লেখক : আশরাফুজ্জামান উজ্জল (ভূ-পর্যটক, প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ ট্রাভেল রাইটার্স এসোসিয়েশন)
বিশ্বের ১৫টি দেশ থেকে প্রায় ১২০ জনের মতো অংশগ্রহণ করবেন সাউদার্ন মাইস এক্সপোতে। আমি ছাড়াও বাংলাদেশ থেকে আরো ১৩ জন অংশগ্রহণ করবে। জেনে ভাল লাগল আমার বন্ধু পর্যটন বিচিত্রার সম্পাদক মহিউদ্দীন হেলালও যাচ্ছেন। ভ্রমণে সঙ্গী খুব গুরুত্বপূর্ণ। হেলাল বাংলাদেশে Asian Tourism Fair আয়োজন করে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। এবার সে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে শ্রীলঙ্কায় ATF এর আয়োজন করার প্রস্তুতি নিয়ে যাচ্ছে। যদিও এ ধরনের প্রোগ্রামে ঘোরার সুযোগ খুব কম। তাই আমরা দুজন অতিরিক্ত দুদিন থাকার সিদ্ধান্ত নিই।
শ্রীলঙ্কা ভ্রমণে সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো ভিসা জটিলতা একেবারেই নেই। আমাদের সকলকে ETA (ইলেকট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন) করে নিতে বলা হয়। অনলাইনে অ্যাপ্লাই করে মাত্র এক ঘণ্টার ভেতর ভিসা হয়ে যায়। তবে ভিসা ফি ইউএস ৫০ খরচ পড়ল। পরবর্তীতে শ্রীলঙ্কান ট্যুরিজম মন্ত্রী মহোদয়কেও বলেছিলাম সার্কভুক্ত দেশ হিসেবে আমরা যেন বিনামূল্যে বা কম মূল্যে শ্রীলঙ্কার ভিসা পেতে পারি। উনি বলেছিলেন, তারা এটা নিয়ে ভাবছেন এবং চেষ্টা করবেন ভিসা ফি কমানোর।
বাংলাদেশ থেকে বর্তমানে যে কোনো দেশের যাবার অনেক ঝক্কি-ঝামেলা রয়েছে। ভিসা পেলেও এয়ারলাইন্স, ইমিগ্রেশনের ঝুট-ঝামেলাও কম নয়, বিশেষ করে যারা মাত্র ভ্রমণ শুরু করেছেন? একটা দেশের পর্যটন কেমন হবে সেটার অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ভিসানীতি, ইমিগ্রেশনের ব্যবহার, সেই দেশের অবকাঠামো, নিরাপত্তা, দর্শনীয় স্থান, লোকাল মানুষের ব্যবহার, খাবার, সবদিকে বাজেট ফ্রেন্ডলি কিনা ইত্যাদি নানান কিছু। শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইনসে এখন সরাসরি কলম্বো যাওয়া যায়। সময় লাগে তিন ঘণ্টার মতোন। বন্দরনায়েকে আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলাম নির্ধারিত সময়ের মধ্যে। খুব দ্রুত ইমিগ্রেশন হলো। কোনো কিছু জিজ্ঞাসাও করল না। এমনকি ETA পর্যন্ত দেখতে চায়নি। সম্ভবত পাসপোর্ট স্ক্যান করলেই সব তথ্য চলে আসে। আমরা সবাই ইমিগ্রেশন শেষ করে ব্যাগ নিয়ে গ্রিন চ্যানেল দিয়ে বের হই। কাস্টমসেরও কড়াকড়ি নেই। কাস্টমস পার হতেই শ্রীলঙ্কান কনভেনশন ব্যুরোর লোকজন আমাদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নিলেন, সবাইকে লোকাল মোবাইল সিম দিয়ে দিল। এয়ারপোর্ট থেকে নিগাম্বুর নির্দিষ্ট হোটেলে আমাদের নিয়ে আসলেন। সেখানেও আরেকদফা অভ্যর্থনা হলো ফুল দিয়ে। সবকিছু এত সাজানো-গোছানো, পরিপাটি, আন্তরিকতা যা আপনাকে মুগ্ধ করবেই। শ্রীলঙ্কার অনেক নাম। এক সময় গ্রিকরা ডাকতেন তাপ্রবানি, আর আরবরা বলতো ‘সেরেনদিপ’ ষোড়শ শতাব্দীতে পর্তুগিজরা যখন শ্রীলঙ্কায় এলো, নাম রাখলেন ‘সিলাও’। পরবর্তীতে এই সিলাও নামটি ইংরেজদের কাছে গিয়ে সিলান হয়ে যায়। শ্রী আর লঙ্কা- দুটোই সংস্কৃত শব্দ। যার মানে হলো সুন্দর দ্বীপ।
মে মাস, ঢাকায় যখন প্রচন্ড গরমে অস্থির নগরবাসী ঠিক সে সময় কলম্বোতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আমাদের এক পশলা স্বস্তি দেয়। হোটেল কর্তৃপক্ষ জানাল-IPL খেলা হোটেলের বিশাল TV Screen এ চলবে, সবাই আমন্ত্রিত এবং রাত ৮টায় ডিনার সার্ভ করা হবে। বুফে ডিনার। সবাই যার যার রুমে যাই এবং ফ্রেশ হয়ে নিগাম্বুর আশপাশে দেখতে বের হই আমি ও মহিউদ্দীন হেলাল। কিন্তু সাথে ছাতা না থাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে সফর সংক্ষিপ্ত করে কিছু স্যুভেনির শপে যাই। কিছু কেনাকাটা করি। সব পর্যটক সেখানে গিয়ে চেষ্টা করেন সেখানকার কিছু স্যুভেনির সংগ্রহ করার। বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পে স্যুভেনির নিয়ে আমরা এখনও পিছিয়ে আছি, যারা ভিয়েতনামের হোয়ান কিম লেকে গিয়েছেন তারা দেখেছেন স্যুভেনির কি চমৎকারভাবে ব্যবহার হচ্ছে পর্যটকদের জন্য। বাংককের চাতুচক মার্কেট গেলে সারাদিন লেগে যায় শপিং করতে। কায়রোর খান এ খলিলিও অসাধারণ জায়গা, এমনি হাজারো জায়গার নাম বলা যাবে।
পরদিন বৃষ্টির কারণে কলম্বো সিটি ট্যুর দেরিতে শুরু হলো। আজ আমাদের কলম্বো শহর বাসে করে ঘুরিয়ে দেখানো হলো। এটি বিশ্বের ১৯তম লম্বা টাওয়ার যা প্যারিসের আইফের টাওয়ার থেকে ২৪ মিটার লম্বা। স্বল্প সময়ের জন্য ওয়াশরুম বিরতি দেয়া হলো ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্কয়ারে এসে। শ্রীলঙ্কান ৫০ রুপি দিয়ে ওয়াশরুম ব্যবহার করতে হলো। বর্তমানে এক ইউএস ডলারে ৩০১ শ্রীলঙ্কান রুপি পাওয়া যাচ্ছে। আরেকটি বিষয় বলে রাখা দরকার- যারা ধূমপান করেন বা অ্যালকোহল পান করেন এটি শ্রীলঙ্কায় অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তাই ডিউটি ফ্রি শপ থেকে কিনে আনাই উত্তম। দামের কারণেই নাকি সচেতনার জন্যই হোক শ্রীলঙ্কায় ধূমপায়ীর সংখ্যা খুবই কম।
দুপুরে হোটেল হিলটনে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হোটেলটি শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে পড়েছে। এর পাশেই শ্রীলঙ্কার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার, প্রেসিডেন্ট ভবন অবস্থিত। অপূর্ব নাচের মাধ্যমে আমাদের সবাইকে বরণ করে নিল হিলটন হোটেল। শিল্পীদের ড্রেস, নাচ খুবই উপভোগ্য ছিল। সবাই তাদের সাথে ছবি তুললো ও নাচের ভিডিও ধারণ করলো। দুপুরে খাবারের পর আমাদের পরবর্তী গন্তব্য বেনটোটায়। সেখানেই আমাদের মূল প্রোগ্রামে। থাকার জায়গা Taj Bentota Resort & Spa তে। শ্রীলঙ্কার কিং কোকোনাট বিখ্যাত। আমাদেরকে কিং কোকোনাট ও বিভিন্ন ফলের জুস ইত্যাদি দিয়ে বরণ করে নিল হোটেল কর্তৃপক্ষ। এর অবস্থান খুবই চমৎকার। সাথেই সমুদ্রের অবস্থান। বেনটোটা অ্যাডভেঞ্চার ভ্রমণ প্রেমীদের নিকট বিখ্যাত। নানান ধরনের Water sports এর সুবিধা রয়েছে। এছাড়া শ্রীলঙ্কান বিখ্যাত আর্কিটিক্টে জেফরি বাওয়া’র Lunuganga Garden এখানেই রয়েছে। বিদেশি দশনার্থীদের জন্য ইউএস ১৫ ডলার দিয়ে প্রবেশ করতে হয়। আমার বন্ধু তারেক একজন বিখ্যাত পাথর ব্যবসায়ী। এই বেনটোটা থেকে মাত্র ৭ কি. মি. দূরেই তার পিতৃভূমি বেরুওয়ালা। মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা। তারেক ভাই জানালেন, শ্রীলঙ্কার ইসলাম প্রচার এখান থেকে শুরু হয় শেখ আশরাফের হাত ধরে। বর্তমানে এখানে মসজিদ, মাজার, মাদ্রাসা রয়েছে। শ্রীলঙ্কা সফরে বিখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা এখানকার মুসলমানদের নিয়েও লিখে গেছেন।
আমার হোটেল রুমটি নীচতলায়। রুমের সামনে বসার জন্য সুন্দর চেয়ার রাখা আছে। এখান থেকে বসেই সমুদ্র দর্শন করা যায়। সমুদ্রের নীল জলরাশির ঢেউ গণনার সময় পেলাম না, বন্ধু হেলাল এসে কড়া নাড়ছে দরজায়। যেতে হবে মাইসের মূল প্রোগ্রামে অন্য একটি জায়গায়। দ্রুত তৈরি হয়ে বের হলাম। আকাশ আজও মেঘাচ্ছন্ন টিপ টিপ বৃষ্টি।
শ্রীলঙ্কার দর্শনীয় স্থান
শ্রীলঙ্কায় দেখার অনেক দর্শনীয় স্থানীয় রয়েছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য জায়গাগুলো হলো-
ইয়ালা ন্যাশনাল পার্ক
ইয়ালা জাতীয় উদ্যান হাম্বানটোটা শহরের কাছে দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত। মানুষ পার্কে হাতি, চিতাবাঘ, কুমির দেখতে আসে। ইয়ালায় বিশ্বের সর্বোচ্চ চিতাবাঘের ঘনত্ব রয়েছে। এছাড়াও ২০০টিরও বেশি পাখির প্রজাতি রয়েছে, যারা সাফারি পার্কে ঘুরতে চান তাদের জন্য এটি উত্তম।
টেম্পল অব দ্য সিক্রেট টুথ রিলিক (ক্যান্ডি)
এটির অবস্থান ক্যান্ডির জাতীয় জাদুঘরের ঠিক পাশে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য এটি একটি পৃথিবীর অন্যতম দর্শনীয় স্থান।
উদাওলাওয়ে জাতীয় পার্ক (Udawalawe National Park)
শ্রীলঙ্কার সাউদার্ন মাইস এক্সপো থেকে আমাদের এখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এটি মূলত হাতি দেখার ট্যুর। ১২০ বর্গ মাইলেরও কম জায়গা নিয়ে এবং সেখানে প্রায় ২৫০টিরও বেশি হাতি রয়েছে। এছাড়াও এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অভয়ারণ্য এবং পাখি দেখার জন্য দুর্দান্ত জায়গা। সাধারণত পর্যটকরা কলম্বো বা হাম্বানটোটা থেকে এটি ঘুরতে যান।
কলম্বো লোটাস টাওয়ার
এটি ২০১৯ সালে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয় উঁচু, মুক্ত স্থায়ী কাঠামো হিসাবে খোলা হয়েছিল। ২০২২ সালে বাংলাদেশ ট্রাভেল রাইটার্স এসোসিয়েশনের ছয় সদস্যের একটি দলের সেখানে যাবার সুযোগ হয়েছিল এবং আমরা ড্রোন উড়ানোর পারমিশন নিয়ে টাওয়ারের উপর থেকে ড্রোন উড়াতে সক্ষম হয়েছিলাম। এটি ১১৬৮ ফুট লম্বা, কলম্বোর অন্যতম দর্শনীয় স্থানে।
সিগিরিয়া প্রাচীন রক দুর্গ
সিদিরিয়া ৫ম শতাব্দীতে রাজা কাশাপ দ্বারা নির্মিত একটি প্রাচীন রক দুর্গ। এটি শক্ত আগ্নেয় শিলার পাহাড় থেকে খোদাই করা হয়েছে। এটি বন ও নীচের বাগান থেকে প্রায় ৬০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত এবং এর একটি সমতল শীর্ষ রয়েছে। উপরে উঠার জন্য প্রায় ১২০০ সিঁড়ি পার হতে হয়। উপরে যাওয়ার পথে পাথরের মুখের উপর আঁকা নারীদের সংরক্ষিত ফ্রেঙ্ক রয়েছে। মিরর ওয়াল অবশ্যই দেখবেন যা প্রাচীন প্রাফিতি দ্বারা খোদাই করা এক সময় প্রতিফলিত পৃষ্ঠ। সঙ্গে অবশ্যই পাসপোর্ট নিয়ে যাবেন তাহলে এন্ট্রি ফি সার্কভুক্ত দেশ হিসাবে কম লাগবে।
অ্যাডামস পিক (Adams Peak)
এই বৃহৎ পবিত্র পর্বত ৭৩৫৯ ফুট উঁচু যা অনেক ধর্মের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ। শিখরে একটি ছাপসহ একটি বড় পাথর রয়েছে; যা দেখতে পায়ের ছাপের মতো। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে এটি গৌতম বুদ্ধের পদচিহ্ন; মুসলমান ও খ্রিস্টানদের কাছে এটি আদমের পদচিহ্ন এবং হিন্দুদের কাছে এটি দেবতা শিব দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল। আপনার বিশ্বাস যাই হোক না কেন, অ্যাডামস পিক দেখার জন্য এটি একটি সুন্দর জায়গা। এটি আরোহণের সেরা সময় ডিসেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত।
ডাম্বুলা গুহা মন্দির
এটি শ্রীলঙ্কার মধ্যভাগে অবস্থিত। ১৯৯১ সালে এটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়। এটি একটি বৌদ্ধমন্দির যা ডাম্বলা স্বর্ণ মন্দির হিসেবেও পরিচিত। কলম্বো থেকে ১৪৮ কি. মি. পূর্বে এবং ক্যান্ডি থেকে ৭২ কি. মি. উত্তরে অবস্থিত।
গল দুর্গ (Galle Fort)
শ্রীলঙ্কার দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে গালের উপসাগরে অবস্থিত গল ফোর্টটি ১৫৮৮ সালে পর্তুগিজদের দ্বারা প্রথম নির্মিত হয়েছিল। কলম্বো থেকে দুই ঘণ্টা লাগে এখানে আসতে এটি শ্রীলঙ্কার একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য। প্রতিবছর গল লিগ ফেস্টিভল এখানে অনুষ্ঠিত হয়। শ্রীলঙ্কার বর্তমান মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাথে আমার এই গল লিগ ফেস্টে দেখা হয়েছিল ২০১৬ সালে তখন তিনি শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
নাইন আর্চ ব্রিজ (Nine Arch Bridge)
নয়টি আর্চ ব্রিজ যাকে ব্রিজ ইন দ্য স্কাইও বলা হয়। এটি শ্রীলঙ্কার একটি ডায়াডাক্ট সেতু এবং দেশের ঔপনিবেশিক যুগের রেলপথ নিমার্ণের অন্যতম সেরা উদাহরণ আপনি সেতুটি দুটি উপায়ে পরিদর্শন করতে পারবেন। এলা থেকে টুক টুকে করে বা এটি অতিক্রমকারী একটি ট্রেনে ভ্রমণ করে। নাইন আর্চ ব্রিজটি প্রধান ট্রেন লাইনে এলা এবং ডোমাদারা স্টেশনের মধ্যে অবস্থিত। সাধারণত ক্যান্ডি থেকে এলা পর্যন্ত ট্রেন ভ্রমণকালে ব্রিজটি অতিক্রম করে। এটি বিশে^র সবচেয়ে সুন্দর ট্রেন ভ্রমণগুলি মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয়।
গঙ্গারাম মন্দির
এটি কলম্বোয় অবস্থিত শ্রীলঙ্কার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মন্দিরগুলির মধ্যে একটি। আধুনিক স্থাপত্য ও সাংস্কৃতিক সারাংশের মিশ্রণ। এটি ১৯ শতকের শেষের দিকে নির্মাণ করা হয়েছিল। মন্দিরটি ধর্মীয় মুদ্রা, গয়না এবং ভাস্কর্যের উদাহরণসহ একটি ধর্মীয় জাদুঘরও। প্রতিবছর ফ্রেব্রুয়ারি মাসে পোয়া বা পূর্ণিমার অনুষ্ঠানের সময় মন্দিরের বাসিন্দা হাতির নেতৃত্বে এলাকার চারপাশে একটি শোভাযাত্রা ও উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
লাল মসজিদ (Red Mosque)
কলম্বোর একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। এর অন্য নাম জামি উল আলফা মসজিদ। শ্রীলঙ্কাতে প্রায় ৮৪০টি মসজিদ রয়েছে। ইনস্টাগ্রামে ছবি তোলার জন্যও অনেকে এখানে আসেন। আকর্ষণীয় লাল এবং সাদা ইটের লাল মসজিদ দেখতে খুবই সুন্দর। এটি কলম্বোর অত্যন্ত ব্যস্ততম এলাকা পেট্রায় অবস্থিত। ১৯০৮ সালে হাবিবু লাব্বে সাইবু লাব্বে নামে বিখ্যাত একজন স্থপতি দ্বারা নির্মিত হয়েছিল এটি।
নুয়ারা এলিয়া
শ্রীলঙ্কার মধ্য প্রদেশের পার্বত্য অঞ্চলের একটি শহর। এর নামের অর্থ ‘সমতলভূমির শহর’ বা ‘আলোর শহর’। এখানকার মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য ও নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুর জন্য বিখ্যাত।
মিরিসা
তিমি দেখার জন্য আপনাকে মিরিসায় আসতে হবে। তবে তিমি দেখার উপযুক্ত সময় নভেম্বর থেকে এপ্রিল। আপনি এই সৈকত স্বর্গে প্রবেশ করার সাথে সাথেই আসল পৃথিবী ভুলে যাবেন।
উলাপাথা–আয়ুর্বেদের দেশ
শ্রীলঙ্কায় যে সমস্ত কারণে পর্যটকরা যান তার মধ্যে অন্যতম হলো এখানকার আয়ুর্বেদ এবং যোগব্যায়ামের অধ্যায়ন। উলাপাথা গ্রামে সত্যিই কিছু ভালো কেন্দ্র রয়েছে- যেখানে আপনি প্রকৃতির মাঝে যোগব্যায়াম অনুশীলন করতে পারবেন।
ত্রিনাকোমালে–টেম্পল সিটি
কলম্বো থেকে বিমানে করে ৭৫ মিনিটে ত্রিনাকোমালে যাওয়া যায়। এটি শ্রীলঙ্কার একটি আনকমন পর্যটন স্থান। যারা পানি, বিচ, ওয়াটার স্পোর্টস পছন্দ করেন তাদের জন্য আদর্শ জায়গা। এটি একটি আদর্শ সমুদ্র সৈকত। যারা স্কুবা ড্রাইভিং পছন্দ করেন বা শিখতে চান তারাও এখানে আসতে পারেন।