বাংলা সাহিত্যের উজ্জল নক্ষত্র, বাগ্মী ও কৃষক নেতা সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ১৮৮০ সালে সিরাজগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাড়ি জেলা শহর থেকে অর্ধ কিমি. উত্তরে এবং তিনি সিরাজগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন বিধায় তার নামের সঙ্গে ‘সিরাজী’ উপাধি যুক্ত। তার পিতা আব্দুল করিম খন্দকার ইউনানি চিকিৎসক ছিলেন।
আর্থিকভাবে তিনি তেমন সচ্ছল ছিলেন না। তাই যথেষ্ট মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও সিরাজীর কলেজে পড়া সম্ভব হয়নি। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করতে না পারলেও তিনি লেখালেখি করে এবং সভাসমিতিতে বক্তৃতা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তার লেখা ও বক্তৃতার প্রধান বিষয়বস্তু ছিল বাংলার অনগ্রসর মুসলিম সমাজকে জাগিয়ে তোলা। ইসমাইল হোসেন সিরাজী একই সাথে বেশ কিছু সংগঠন ও দলের সদস্য ছিলেন।
সমসাময়িক পত্রিকা আল-এসলাম, প্রবাসী, কোহিনূর, মোহাম্মদী, সওগাত, নবযুগ প্রভৃতি পত্রিকায় সিরাজীর লেখা প্রকাশিত হতো। তাঁর অধিকাংশ লেখাতেই ইসলামি ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও উত্তরাধিকারকে উদ্দীপ্ত করে তোলার প্রয়াস ছিল। ইসমাইল হোসেন সিরাজী সিরাজগঞ্জে কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি জমিদার ও মহাজন বিরোধী আন্দোলনে কৃষকদের সংগঠিত করেন।
ইসমাইল হোসেন সিরাজীর রচনাবলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- কাব্যগ্রন্থ অনল প্রবাহ (১৯০০), স্পেন বিজয় কাব্য (১৯১৪), সঙ্গীত সঞ্জীবনী (১৯১৬), প্রেমাঞ্জলি (১৯১৬) এবং উপন্যাস রায়নন্দিনী (১৯১৫), তারাবাঈ (১৯১৬) ইত্যাদি। এই খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব ১৯৩১ সালে মৃত্যুবরণ করেন।