিত্রা প্রতিবেদন
এভিয়েশন শিল্পের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে দীর্ঘ পথ চলায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সফলভাবে একটি বহুমুখী এবং প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত বহর তৈরি করার প্রয়াসে এগিয়ে চলেছে। বিমান দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে নবীন বহর; যেখানে চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর, চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮, দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯, ছয়টি বোয়িং ৭৩৭ এবং পাঁচটি ড্যাশ ৮-৪০০ রয়েছে।
বিমানের বহর সম্প্রসারণের জন্য ২০২৫ থেকে ২০৩৪ সাল পর্যন্ত ১০ বছরের একটি পরিকল্পনা কৌশল তৈরি করা হয়েছে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী ১০ বছরে বিমানবহরে ৩২টি বিমান যোগ হবে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি IOSA, IS AGO, RA-৩, ACC-৩, EASA Part ১৪৭ এবং জাতীয় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের CAAB Part ১৪৫ স্বীকৃতিপ্রাপ্ত।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ৮টি অভ্যন্তরীণ এবং ২৩টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যে বিমান চলাচল পরিচালনা করে; যা পূর্ব থেকে পশ্চিম এবং উত্তর থেকে দক্ষিণ পর্যন্ত বৈশ্বিক সংযোগকে উৎসাহিত করছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্য, ইতালি, কানাডা, জাপান, মধ্যপ্রাচ্য, ভারত, নেপাল, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং চীন অন্তর্ভুক্ত এবং অন্যান্য এয়ারলাইন্সের PSA চুক্তির মাধ্যমে যা বিশ্বের বিভিন্ন গন্তব্যে সম্প্রসারিত। বর্তমানে বিমান প্রতিদিন ১৬০টি যাত্রীবাহী এবং মালবাহী ফ্লাইট দক্ষতার সাথে পরিচালনা করে আসছে। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সেবায় উৎকৃষ্টতার প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছে, প্রায় ১১৬.৪ মিলিয়ন যাত্রী পরিচালনা এবং প্রায় ৩৫০,২২২ মেট্রিক টন মালামাল পরিবহনে গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সেবা প্রদান করেছে। বিমান তার গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সক্ষমতাকে শক্তিশালী এবং আধুনিক করার লক্ষ্যে গত বছরে ১০০০ কোটি টাকা মূল্যমানের অত্যাধুনিক গ্রাউন্ড সাপোর্ট ইকুইপমেন্ট সংগ্রহে একটি উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ করেছে।এই গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ বাংলাদেশের সব বিমানবন্দরে শীর্ষস্থানীয় গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা প্রদানের প্রতি বিমানের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স স্মার্ট এয়ারলাইন্সের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এর লক্ষ্যগুলির মধ্যে রয়েছে বহর সম্প্রসারণ এবং আধুনিকীকরণ, নিবেদিত মালবাহী পরিষেবা চালু এবং বাড়ন্ত চাহিদা পূরণের জন্য রুট সম্প্রসারণ। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তিগুলি গ্রহণ, বিমান অনলাইন টিকিটিং, ওয়েব চেক-ইন, আন্তর্জাতিক মানের কল সেন্টার, ফ্লাইট ব্যবস্থাপনার জন্য উন্নত LIDO সফটওয়্যার, দক্ষ জ্বালানি ব্যবস্থাপনা সফটওয়্যার ব্যবহার এবং উন্নত ইন-ফ্লাইট এন্টারটেইনমেন্ট (IFE) সিস্টেম বাস্তবায়িত হয়েছে। গ্রাহক সন্তুষ্টির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে, সম্ভাব্য কেবিন আপগ্রেড, অতিরিক্ত লেগ সিট চয়েজ, লাউঞ্জ বুকিং সুবিধা এবং ডিজিটাল উন্নয়নগুলো পরিকল্পনায় রয়েছে। গলফ এয়ারের সঙ্গে একটি উল্লেখযোগ্য কোড শেয়ার চুক্তির মাধ্যমে বিমানের কার্যকরী দৃষ্টিভঙ্গি তার বৈশ্বিক সংযোগকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টাকে স্পষ্ট করে তুলে। ফলে বিমানের প্রবৃদ্ধি বাড়ার সাথে সাথে আরও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং উন্নত গ্রাহক সেবায় প্রাধান্য দিচ্ছে; যা এভিয়েশন শিল্পে শ্রেষ্ঠত্ব প্রদানের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করে।
যাত্রীরা বিমানের সেবা উৎকর্ষের ধারাবাহিক উন্নতিতে অত্যন্ত খুশি। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স তার করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি কাজগুলি অব্যাহত রাখছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স মৃতদেহ পরিবহনে নামমাত্র চার্জ ধার্য করে। এছাড়া যে কোনো অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে বিমান প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য প্রত্যাবর্তন ফ্লাইট পরিচালনা করে। কোভিড-১৯ এর সময়ে ভ্যাকসিন পরিবহনে বিমান বড় ভূমিকা পালন করেছিল। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স হচ্ছে লাখ লাখ বাংলাদেশির আশা, যারা বিশ্বে সংযোগ স্থাপনের স্বপ্ন দেখে।