কোভিড পরবর্তীতে বিশ্বব্যাপী ভঙ্গুর পর্যটনখাত পুনরুদ্ধারে নতুন ভাবনায় পর্যটন শিল্পকে সাজাতে হবে। ভাবতে হবে নতুনভাবে ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্র, একই সাথে জীবনযাত্রায় যে পরিবর্তন এসেছে, টেকনোলজির ব্যবহার বেড়েছে, হাতের মুঠোয় সকলের সেবা পৌঁছেছে, ব্যবসায় মধ্যমাদের দৌরাত্ম্য কমতে শুরু করেছে, সেবা গ্রহীতা ও দানকারীর মধ্যে অর্থাৎ পণ্য ও ক্রেতার মধ্যে যোগাযোগ টেকসই হতে শুরু করেছে। এসব বিবেচনায় প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। ফলে ব্যবসার ধরনও পাল্টাতে শুরু করেছে। কিছু পেশার অবলুপ্তি আবার নতুন পেশার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তাই নতুন ভাবনায় পর্যটন শিল্পকে সাজাতে হবে। এই ইঙ্গিতই রয়েছে এ বছরের বিশ্ব পর্যটন দিবসের মূল আলোচ্য বিষয়ে।
প্রতিবছরের মতো কোভিড পরবর্তীতে এবারও পর্যটন বিচিত্রার আয়োজনে ৯ম এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও অনেক নতুনত্বের সূচনা হয়েছে। মেলায় ৮ দেশের ১৩০টি পর্যটন প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে প্রায় ৫০টির বেশি বিদেশি পর্যটন প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশের পর্যটন বাজারের প্রতি বিদেশিদের আগ্রহ বেড়েছে; বিশেষ করে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর পর্যটন গন্তব্যে বহুমাত্রিকতা ও পরিকল্পিত পর্যটন পণ্যের কারণে। এবারের মেলায় বাংলাদেশেরও নতুন গন্তব্যে বিশেষ করে হাওড় অঞ্চলের হাউজবোট, রাঙামাটির হাউজবোট ও শ্রীমঙ্গলের প্রান্তিক পণ্যের প্রতি পর্যটকের আকর্ষণ বেড়েছে। একই সাথে দেশের বড় বড় তারকাখচিত হোটেলগুলো স্থানীয় বাজার ধরার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে মেলায় অংশগ্রহণ করেছে। নতুনভাবে আঞ্চলিক পর্যটন শিল্পকে ঢেলে সাজাতে এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ারটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনমঞ্চে পরিণত হতে চলেছে।
সেই সাথে বাংলাদেশের গর্ব, বাঙালির অহংকার পদ্মা সেতু ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশকে অদম্য উচ্চতায় পৌঁছিয়েছে। দক্ষিণের সাথে মসৃণ যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। কুয়াকাটা, সুন্দরবন, ভোলার চরাঞ্চল, রিভার ট্যুরিজম ও কোস্টাল ট্যুরিজম নতুনভাবে পর্যটনের সম্ভানাকে উন্মোচন করেছে। এখন দরকার সঠিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন। তবেই পর্যটন শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতিতে দৃশ্যমান ভ‚মিকা রাখতে শুরু করবে।
মহিউদ্দিন হেলাল, সম্পাদক, পর্যটন বিচিত্রা।