জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন, সহিংসতা, কারফিউ, সর্বশেষ শেখ হাসিনার পতন—৫ আগস্ট-পরবর্তী পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা দেওয়া সীমিত করেছে ভারত। এর প্রভাব পড়েছে দেশটির পর্যটন শিল্প ও ব্যবসায়।
পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের তুলনায় গত বছরের একই সময়ে ভারতে বাংলাদেশি পর্যটক কমেছে ২৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ। আর এই সময়ে যারা গেছে তাদের বেশিরভাগের ভিসা আগের ইস্যু করা। নতুন করে ভিসা দেওয়া সীমিত থাকায় সামনের দিনগুলোয় বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা আরো কমে আসবে ভারতে। সংস্থাটির তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরের তুলনায় ২০২৪ সালের একই মাসে সরকারের ভ্রমণ কর আদায় কমেছে ১৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারতে ভ্রমণ করা বিদেশী পর্যটকদের মধ্যে সংখ্যার দিক দিয়ে শীর্ষে ছিল বাংলাদেশিরা। অক্টোবরে এসে অবশ্য সে অবস্থান দ্বিতীয়তে নেমে যায়। তবে শেখ হাসিনার পতনের মাস আগস্টে ভারতে বাংলাদেশি পর্যটক সবচেয়ে বেশি কমে।
ওই মাসে দেশটিতে ভ্রমণ করেন ৯৯ হাজার ১৯৫ বাংলাদেশি, যা ২০২৩ সালের আগস্টের তুলনায় ৩৬ দশমিক ২৭ শতাংশ কম। সেপ্টেম্বরে ভারত ভ্রমণ করে ১ লাখ ২৯ হাজার ৫৬২ বাংলাদেশি। আর অক্টোবরে ১ লাখ ২৮ হাজার ৪৫৮ বাংলাদেশি ভারতে যায়।
দেশের পর্যটন শিল্পের শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্য সংগঠন ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) হিসাব অনুযায়ী, পর্যটন, চিকিৎসা, শিক্ষাসহ বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর আনুমানিক ৪০ লাখ মানুষ বিদেশে ভ্রমণ করে। এর মধ্যে কমবেশি ১৫ লাখ মানুষের গন্তব্য থাকে ভারত। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ থেকে বিদেশ ভ্রমণ কমে যাওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ ভারতীয় ভিসা সীমিত হয়ে যাওয়া।
তবে ভারতীয় ভিসা সীমিত হয়ে যাওয়ায় নেপাল, থাইল্যান্ড, মালদ্বীপ, শ্রীলংকার মতো গন্তব্যগুলোয় বাংলাদেশিরা তুলনামূলক বেশি যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায় মিনিস্ট্রি অব ট্যুরিজম, শ্রীলংকার প্রকাশিত তথ্যে। দেশটির তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ থেকে ৩ হাজার ৭৩২ জন শ্রীলংকায় ভ্রমণ করেন, যা আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ৫২ শতাংশ বেশি।