সিলেটের স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারক ‘নাগরী লিপি’। এটি সিলেট অঞ্চলের মুসলমানদের একান্ত নিজস্ব সম্পদ। এই লিপিতেই রচিত হয়েছিল তৎকালীন উন্নত সাহিত্য যা গবেষক ও ভাষা বিজ্ঞানীদের কাছে বিস্ময়কর। সিলেট নাগরীতে রচিত পুথি-পুস্তকের বিষয়বস্তু প্রধানত নামাজ, রোজা, হজ, যাকাত, ইসলামি ইতিহাস, ঐতিহ্য ও কাহিনি এবং রাগ, বাউল ও মরমি সংগীত। নাগরী হরফে এ পর্যন্ত ৮৮টি মুদ্রিত গ্রন্থসহ ১৪০টি গ্রন্থের সন্ধান পাওয়া গেছে।
চতুর্দশ শতাব্দীকে নাগরী লিপির প্রচলন কাল বলে ধরা হয়। আবার কেউ কেউ মনে করেন ষোড়শ শতাব্দীর শেষদিকে মোগলদের দ্বারা তাড়িত হয়ে সিলেটে আগত আফগান পাঠানরা এই লিপি সৃষ্টি করেন। এ বিষয়ে আরেকটি মত হলো- ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ সৃষ্ট সংস্কৃত বহুল বাংলার বিকল্পরূপে সিলেট অঞ্চলের অধিবাসীরা এই লিপি ও সাহিত্যের জন্ম দেন। বৃহত্তর সিলেট, কাছাড়, করিমগঞ্জ, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ প্রভৃতি এলাকায় নাগরী লিপি ও সাহিত্যের প্রচার ও সমাদর ছিল।