■ পর্যটন বিচিত্রা প্রতিবেদন
যাত্রাপথ ও পৌঁছানোর উপায়
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যেকোনো বাসে উঠলে সীতাকুণ্ড পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় ৫-৬ ঘণ্টা। সেখান থেকে রিকশা অথবা সিএনজি নিয়ে সহজেই গুলিয়াখালী পৌঁছানো যায় (প্রায় ১০ কিমি)। তবে সবচেয়ে উপভোগ্য যাত্রা হয় স্থানীয় ব্যাটারিচালিত রিকশায়, যেখানে গ্রামীণ পরিবেশ ধীরে ধীরে আপনাকে ঘিরে ফেলে।
গুলিয়াখালীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য
গুলিয়াখালীর মূল বৈশিষ্ট্য হলো, এটি একটি মাঠ ও সাগরের মিশেল। সবুজ ঘাসে ঢাকা মাঠের ভেতর দিয়ে ছোট ছোট জলের ধারা বয়ে গেছে, যেগুলো সরাসরি সাগরে গিয়ে মিলেছে। মনে হয় যেন ঘাসের উপরে নীল আকাশ নেমে এসেছে। বিকেলবেলা যখন সূর্য পশ্চিমে হেলে পড়ে, সেই আলোতে পুরো মাঠ যেন সোনালি হয়ে ওঠে।
এখানে প্রচলিত কোনো “বিচ লাইফ” নেই—না কোনো জেটস্কি, না হোটেল সারি, না কোলাহল। শুধুমাত্র প্রকৃতি ও আপনি।
দেখার মতো কিছু বিশেষ বিষয়
জোয়ার-ভাটার সময়: ভাটা হলে মাটির উপর হাঁটা যায়, আর জোয়ারে সেই মাঠ চলে যায় পানির নিচে।
পাখি দেখা: শীতকালে এখানে অনেক পরিযায়ী পাখি আসে।
স্থানীয় জেলেরা: সকালের দিকে স্থানীয় জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য এক আলাদা অভিজ্ঞতা।
থাকার ব্যবস্থা
গুলিয়াখালীতে সরাসরি থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই। কাছাকাছি সীতাকুণ্ডে কিছু ছোট হোটেল পাওয়া যায়। তবে দিনের ভ্রমণের জন্য এটি আদর্শ। যারা রাত কাটাতে চান, তারা চট্টগ্রাম শহরে ফিরে যেতে পারেন।
খাওয়াদাওয়া
এলাকার কিছু চা দোকান, স্থানীয় খাবারের ছোট রেস্টুরেন্ট আছে। তবে ভ্রমণে যাওয়ার আগে খাওয়ার কিছু নিয়েই যাওয়া ভালো। স্থানীয়ভাবে চিংড়ি, কাঁকড়া, শুঁটকি ভাজা ইত্যাদি পাওয়া যায়।
পরিবেশ রক্ষা ও ভ্রমণ শিষ্টাচার
এখনো গুলিয়াখালী তুলনামূলকভাবে অপরিষ্কারতা থেকে মুক্ত। তাই ভ্রমণকারীদের উচিত নিজেদের বর্জ্য নিজেরাই সরিয়ে নেওয়া, প্লাস্টিক না ফেলা, এবং স্থানীয় পরিবেশকে সম্মান জানানো।
কেন এখানে যাবেন
যারা প্রকৃত নির্জনতা খুঁজছেন, যাদের কাছে প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটানো মানে অন্তর আত্মার শুদ্ধতা—তাদের জন্য গুলিয়াখালী এক নিখুঁত গন্তব্য। এখানে ভ্রমণ মানে আত্মিক প্রশান্তি, কোলাহলহীন শান্তি, এবং প্রকৃতির বিশুদ্ধ রূপ।