■ পর্যটন বিচিত্রা প্রতিবেদন
মেলায় সহযোগিতা করছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, এসএমই ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন। মেলায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী খাবার নিয়ে প্রায় শতাধিক উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেন।
মেলার প্রথম দিন ৬ ফেব্রুয়ারি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন। পরদিন ৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ শেফ সম্মেলন উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। আর শেষদিন ৮ ফেব্রুয়ারি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলার সমাপনী ঘোষণা করেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। পুরো অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রি স্কিলস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন হেলাল।
তিন দিনব্যাপী এই মেলায় শিশু, কিশোর, তরুণী- যার মাধ্যমে বাৎসারক প্রায় ৭০০০ (সাত হাজার) মেট্রি “কি মাছ উৎপাদন করা সম্ভব হবে। তরুণী থেকে শুরু করে সব বয়সি দর্শনার্থীদের ঢল নামে। মেলায় আগত দর্শনার্থীরা বিভিন্ন স্থানের ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্বাদ নেন। মেলায় আগতরা তাদের বাড়ির সদস্য এবং আত্মীয়স্বজনদের জন্য পিঠাপুলি, মিষ্টান্নসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার কিনে নিয়ে যান।
মেলায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী খাবার নিয়ে প্রায় সত্ত্বরের অধিক উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেন। দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাংলাদেশের ইলিশ, কক্সবাজারের সামুদ্রিক মাছ, কাঁকড়া, অক্টোপাস, নাটোরের কাচাগোল্লা, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী, সুন্দরবনের মধু, কুমিল্লার রসমালাই, বগুড়ার দই, সুন্দরবনের মধু, অর্গানিক খাদ্যসামগ্রীসহ নানাবিধ দেশি খাবারের সম্ভার ছিল । এছাড়া ছিল নলেন গুড় ঝোলা গুড়, দইবড়া, বিভিন্ন ধরনের কেক, পিঠা, বিখ্যাত রাজা চা, শেরপুরের ছানার পায়েস, খুলনার চুইঝাল, চট্টগ্রামের কালাভুনা, সিলেটের সাতকরাসহ নানা খাবারের পসরা।
এছাড়া সন্ধ্যাবেলা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করা এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার মানুষের কাছে আরও গ্রহণযোগ্য করে তোলা এই উৎসবের উদ্দেশ্য। এই আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশে কৃষিজাত প্রস্তুতকৃত পণ্য ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে দেশ ও বহির্বিশ্বে পরিচিতি লাভ করে। এছাড়া তরুণদের মধ্যে সচেতনতা তৈরিসহ তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী দেশীয় খাবার সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও প্রচারণায় উদ্যোগী ভূমিকা রেখেছে । একই সাথে খাবার প্রস্তুত প্রণালী, খাবার সংগ্রহ, সংস্কৃতি, সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় শিক্ষণীয় হিসেবে বাংলার ভোজ আয়োজনটি একটি লাইভ কিচেন, লাইভ সার্ভিস প্লাটফর্মে পরিণত হয়; যেখানে পর্যটন শিল্পে দক্ষ অভিজ্ঞ প্রফেশনালরা নতুনদেরকে উৎসাহিত করেন এবং সাধারণের মাঝে জনসচেতা বৃদ্ধি করে এই আয়োজনকে অনন্য উৎসবে পরিণত করেন।
সভাপতির বক্তব্যে মহিউদ্দিন হেলাল বলেন, বাঙালির খাবারের যে একটা বৈচিত্র্যতা আছে এবং খাবার যে সংস্কৃতির একটি বড় অংশ তারই বহিঃপ্রকাশ এই আয়োজন । আমরা এই সংস্কৃতিকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে চাই ৷
তিনি বলেন, আমাদের এই অনুষ্ঠানটিকে নিয়ে অনেক বড় উদ্যোগ আছে। আমরা যেহেতু স্কিল নিয়ে কাজ করি; এই দক্ষতাকে আমরা স্বীকৃতি দিতে চাই। যিনি ঘরে রান্না করেন, তাকেও আমরা সার্টিফিকেটের আওতায় আনতে চাই এবং তাদেরকে আমরা বিভিন্ন জায়গায় উপস্থাপন করতে চাই ৷ যিনি ভালো চা বানান, তাকেও সার্টিফিকেট দিতে চাই। কারণ তিনি ওই চা বানিয়েই একটি ফাইভ স্টার হোটেলে চাকরি পেতে পারেন । মেলার শেষ দিনে ‘বাংলার ভোজ’ উৎসবে আগত স্টলমালিক ও উদ্যোক্তাদের ক্রেস্ট সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।