পর্যটন বিচিত্রা প্রতিবেদন
সাগরতীরে পরিবেশবান্ধব পর্যটনের শুরু মারমেইডের হাত ধরেই। পরিবেশবান্ধব নকশাই শুধু নয়, মারমেইডের কার্যক্রমের প্রতিটি ধাপে প্রকৃতির সুরক্ষাকে দেওয়া হয়েছে অগ্রাধিকার। রিসোর্টের স্থাপত্যে শতভাগ স্থানীয় উপকরণ ও ইকো-ফ্রেন্ডলি কাঠামো ব্যবহার করা হয়েছে।
এর সুবাদে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অটুট রাখার পাশাপাশি আধুনিক সুযোগ-সুবিধাও নিশ্চিত করে। সৌরশক্তির মাধ্যমে আলোকসজ্জা পরিচালনা, বৃক্ষরোপণ প্রকল্প এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পরিবেশবান্ধব নীতির প্রয়োগ রিসোর্টটির টেকসই উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে।
বিশ্বমানের আতিথেয়তা আর পরিবেশ বান্ধব কার্যক্রমের সুবাদে মারমেইড বিদেশি পর্যটকদেরও পছন্দের তালিকায় থাকে শীর্ষে। মারমেইড বিচ রিসোর্ট শুধু একটি অবকাশযাপন কেন্দ্র নয়, এটি প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হওয়ার এক অনন্য সুযোগ। কক্সবাজারের সমুদ্রতীরে অবস্থিত এই রিসোর্ট পরিবেশবান্ধব নকশা ও টেকসই ব্যবস্থাপনার জন্য সুপরিচিত।
মারমেইড ইকো টুরজিম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুল হক চৌধুরী সোহাগ বলেন, আমাদের প্রতিটি স্থাপনা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয়। প্রতিটি স্থাপনা এমনভাবে তৈরি যেন চারপাশের জীববৈচিত্র্য কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। মারমেইডের কোনো স্থাপনার উচ্চতাই আশপাশের গাছ-গাছালির চেয়ে বেশি নয়। যাতে চারপাশের প্রকৃতি থাকে চির সবুজ। মারমেইডের সব খাবারের উপাদান সংগ্রহ করা হয় স্থানীয়ভাবে। এ কারণে গ্রামের মানুষ বিশেষ করে মেয়েরা তাদের উৎপাদিত ফসল বা সবজি বিক্রি করে সহজে স্বাবলম্বী হতে পারেন। মারমেইড ইকো রিসোর্ট জীবন বদলে দিয়েছে কক্সবাজার ও পেঁচার দ্বীপ নামের এক অখ্যাত গ্রামের হাজারো মানুষের জীবনও। রিসোর্টের প্রতিটি কাঠামো নির্মাণে স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে।
তিনি জানান, সৌরশক্তি চালিত আলোকসজ্জা, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে। আধুনিক সুযোগ-সুবিধার সঙ্গে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করাই এর মূল দর্শন। রিসোর্টে অতিথিদের জন্য রয়েছে পরিবেশবান্ধব কটেজ, যা স্থানীয় বাঁশ, পুরনো জাহাজের কাঠ, মাটি ও অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি। প্রতিটি কটেজ সমুদ্রের বাতাস ও প্রকৃতির শীতল পরশ উপভোগের সুযোগ দেয়।
এছাড়া, খাবারের ক্ষেত্রেও রয়েছে সতর্কতা—জৈবিক উপায়ে উৎপাদিত উপকরণ ব্যবহার করে সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন করা হয়। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার এই প্রচেষ্টায় মারমেইড বিচ রিসোর্ট কেবল দেশের পর্যটকদের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের পরিবেশপ্রেমীদের কাছেও এক আদর্শ গন্তব্যর নাম।
মারমেইড বিচ রিসোর্টে যাওয়ার উপায়
কক্সবাজার শহরের কলাতলী থেকে সিএনজি বা অটোরিকশায় চড়ে রেজু ব্রিজের কাছে অবস্থিত মারমেইড বিচ রিসোর্টে যেতে পারবেন।
কক্সবাজার যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে কক্সবাজার সড়ক, রেল এবং আকাশপথে যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী বাসগুলোর মধ্যে সৌদিয়া, এস আলম মার্সিডিজ বেঞ্জ, গ্রিন লাইন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, সোহাগ পরিবহন, এস.আলম পরিবহন, মডার্ন লাইন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। শ্রেণী ভেদে বাসগুলোর প্রতি সিটের ভাড়া ৯০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকার পর্যন্ত।
ঢাকা থেকে ট্রেনে সরাসরি কক্সবাজার ভ্রমণ করতে চাইলে কমলাপুর কিংবা বিমানবন্দর রেলস্টেশন হতে কক্সবাজার এক্সপ্রেস অথবা পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনে যাত্রা করতে পারেন। এছাড়া ঢাকা থেকে ট্রেনে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার আসতে চাইলে কমলাপুর কিংবা বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে সোনার বাংলা, সুবর্ন এক্সপ্রেস, তূর্ণা-নিশীথা, মহানগর প্রভাতী/গোধূলী ট্রেনে সুবিধানুযায়ী যাত্রা করতে পারেন। এরপর চট্টগ্রামের নতুন ব্রিজ এলাকা, অলংকার মোড়, সিনেমা প্যালেস অথবা দামপাড়া বাস্ট স্ট্যান্ড থেকে এস আলম, হানিফ অথবা ইউনিক পরিবহনের বাসে কক্সবাজার আসতে পারবেন। বাস ভেদে ভাড়া ৪২০ থেকে ১০০০ টাকা নিবে।
এছাড়া বাংলাদেশ বিমান, নভোএয়ার, এয়ার আস্ট্রা এবং ইউএস বাংলা ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। আকাশপথে চট্রগ্রাম এসে সড়কপথে ওপরে উল্লিখিত উপায়ে কক্সবাজার যেতে পারবেন।
মারমেইড রিসোর্টে থাকার খরচ
থ্রি স্টার হোটেলের যাবতীয় সুবিধা সম্বলিত মারমেইড বিচ রিসোর্টে বিভিন্ন ক্যাটাগরির রুম আছে। এগুলোর ভাড়া ২৬ হাজার থেকে শুরু করে ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে বছরের বিভিন্ন সময় এখানে ছাড়ের ব্যবস্থা থাকে।
খাবার
আগত অথিতিদের জন্য মারমেইড বিচ রিসোর্টে দেশি বিদেশি খাবারের রেস্টুরেন্ট এবং একটি জুস বার রয়েছে।
যোগাযোগ
পেচারদ্বীপ, মেরিন ড্রাইভ রোড, কক্সবাজার
মোবাইল: ০১৮৪১ ৪১৬৪৬৮-৬৯
ইমেইল: [email protected]
ওয়েবসাইট: www.mermaidbeachresort.net