বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ভারতের বৃহত্তম পর্যটন খাতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বাংলাদেশি নাগরিকরা ভারতকে পর্যটন, চিকিৎসা সেবা ও শপিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য হিসেবে বিবেচনা করে, কিন্তু বর্তমানে ভারতের পর্যটন খাতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ কমে গেছে।
ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ভারত ভ্রমণকারী মোট ২০.৮ শতাংশ পর্যটক বাংলাদেশি ছিলেন, যা গত বছরের একই সময়ের ২২.৩ শতাংশের তুলনায় কিছুটা কম। আগস্ট মাসে এই সংখ্যা কমে ১৫.৬ শতাংশে নেমে আসে, যা ভারতের পর্যটন খাতের জন্য একটি বড় সংকট।
এটি শুধু বার্ষিক হিসেবেই নয়, মাসিক পর্যটক আগমনের হিসেবেও বিশাল পতন দেখা গেছে। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশি পর্যটকদের আগমনে ২০.৩ শতাংশের পতন হয়, যেখানে গত বছর ওই মাসে ১.৫৭ লাখ বাংলাদেশি ভারতে এসেছিলেন। আগস্ট মাসে এই পতন আরও বৃদ্ধি পায়, যেখানে ৩৮.১ শতাংশ কমে গিয়ে মাত্র ৯৯,০০০ বাংলাদেশি ভারতে পৌঁছায়। জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশি পর্যটকদের মোট আগমন কমে ৯.১ শতাংশ দাঁড়ায়, যা মোট ১২.৮৬ লাখ।
ভারতের পর্যটন খাত অতিমারি পরবর্তী পুনরুদ্ধার শুরু করলেও, ২০১৯ সালের আগের তুলনায় এখনও অনেক পিছিয়ে রয়েছে। ২০১৯ সালে ভারতে ১.০৯ কোটি বিদেশি পর্যটক এসেছিলেন, কিন্তু করোনা মহামারি ও লকডাউনের কারণে ২০২০ সালে বিদেশি পর্যটক আগমন কমে দাঁড়ায় ২৭.৪৫ লাখে। পরবর্তী বছর, ২০২১ সালে, বিদেশী পর্যটক সংখ্যা আরও কমে ১৫.২৭ লাখে নেমে যায়। ২০২২ সালে কিছুটা পুনরুদ্ধার হলেও, তা ২০১৯ সালের আগের স্তরের তুলনায় অনেক কম ছিল। ২০২৩ সালে ৯২.৩৬ লাখ বিদেশি পর্যটক ভারতে আসলেও, তা অতীতের স্তরের তুলনায় এখনও অনেক কম।
এদিকে, ভারতের প্রতিবেশি দেশগুলো যেমন কাতার, দুবাই, ভিয়েতনাম এবং শ্রীলঙ্কায় বিদেশি পর্যটক ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ কাতারে বিদেশি পর্যটক ৪৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ভারতের পর্যটন খাতকে পুনরুদ্ধার করতে আরও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।