নিজস্ব প্রতিবেদন
সকালে খুব ভোরে ঢাকা থেকে যাত্রা শুরু করেছিলাম। বন্ধুদের সাথে এই ভ্রমণটি বেশ উত্তেজনাপূর্ণ ছিল। আমরা একটি ছোট মাইক্রোবাস ভাড়া করেছিলাম। রাস্তা ধরে চলতে চলতে আমরা গ্রামীণ বাংলাদেশের সবুজ শস্য ক্ষেত ও গাছপালার সৌন্দর্য উপভোগ করছিলাম। প্রায় এক ঘণ্টার মধ্যে আমরা উদ্যানের প্রবেশদ্বারে পৌঁছলাম।
উদ্যানের সৌন্দর্য
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান প্রবেশ করার সাথে সাথেই প্রকৃতির নিঃশব্দতা ও সবুজের ঘনত্ব মনকে প্রশান্ত করে তুলেছিল। উদ্যানটি প্রায় ৫,০০০ একর জমি নিয়ে বিস্তৃত। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা, পশু-পাখি ও বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল। উদ্যানের ভেতরে হাঁটতে হাঁটতে আমরা দেখতে পেলাম প্রচুর বাঁশঝাড়, মহুয়া গাছ, ও বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা।
ট্রেইল ও পিকনিক স্পট
উদ্যানের ভিতরে বেশ কিছু ট্রেইল আছে যেখানে হাঁটা যায়। আমরা একটি ট্রেইল ধরে হেঁটে চললাম। হাঁটার পথে পাখির কিচিরমিচির শব্দ, গাছের পাতার ঝিরঝির আওয়াজ, আর মাটির গন্ধ মনকে সতেজ করে তুলেছিল। প্রায় আধা ঘণ্টা হেঁটে আমরা একটি পিকনিক স্পটে পৌঁছলাম। সেখানে বসে আমরা সকালের নাস্তা করলাম। চারদিকে সবুজ গাছপালা ঘেরা একটি শান্ত পরিবেশে বসে খাওয়ার অভিজ্ঞতা অসাধারণ ছিল।
লেক ও বোটিং
পিকনিক স্পট থেকে একটু দূরেই ছিল একটি লেক। আমরা লেকের কাছে গিয়ে বোটিং করার সিদ্ধান্ত নিলাম। লেকের পানি একেবারে পরিষ্কার এবং শান্ত ছিল। আমরা একটি ছোট নৌকায় উঠলাম এবং লেকের চারপাশে ঘুরে বেড়ালাম। নৌকা থেকে লেকের চারপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে খুবই সুন্দর লাগছিল।
বনাঞ্চলের মধ্যে ঘোরাঘুরি
লেক থেকে ফিরে আমরা আরও কিছুক্ষণ বনাঞ্চলের ভেতরে ঘোরাঘুরি করলাম। বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা ও পশু-পাখি দেখার অভিজ্ঞতা ছিল খুবই শিক্ষণীয়। বনাঞ্চলের ভিতরে হাঁটার সময় প্রকৃতির একান্ত নিবিড় সান্নিধ্য পাওয়া যায়।
ভ্রমণের সমাপ্তি
সন্ধ্যার দিকে আমরা উদ্যান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য প্রস্তুত হলাম। দিনটি খুবই সুন্দর কাটলো, আর উদ্যানের প্রকৃতি আমাদের মনে এক বিশেষ স্থানে জায়গা করে নিল। ফিরে আসার পথে আমরা সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, ভবিষ্যতে আবারও এখানে ফিরে আসবো।
এই ভ্রমণ গল্পটি আমার জীবনে একটি বিশেষ স্মৃতি হিসেবে থেকে যাবে। প্রকৃতির সান্নিধ্যে সময় কাটানো, বন্ধুদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করা—সবকিছু মিলে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের এই ভ্রমণটি ছিল অতুলনীয়।