পর্যটন বিচিত্রা প্রতিবেদন
রাজা হরিনারায়ণের রাজত্ব, প্রতাপ ও রাজদরবারে কোনো স্মৃতিচিহ্নই আজ আর অবশিষ্ট নেই। শেষ স্মৃতি নিয়ে এখনো রয়ে গেছে ওই দিঘি। আলীনগর ইউনিয়নের মঙ্গলপুর গ্রামে অবস্থিত ওই দিঘির পাশেই ছিল রাজার প্রাসাদ। এখন তার কোনো চিহ্ন নেই।
জানা গেছে, ১৫৮০ থেকে ১৬০০ সালের মধ্যে রাজা হরিনারায়ণ রায় তার রাজ মন্দিরের সামনে বিশাল একটি দিঘি খনন করেছিলেন। ৩৬০ শতক আয়তনের দিঘিতে বর্তমানে মাছ চাষ করা হচ্ছে। শীত মৌসুমে এখানে অতিথি পাখির আগমন ঘটে। দিঘির প্রায় তিন দিকে রয়েছে ছায়াদানকারী গাছ। প্রতিদিন বিকালে সেখানে পর্যটকের ভিড় জমে।
জনশ্রুতি আছে, খনন করলেও দিঘিতে পানি না উঠায় রাজা বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েন। দিঘির বুকে কূপ খননেও কাজ হয় না। এরই মধ্যে রাজার ঘর আলো করে একমাত্র পুত্রসন্তান আসে। হঠাৎ একদিন রাজা স্বপ্ন দেখেন প্রিয় সহধর্মিণী ভানুমতি দিঘির মধ্যে খননকৃত কূপ শুদ্ধাচার দেহে এক কলস পানি ঢাললে দিঘিতে পানি উঠবে। পরের দিনই রাজা হরিনারায়ণের আদেশ মতো রানী ভানুমতি একটি মাঠির কলস দিয়ে পানি নিয়ে ঢালতেই কূপ থেকে গমগম করে পানি উঠতে শুরু করে।
তবে রানী ভানুমতি সেখান থেকে আর উঠে আসতে পারেননি, সেখানেই ডুবে যান। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে আর পাওয়া যায়নি। এদিকে সহধর্মিণীকে হারিয়ে রাজা হরিনারায়ণ শোকে কাতর হয়ে পড়েন। রাজসভায় আর মন দিতে পারেন না। ক্রমে ক্রমে রাজ্যের সবকিছু বিলীন হয়ে যায়। সবকিছু নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলেও কালের সাক্ষী হিসেবে এখনো দিঘিটি টিকে আছে এলাকার মানুষের পানির চাহিদা পূরণ করে চলেছে।