৯ম এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার উদ্বোধন করেন বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান, ঢাকায় নেপাল দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত, রয়েল থাই দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত, মালেয়শিয়া দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতসহ অন্যান্য দূতাবাসের প্রতিনিধিবৃন্দ ও দেশ-বিদেশের সরকারি ও বেসরকারি নেতৃবৃন্দ।
পর্যটন বিচিত্রার আয়োজনে বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সার্বিক সহযোগিতায় এ মেলা হয়।
এবারের মেলায় ৯টি দেশ অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশ, নেপাল, থাইল্যান্ড, ভারত, ভুটান, মালেয়শিয়া, শ্রীলংকা, তুরস্ক ও লিথুনিয়াসহ প্রায় ১৩০টি দেশের বিভিন্ন পর্যটন সংস্থা মেলায় অংশ নেয়। এর মধ্যে ৫০টির বেশি বিদেশি প্রতিষ্ঠান ছিল। মেলায় পর্যটন মৌসুমে দেশ-বিদেশে বেড়ানোর বিভিন্ন আকর্ষণীয় ভ্রমণ অফারসহ হোটেল, রিসোর্ট বা প্যাকেজ বুকিংয়ে বিশেষ ছাড় দেয়া হয়। মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ছিল হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, ক্রুজলাইন্স, এয়ারলাইন্স, ট্যুর অপারেটর ও থিমপার্কসহ বিনোদনের আরও অনেক প্রতিষ্ঠান।
এছাড়া মেলায় বৈচিত্র্যময় আয়োজনের মধ্যে ছিল পর্যটনবিষয়ক সেমিনার, শিশুদের জন্য চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও বিজনেস টু বিজনেস মিটিং। ছিল শ্রীলংকা ও বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ মেলার মাধ্যমে পর্যটন শিল্পের একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র দর্শনার্থীদের মাঝে তুলে ধরা হয়।
মেলায় এয়ারলাইন্স পার্টনার ছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, হসপিটালিটি পার্টনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা ও প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও, অ্যাডভেঞ্চার ডাইনিং পার্টনার- ফ্লাই ডাইনিং, ক্রুজ পার্টনার ঢাকা ডিনার ক্রুজ, এন্টারটেইনমেন্ট পার্টনার ফ্যান্টাসি কিংডম ও ট্রান্সপোর্ট পার্টনার কনভয় সার্ভিস ও নেটওয়ার্কিং ইভেন্ট পার্টনার- বোটোফ।
এবারের মেলায় প্রাইম পার্টনার কান্ট্রি ছিল নেপাল, পার্টনার কান্ট্রি থাইল্যান্ড, ফিচার কান্ট্রি- ভারত, ভুটান, মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা, তুরস্ক ও লিথুনিয়া এবং মেলার হোস্ট কান্ট্রি ছিল বাংলাদেশ।
এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ারের তিন দিনব্যাপী নানাবিধ কার্যক্রমের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, বিজনেস মিটিং (বিটুবি), সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নেপাল ট্যুরিজম নাইট। ভারতীয় ভিজিট ডুয়ার্টসের (ঠরংরঃ উড়ড়ৎঃং) ক্যাম্পেইন উদ্বোধন, গ্রামীণ পর্যটন উন্নয়নে ‘গুরুবাস’ উদ্যোগবিষয়ক সেমিনার, আঞ্চলিক পর্যটন উন্নয়নে বিবিআইএন ট্যুরিজম ফোরামের সভা, বোটাফের উদ্যোগে নেটওয়ার্কিং নাইট, ‘নদীমাতৃক বাংলাদেশ’ শীর্ষক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বাংলাদেশ ট্যুরিজম নাইট ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মেলার অ্যাওয়ার্ড অব এক্সিলেন্স প্রদান এবং পর্যটন বিচিত্রার অক্টোবর সংখ্যার আনুষ্ঠানিক প্রকাশ।
পর্যটন উন্নয়ন সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার বাংলাদেশের একটি আন্তর্জাতিক ও অন্যতম পর্যটন মেলা। এ মেলার মাধ্যমে পর্যটন সংস্থাগুলো প্রচার-প্রচারণার এক বিশেষ সুযোগ পেয়ে থাকে। বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের এক নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচন এবং পর্যটন মৌসমে পর্যটকেদের বেড়ানোর খোঁজখবর দিতে এই মেলাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। দেশের পর্যটন শিল্প কোভিড পরবর্তী সময়ে আরও জোরালোভাবে ঘুরে দাঁড়াতে এবং টেকসই উন্নয়নে এই মেলাটি ভ‚মিকা পালন করে আসছে।
পর্যটন বিচিত্রার সম্পাদক এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ারের চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন হেলাল বলেন, আসন্ন পর্যটন মৌসুমকে সামনে রেখে এ মেলা পর্যটকদের জন্য নানা রকমের বৈচিত্র্যময় অফার তুলে ধরেছে। পর্যটকরা সাশ্রয়ী মূল্যে তাদের ভ্রমণের আগাম বুকিং দিয়েছে। আশা করছিÑ ভবিষ্যতেও দেশ ও আঞ্চলিক পর্যটন শিল্পের জন্য এ মেলাটি একটি সেতুবন্ধন তৈরি করবে এবং সব গন্তব্যে পর্যটকদের আনন্দমিছিল ছড়িয়ে পড়বে। কোভিড পরবর্তী এ মেলা আয়োজনের ফলে নতুনভাবে পর্যটনের দুয়ার খুলবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
১০ম এশিয়া ট্যুরিজম ফেয়ার-২০২৩
মেলার সমপানী দিনে ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকায় ১০ম এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার আয়োজনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। আগামী বছরের ২১-২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং অনুষ্ঠিতব্য মেলার আনুষ্ঠানিক তারিখ ঘোষণা করেন বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন।